হায়দরাবাদ, 5 অক্টোবর: ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় উৎসবের দামামা বেজে গিয়েছে ৷ 10 দলের লড়াইয়ে বিশ্বকাপের তাজ মাথায় পড়তে মরিয়া সব দলই ৷ পিছিয়ে নেই প্রোটিয়ারাও ৷ প্রথমবার বিশ্বকাপ জিততে বদ্ধপরিকর ‘বাভুমা অ্যান্ড কোং’ ৷ বিশ্বকাপ ঘরে এলে শুধু অধরা তাজই মাথায় উঠবে না, নামের পাশ থেকে হটে যাবে পাকাপাকিভাবে জুড়ে যাওয়া ‘চোকার্স’ তকমাও ৷
অভিজ্ঞ ব্যাটিং লাইন-আপ, বোলিংয়ের পাশাপাশি প্রোটিয়াদের ভরসা তাদের ফিল্ডিং ৷ জন্টি রোডস, হার্শেল গিবসের দেশ বরাবরই রান বাঁচানোয় পারদর্শী ৷ গ্রেম স্মিথ, এবি ডে ভিলিয়ার্সের মতো ব্যাটার, অল-রাউন্ড পারফরম্যান্সে জ্যাক কালিস, বোলিংয়ে মাখায়া এনতিনি, শন পোলক থেকে হালের কাগিসো রাবাদা ৷ দল হিসেবে বরাবরই সমৃদ্ধ প্রোটিয়ারা ৷ তা সত্ত্বেও বড় টুর্নামেন্টে কখনও বাজিমাত করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা ৷ শেষ মুহূর্তে নার্ভ হারিয়ে ট্রফি হাতছাড়া হয়েছে বহুবার ৷ নামের পাশে পাকাপাকিভাবে বসে গিয়েছে ‘চোকার্সে’র তকমা ৷
তেম্বা বাভুমার নেতৃত্বাধীন প্রোটিয়া শিবির ভারতে সেই অপবাদ খণ্ডাতে বদ্ধপরিকর ৷ কাগিসো রাবাদা, কুইন্টন ডি’কক, এইডেন মার্করাম সমৃদ্ধ দল বিশ্বকাপের স্বপ্ন দেখতেই পারে ৷ ভারতের মাটিতে বাজিমাত করতে পারে যেই দলগুলি, সেই তালিকায় অন্যতম প্রোটিয়া শিবির ৷
দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তি:
- অভিজ্ঞ ব্যাটিং লাইন-আপ:
স্কোয়াডে রয়েছে কুইন্টন ডি’কক, ডেভিড মিলার এবং এইডেন মার্করামের মতো খেলোয়াড় ৷ আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ ব্যাটাররা দক্ষিণ আফ্রিকার বড় ভরসা ৷ প্রথমে ব্যাট করলে বড় রান শুধু নয়, রান তাড়া করার ক্ষমতা রয়েছে প্রোটিয়া শিবিরের ৷ কুইন্টন ডি’কক আক্রমণাত্মক হলেও মাথা ঠান্ডা রেখে বড় ইনিংস গড়তেও সক্ষম । তাঁর মারমুখী ব্যাটিং পাওয়ার প্লে’তে বড় রান তুলতে পারে । ভারতের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ডি’কক ৷ 145 ম্যাচে 17টি সেঞ্চুরি এবং 30টি হাফ সেঞ্চুরি-সহ 44.8 গড়ে 6176 রান করেছেন ।
ডেভিড মিলার, হেনরিখ ক্লাসেন এবং এইডেন মার্করাম সমৃদ্ধ মিডল অর্ডার । মিলারের ফিনিশিং ক্ষমতা এবং ম্যাচ জেতানো নক খেলার দক্ষতা প্রোটিয়াদের বড় ভরসা । উপমহাদেশের পিচ বরাবর স্পিনারদের স্বর্গ ৷ এইডেন মার্করাম এবং অনরিখ ক্লাসেন স্পিনারদের বিরুদ্ধে অনায়াস শট খেলতে সক্ষম ।
- শক্তিশালী পেস আক্রমণ:
কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিদি এবং মার্কো জানসেন ত্রয়ী দক্ষ ব্যাটারদেরও ত্রাস হয়ে উঠতে পারে । রাবাদার বিষাক্ত ইয়র্কার এবং বাউন্সার যেকোনও ব্যাটিং লাইন-আপকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে । এনগিদি দু’দিকেই বল সুইং করার ক্ষমতার জন্য পরিচিত । মার্কো জানসেন আপাত নিরীহ পিচেও বাউন্সার দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে । এনগিদি ডেথ ওভারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন । তাবরেজ শামসি ও কেশব মহারাজ জুটি স্পিন বোলিংয়ে ভরসা যোগাচ্ছেন । রিস্ট স্পিনার শামসি ও বাঁ-হাতি স্পিনার মহারাজ উপমহাদেশের স্পিন-সহায়ক উইকেটে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন ৷
আরও পড়ুন: কিউয়িদের কাছে গো-হারা, বিশ্বকাপের শুরুতেই বাস্তবের রুক্ষ মাটিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড
দুর্বলতা:
- নর্ৎজের না-থাকা:
ইনজুরির কারণে নেই পেসার অনরিখ নর্ৎজে ৷ দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। নর্টজে একটি নিখুঁত গতি আছে এবং নিয়মিতভাবে 145+ কিমি বল করতে পারে। ভারতে খেলার অভিজ্ঞতাও ছিল তার। আরেক পেসার জেরাল্ড কোয়েটজিকে দলে ডাকা হয়েছে কিন্তু তিনি এখনও ভারতে সব ফরম্যাটে ম্যাচ খেলতে পারেননি। তিনি মাত্র 6টি ম্যাচ খেলে 29.45 গড়ে 11টি উইকেট নিয়েছেন।
- স্পিন বোলিংয়ের গভীরতা:
শামসি এবং মহারাজ নির্ভরযোগ্য হলেও ব্যাকআপ নেই । 2022 সালের গোড়া থেকে, দক্ষিণ আফ্রিকা ওডিআইতে এই জুটির বাইরে শুধুমাত্র একজন স্পিনারকে খেলিয়েছে ৷ বজর্ন ফরচুইনকে যদিও খুব বেশি ম্যাচে সুযোগ দেওয়া হয়নি ৷ ফলে দুই স্পিনারের কেউ আহত হলে সমস্যায় পড়বে দল ৷
- শেষ মুহূর্তে ছন্দপতন:
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রত্যেকবার প্রতিশ্রুতি নিয়ে টুর্নামেন্টে আসে ৷ কিন্তু যখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তখনই টেম্পো হারিয়ে ফেলে দল । চলতি বছরে ভারসাম্যপূর্ণ দল হলেও মিডল অর্ডার এখনও সম্মিলিতভাবে পারফর্ম করতে পারেনি ৷
আরও পড়ুন: সচিন-জয়সূর্য-যুবরাজদের পাশে এবার জায়গা পাবেন কে? ফিরে দেখা বিশ্বকাপের সেরা পারফর্মারদের