ETV Bharat / international

সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে নিজ্জর খুনের তদন্তে কানাডাকে সহযোগিতা, জানালেন ভারতীয় হাইকমিশনার

India Asking for Evidence in Nijjar Killing: খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের খুনে ভারতীয় এজেন্টের হাত রয়েছে অভিযোগ করেছে কানাডা ৷ ভারত সেই অভিযোগ আগেই খারিজ করে দিয়েছে ৷ তবে এই নিয়ে যদি কানাডার তরফে নির্দিষ্ট ও প্রাসঙ্গিক প্রমাণ দেওয়া হয়, তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে ৷ কানাডায় দেওয়া একটি টিভি সাক্ষাৎকারে এমনই জানিয়েছেন ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় কুমার বর্মা ৷

ndian envoy to Canada
ndian envoy to Canada
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 28, 2023, 1:41 PM IST

অটোয়া, 28 নভেম্বর: ভারতে জঙ্গি হিসেবে ঘোষিত হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ড নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ কানাডার কাছে চায় নয়াদিল্লি ৷ সেই প্রমাণ পেলেই এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে প্রয়োজনীয় সহায়তা করতে পারবে ভারত ৷ কানাডায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার সঞ্জয় কুমার বর্মা এই কথা জানিয়েছেন ৷ একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ভারত কোনোভাবেই কানাডার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতে চায় না ৷ বরং নয়াদিল্লি অটোয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসায়িক সহযোগিতা বৃদ্ধির পক্ষপাতি ৷ তাই তাঁর অনুরোধ, কানাডা যেন ভারতে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিনিধি পাঠায় ৷

সম্প্রতি ট্যাগ টিভি টরোন্টোর কানাডিয়ান সাংবাদিক তাহির গোরাকে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ভারতের হাই কমিশনার ৷ সেখানে তাঁকে নিজ্জর হত্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় ৷ জানতে চাওয়া হয়, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো যে অভিযোগ করেছেন, তা নিয়ে ভারত কী ভাবছে ? উত্তরে সঞ্জয় কুমার বর্মা বলেন, "আমরা সব সময় বলেছি যে ভারত কানাডিয়ান বন্ধুদের তরফ থেকে দেওয়া যেকোনও নির্দিষ্ট ও প্রাসঙ্গিক বিষয় খতিয়ে দেখতে এবং দুই দেশের পক্ষে আইনত ও যুক্তিপূর্ণ উপায়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রস্তুত ৷"

তিনি আরও বলেন, "ভারত শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট ও প্রাসঙ্গিক তথ্য চাইছে, যাতে আমরা আপনাদের সাহায্য করতে পারি । আমরা কানাডিয়ান তদন্তকারীদের তাঁদের সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সাহায্য করতে পারি, যাতে তাঁদের পক্ষে আইনি পদক্ষেপ করা সম্ভব হয়...আমি এই নিয়ে আমার কানাডিয়ান বন্ধু ও সহকর্মীদের অনুরোধ করব । আমি তাঁদের আশ্বস্ত করতে পারি যে আমরা অবশ্যই এই বিষয়ে নজর দেব ।"

ভারতীয় হাইকমিশনার জানান, এই বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে ৷ তিনি ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্কের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথাও উল্লেখ করেছেন ৷ কানাডায় অনেকে যে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন, তাও উল্লেখ করেছেন সঞ্জয় বর্মা ৷ তাঁর দাবি, ইতিমধ্যে অনেকে ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করে কানাডার অনেক নেতাই মন্তব্য করেছেন ৷

তাঁর আরও দাবি, বাস্তব পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে কথা বলা উচিত ৷ কানাডায় ভারতীয়রাও আক্রান্ত হচ্ছে কি না, সেটাও দেখতে হবে ৷ তিনি আরও জানান, নয়াদিল্লি ও অটোয়ার মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্কের ইতিহাস দীর্ঘ ৷ তবে এই ইস্য়ুতে দুই দেশের মধ্য়ে ভিন্নতা তৈরি হয়েছে ৷ সেই বিষয়টিকে দূর করার দিকেই নজর দেওয়া উচিত দুই দেশের ৷ তার মধ্যে অন্যতম হল বাণিজ্য ৷ কারণ, বাণিজ্য দুই দেশকে একত্রিত করে ৷ পাশাপাশি তিনি ভারতের অর্থৈনিক বৃদ্ধির সুফল যাতে কানাডার ব্যবসায়ীরাও পান, সেই আবেদন জানিয়ে ওই দেশের ভারতে আসার কথা বলেছেন ৷

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই বছরের শুরুর দিকে কানাডার মাটিতে খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যায় ভারতীয় এজেন্ট জড়িত থাকার অভিযোগ করার পর থেকে ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয় ৷ গত 18 জুন কানাডার সারেতে গুরুদোয়ারার বাইরে নিজ্জরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল । ভারতের তরফে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয় ৷ এই অভিযোগকে অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে ৷

তার পর অটোয়া এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করে ৷ পালটা হিসেবে ভারত নয়াদিল্লি থেকে প্রথমে কানাডার এক কূটনীতিক বহিষ্কার করে ৷ তার পর অটোয়াকে জানায় যে নয়াদিল্লিতে কানাডার দূতাবাসে কর্মী সংকোচন করতে হবে ৷ এমনকী, সাময়িকভাবে কানাডার নাগরিকদের ভারতের ভিসা দেওয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷

আরও পড়ুন:

  1. 'ভারতের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করতে চাই'; বললেন নিজ্জর হত্যার অভিযোগে অনড় ট্রুডো
  2. ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের সুদিন ফেরার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী কানাডার বিদেশমন্ত্রী
  3. শিখ জঙ্গি হত্যার তদন্ত চলবে, তবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কও গুরুত্বপূর্ণ: কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী

অটোয়া, 28 নভেম্বর: ভারতে জঙ্গি হিসেবে ঘোষিত হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ড নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ কানাডার কাছে চায় নয়াদিল্লি ৷ সেই প্রমাণ পেলেই এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে প্রয়োজনীয় সহায়তা করতে পারবে ভারত ৷ কানাডায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার সঞ্জয় কুমার বর্মা এই কথা জানিয়েছেন ৷ একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ভারত কোনোভাবেই কানাডার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতে চায় না ৷ বরং নয়াদিল্লি অটোয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসায়িক সহযোগিতা বৃদ্ধির পক্ষপাতি ৷ তাই তাঁর অনুরোধ, কানাডা যেন ভারতে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিনিধি পাঠায় ৷

সম্প্রতি ট্যাগ টিভি টরোন্টোর কানাডিয়ান সাংবাদিক তাহির গোরাকে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ভারতের হাই কমিশনার ৷ সেখানে তাঁকে নিজ্জর হত্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় ৷ জানতে চাওয়া হয়, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো যে অভিযোগ করেছেন, তা নিয়ে ভারত কী ভাবছে ? উত্তরে সঞ্জয় কুমার বর্মা বলেন, "আমরা সব সময় বলেছি যে ভারত কানাডিয়ান বন্ধুদের তরফ থেকে দেওয়া যেকোনও নির্দিষ্ট ও প্রাসঙ্গিক বিষয় খতিয়ে দেখতে এবং দুই দেশের পক্ষে আইনত ও যুক্তিপূর্ণ উপায়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রস্তুত ৷"

তিনি আরও বলেন, "ভারত শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট ও প্রাসঙ্গিক তথ্য চাইছে, যাতে আমরা আপনাদের সাহায্য করতে পারি । আমরা কানাডিয়ান তদন্তকারীদের তাঁদের সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সাহায্য করতে পারি, যাতে তাঁদের পক্ষে আইনি পদক্ষেপ করা সম্ভব হয়...আমি এই নিয়ে আমার কানাডিয়ান বন্ধু ও সহকর্মীদের অনুরোধ করব । আমি তাঁদের আশ্বস্ত করতে পারি যে আমরা অবশ্যই এই বিষয়ে নজর দেব ।"

ভারতীয় হাইকমিশনার জানান, এই বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে ৷ তিনি ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্কের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথাও উল্লেখ করেছেন ৷ কানাডায় অনেকে যে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন, তাও উল্লেখ করেছেন সঞ্জয় বর্মা ৷ তাঁর দাবি, ইতিমধ্যে অনেকে ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করে কানাডার অনেক নেতাই মন্তব্য করেছেন ৷

তাঁর আরও দাবি, বাস্তব পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে কথা বলা উচিত ৷ কানাডায় ভারতীয়রাও আক্রান্ত হচ্ছে কি না, সেটাও দেখতে হবে ৷ তিনি আরও জানান, নয়াদিল্লি ও অটোয়ার মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্কের ইতিহাস দীর্ঘ ৷ তবে এই ইস্য়ুতে দুই দেশের মধ্য়ে ভিন্নতা তৈরি হয়েছে ৷ সেই বিষয়টিকে দূর করার দিকেই নজর দেওয়া উচিত দুই দেশের ৷ তার মধ্যে অন্যতম হল বাণিজ্য ৷ কারণ, বাণিজ্য দুই দেশকে একত্রিত করে ৷ পাশাপাশি তিনি ভারতের অর্থৈনিক বৃদ্ধির সুফল যাতে কানাডার ব্যবসায়ীরাও পান, সেই আবেদন জানিয়ে ওই দেশের ভারতে আসার কথা বলেছেন ৷

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই বছরের শুরুর দিকে কানাডার মাটিতে খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যায় ভারতীয় এজেন্ট জড়িত থাকার অভিযোগ করার পর থেকে ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয় ৷ গত 18 জুন কানাডার সারেতে গুরুদোয়ারার বাইরে নিজ্জরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল । ভারতের তরফে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয় ৷ এই অভিযোগকে অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে ৷

তার পর অটোয়া এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করে ৷ পালটা হিসেবে ভারত নয়াদিল্লি থেকে প্রথমে কানাডার এক কূটনীতিক বহিষ্কার করে ৷ তার পর অটোয়াকে জানায় যে নয়াদিল্লিতে কানাডার দূতাবাসে কর্মী সংকোচন করতে হবে ৷ এমনকী, সাময়িকভাবে কানাডার নাগরিকদের ভারতের ভিসা দেওয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷

আরও পড়ুন:

  1. 'ভারতের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করতে চাই'; বললেন নিজ্জর হত্যার অভিযোগে অনড় ট্রুডো
  2. ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের সুদিন ফেরার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী কানাডার বিদেশমন্ত্রী
  3. শিখ জঙ্গি হত্যার তদন্ত চলবে, তবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কও গুরুত্বপূর্ণ: কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.