কলকাতা, 21 মে: কলকাতায় নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে আইপিএলের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে এসেছিল লখনউ সুপার জায়ান্টস। তার আগে মোহনবাগান সমর্থকদের ইডেনে এসে কথা বলেছিলেন লখনউয়ের অধিনায়ক ক্রুনাল পাণ্ডিয়া। সমর্থনের আবেদনে সাড়া দিয়ে মোহনবাগান সমর্থকরা উপস্থিতও হয়েছিলেন। কিন্তু তারপরের অভিজ্ঞতাটা মোটেই ভালো হয়নি সবুজ-মেরুন জনতার।
কলকাতার শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব মোহনবাগানকে সম্মান জানাতে এই বিশেষ জার্সি পরে মাঠে নেমেছিল সঞ্জীব গোয়েঙ্কার লখনউ সুপার জায়ান্টস। সঞ্জীব গোয়েঙ্কা স্বয়ং মাঠে উপস্থিত ছিলেন। তবে এই ম্যাচে কিছু মোহনবাগান সমর্থককে সবুজ-মেরুন জার্সি পরে স্টেডিয়ামে ঢুকতে বাধা দেন ইডেনের নিরাপত্তারক্ষীরা এমন অভিযোগ উঠেছিল শনিবারই। রবিবার এনিয়ে বিবৃতি দিল মোহনবাগান ক্লাব।
'স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ' এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ মোহনবাগানের তরফে করা হয়েছে। লখনউ সুপার জায়ান্টসের কর্তারা শনিবারের ম্যাচে সবুজ-মেরুন জার্সি পরে মাঠে নামার কথা ঘোষণা করেছিলেন। মূলত মোহনবাগান এবং কলকাতার ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতেই এই জার্সি পরে নামার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল লখনউ। এই ঘোষণা করার পর থেকেই বাড়তি একটা আবেগ কাজ করছিল মোহনবাগান সমর্থকদের মধ্যে। তারা আইপিএল এবং আইএসএলকে এক সুতোয় গেঁথে ফেলার জন্য সঞ্জীব গোয়েঙ্কাকে কৃতিত্ব দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: মোহনবাগানের জার্সি গায়ে ইডেন ভরালেন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা
কিন্তু 24 ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগ উঠল, লখনউ সবুজ-মেরুন জার্সি পরে খেলতে নামা সত্ত্বেও, মোহনবাগান সমর্থকরা কেন সেই জার্সি পরে খেলা দেখতে যেতে পারলেন না? তাঁদের কেন সবুজ লোগো সম্বলিত জার্সি উলটো করে পরে মাঠে ঢুকতে বাধ্য করা হল? এনিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত। তার অভিযোগের তির কলকাতা নাইট রাইডার্সের দিকে। মোহনবাগান ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রেস রিলিজ দিয়ে জানানো হয়েছে, কেকেআর ম্যানেজমেন্ট মোহনবাগান সমর্থকদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছেন।
মোহনবাগান সচিব এক্ষেত্রে দেবাশিস দত্ত নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। বলেন, "1990 সাল থেকে ফিফা বিশ্বকাপ-সহ, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মোহনবাগানের জার্সি পরে খেলা দেখতে গিয়েছি। কোথাও কোনও বাধার মুখে পড়তে হয়নি আমায়। কেকেআর ম্যানেজমেন্ট যা করেছে, তা জাতীয় ক্লাবের সম্মানহানির সমান। এতে সাধারণ মোহনবাগান সমর্থকদের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে।" যদিও সবুজ-মেরুন জামা পরে গেলেই যে ঢুকতে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে তেমনটা নয়, যে সবুজ-মেরুন জার্সিতে মোহনবাগানের লোগো ছিল, সেগুলি পরে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ সমর্থকদের।"
তাঁর কথায়, শনিবারের ম্যাচে মোহনবাগানের জার্সি পরে মাঠে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন অনেকেই। এমনকী এক ফ্যান ক্লাব ম্যাচ শুরুর আগে সঞ্জীব গোয়েঙ্কাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রীতিমতো মিছিল করে ইডেনে ঢুকে কার্ড বিলি করেছেন। কিন্তু মাঠে প্রবেশ করার সময় তাঁদের বাধা দেওয়া হয় বলেই অভিযোগ। বলা হয়, মোহনবাগানের লোগো পরে গ্যালারিতে যাওয়া নিষিদ্ধ। এমনকী হ্যান্ড মাইক, মোহনবাগানের পতাকা, স্কার্ফ নিয়েও অনেক সমর্থককে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলেই অভিযোগ করেছেন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা।
আরও পড়ুন: হেরে আইপিএল থেকে ছুটি নাইটদের, রুদ্ধশ্বাস জয়ে প্লে-অফে লখনউ
সমর্থকদের অভিযোগ, পুলিশ নয়, কেকেআর কর্তৃপক্ষই এই নিয়ম চালু করেছে। যার ফলে পতাকা, স্কার্ফ বাইরে রেখেই অনেক সমর্থককে মাঠে ঢুকতে হয়েছে। জার্সি খুলেই স্টেডিয়ামে ঢুকতে পেরেছেন সমর্থকরা। এর জেরে কেকেআর ম্যানেজমেন্টের ওপর রেগে 'লাল' মোহনবাগান সমর্থকরা। মনে করা হয়েছিল ইডেনে সাময়িক ভাবে সমর্থকদের বাধাদানের বিষয়টি মিটে গিয়েছে। কিন্তু মোহনবাগান সচিবের প্রেস রিলিজ করে বিবৃতি দেওয়া পুরো ঘটনাটি অন্য রূপ নিল।