বোলপুর, 3 মে: কেষ্ট নেই তো কী হয়েছে ? দলের বিশ্বস্ত সৈনিককে ছাড়াই তাঁর গড়ে দাঁড়িয়ে ভোকাল টনিক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় !মালদা সফরে যাওয়ার পথে বোলপুর স্টেশনে ট্রেনে দাঁড়িয়েই দলীয় নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার হাওড়া থেকে সরাইঘাট এক্সপ্রেসে মালদার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ আর ট্রেন বোলপুরে ঢুকতেই দরজার সামনে চলে আসেন মমতা ৷ দরজায় দাঁড়িয়েই জেলা নেতাদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বললেন তিনি ৷ আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে যথেষ্ট উচ্ছ্বসিত দলীয় নেতা-কর্মীরা ৷
এদিন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে সঙ্গে নিয়ে মালদা যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে খবর, মালদায় প্রশাসনিক সভার পাশাপাশি অভিষেকের সঙ্গে জনসংযোগ যাত্রাতেও উপস্থিত থাকতে পারেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান ৷ তার আগে ট্রেন বোলপুরে পৌঁছতেই দলীয় নেতাদের তাৎক্ষণিক বেশ কিছু নির্দেশ দেন তৃণমূল সুপ্রিমো ৷ জেলার শীর্ষ নেতাদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যও শোনেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, অনুব্রতর পাশাপাশি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বিষয়টিও যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে দল ৷ ইতিমধ্যেই অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের যে হুঁশিয়ারির দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, তার বিরুদ্ধে দলকে পথে নামারও নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী। এদিন সেই বিষয়ে জেলার নেতাদের কৌশল আরও একবার সরেজমিনে দেখে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ এমনটাই এদিন জানালেন রাজ্যের ক্ষুদ্র শিল্প এবং বস্ত্রমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা।
তবে শুধুই অমর্ত্য সেন নয় ৷ রাজনৈতিক মহলের দাবি, অনুব্রত মণ্ডলও বড় ফ্যাক্টর জেলায় ৷ এই মুহূর্তে তিহাড় জেলে বন্দি তিনি ৷ অনুব্রত-কন্যাকেও গ্রেফতার করেছে ইডি ৷ তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রায় ন'মাস জেলবন্দি অনুব্রতকে জেলা সভাপতি পদ থেকে অবশ্য সরায়নি দল ৷ বরং কেষ্ট-হীন গড়ে দলের কার্যপ্রণালী ঠিক করে দিচ্ছেন তিনিই ৷ পাশাপাশি বীরভূমে দফায় দফায় আসছেন বিজেপি নেতারা ৷ এমনকী জনসভার জন্য বীরভূমকে বেছে নিয়েছিলেন খোদ অমিত শাহও ৷ ওয়াকিবহল মহলের দাবি, এই পরিস্থিতিতে এদিন বোলপুরে দাঁড়িয়ে জেলার নেতা-কর্মীদের মনোবলও কিছুটা চাঙ্গা করতে চাইলেন মমতা ৷ বীরভূমকে যে তিনি গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন সেই বার্তাও দিতে এদিন চাইলেন তিনি ৷ মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, "দলকে সকলে মিলে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, সাংগঠনিক সেই বার্তা দিয়েছেন তিনি ৷ পাশাপাশি অমর্ত্য সেনের হয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলনে নামার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷"
এদিন মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সঙ্গী আধিকারিকদের জন্য চপ-মুড়ি ট্রেনে তুলে দেন তৃণমূলের মন্ত্রী-নেতারা ৷ প্রশাসনিক বৈঠকে মালদা সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যোগ দেবেন নবজোয়ারেও ৷ আগেও অবশ্য বোলপুরের উপর দিয়ে ট্রেন সফরকালীন জেলার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতেন মমতা ৷ তবে এদিনের ছবি ছিল একটু আলাদা ৷ ছিলেন না অনুব্রত মণ্ডল ৷ তবে স্টেশনে ছিলেন, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, সাংসদ অসিত মাল, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী-সহ তৃণমূল জালার কোর কমিটির সদস্যরা। ছিলেন বীরভূম জেলা শাসক বিধান রায়, পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরাও। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে প্রচুর কর্মী-সমর্থকরা ভিড় জমিয়ে ছিলেন বোলপুরে স্টেশনে।
আরও পড়ুন: আদালতে সাক্ষী দিয়ে ফেরার পথে ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে গুলি, বজবজে চাঞ্চল্য