কলকাতা : 11 জুন থেকে শুরু হয়েছে বাংলা বিনোদন জগতের শুটিং । বাংলা ধারাবাহিক, সিনেমা, ওয়েব সিরিজ়ের শুটিং শুরু হয়েছে জোরকদমে । ধারাবাহিকের নতুন এপিসোড সম্প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে । OTT-তে মুক্তি পাচ্ছে ছবি ও ওয়েব সিরিজ় । কিন্তু. নাট্যজগতে এখনও কোনও হেলদোল নেই..কীভাবে দিন কাটাচ্ছেন নাট্যকর্মীরা ? কীভাবে কাজ করছেন তাঁরা ? এমনটাও শোনা যাচ্ছে যে, বহু নাট্যকর্মী অর্থাভাবে সবজি বেচে পেট চালাচ্ছেন । এই বিষয়গুলি নিয়ে ক্ষুব্ধ নাট্যকর্মীরা । তাঁরা নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিলেন ETV ভারত সিতারার কাছে ।
5 সেপ্টেম্বর থেকে থিয়েটার হলগুলো খোলার কথা আছে, সেখানেও নাটক দেখানো যায় । কিন্তু স্কুলও তো খোলার কথা ছিল জুলাই থেকে । সেটি তো খুলল না । তাহলে কি সিনেমা হল খোলার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায় ? প্রশ্ন তুললেন 'হাতিরাম সঙ্ঘারাম' নাট্য দলের অন্যতম সদস্য মধুরিমা গোস্বামী । ETV ভারত সিতারাকে তিনি বললেন, "খুবই খারাপ পরিস্থিতি । আমাদের বহুকর্মী মাংসের দোকান, সবজির দোকান কিংবা ঠেলা করে অন্য উপায়ে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করছেন । সারা বছরই এই মানুষগুলো আমাদের সঙ্গে কাজ করেন । নাটকের আলো করেন, কস্টিউম করেন, মেকআপ করেন । আজ এই পরিস্থিতি হয়েছে তাঁদের । থিয়েটার শুরু হলে হয়তো আবার তাঁরা ফিরে আসবেন । 5 মাস হতে চলল । আর আমাদের মত নাট্যকর্মীদের তো সেভিংস বলে কিছু থাকে না ।"
এদিকে কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য একটি ফান্ড রেজিং অনলাইন কনসার্টও আছে 21 অগাস্ট । যাঁরা টিকিট কাটবেন, তাঁদের সেই গ্রুপে এনে একটি ফেসবুক লাইভ শো করা হবে । যে যাঁর বাড়ি থেকে পারফর্ম করতে পারবেন । কনসার্টটিতে অংশগ্রহণ করছেন কৌশিক সেন, রেশমি সেন, ঋদ্ধি সেন, সুরঙ্গনা, সুমন মুখোপাধ্যায়, অর্ণ মুখোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য, মাধুরিমা গোস্বামীর মতো নাট্যব্যক্তিত্বরা । এই কনসার্টের সঞ্চালনা করছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য ।
সরকারের বিরুদ্ধে খানিকটা ক্ষোভ উগরে দিয়েই মাধুরিমা বলেন, "সরকার থেকে আলাদা করে কোনও সাহায্যই করছে না । কেন্দ্রীয় সরকার থেকে একটি বিজ্ঞাপন দিয়েছিল, যাঁরা বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছেন তাঁরা যেন জানান । আমি কোনও খবর পাইনি যে, সেটা আদৌ কেউ পেয়েছে কিনা বা কেউ অ্যাপ্লাই করেছে কিনা । রাজ্য সরকার থেকে বলছে আমফানের পর দলগুলোকে ওরা টাকা দিচ্ছে । সেটা একেবারেই বাজে কথা । প্রতিবছরই দেয় । ওটা ওদের সিস্টেমের মধ্যেই রয়েছে । অনেকদিন আগেই এটা দেওয়া উচিত ছিল । আমি লক্ষ্য করলাম ইন্টেলেকচুয়ালস এবং স্টুডেন্টস, রাষ্ট্রের কাছে যাঁরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকারক, তাঁদেরকে পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে । স্কুল-কলেজ খুলছে না এবং হল খুলছে না । আর সবকিছু খুলে গেছে ।"
অন্যদিকে নাট্যব্যক্তিত্ব জয়রাজ ভট্টাচার্যর কথাতেও একই ক্ষোভ । তিনি সাফ বলেন, "কোনও সরকারই এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য কোনও ফান্ড তৈরি করেনি । এক্সিস্টিং ফান্ড যেগুলো ছিল, সেগুলো আছে । নতুন করে এই পরিস্থিতিতে কিছু হয়নি । তারা কোনদিনও থিয়েটারকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনেনি । শুধু সিনেমার জন্য কথা বলেছে । সিরিয়ালের জন্য কথা বলেছে । কিন্তু থিয়েটার আর্টফর্মের জন্য তাদের কোনও মাথাব্যাথাই নেই ।"
আমরা সরাসরি কথা বললাম নাট্যব্যক্তিত্ব এবং বড় পরদার জনপ্রিয় অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যর সঙ্গে । তিনি সরাসরি বলেন, "নাটকের কাজ শুরু করতে পারব না তো । সব দোষ এসে পরে প্রান্তিক শিল্পের উপর । এখান থেকে বেশি ট্যাক্স পাওয়া যায় না তো.." শুনে নিন অনির্বাণের বক্তব্য..