হেগ, ২১ ফেব্রুয়ারি : কুলভূষণ মামলার শুনানির সময় পাকিস্তানের ৫টি আবেদন খারিজ করল ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস(ICJ)। তার মধ্যে রয়েছে কুলভূষণ যাদবের স্বীকারোক্তির রেকর্ড ও শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন। অ্যাড হক জাজের অসুস্থতার কারণেই শুনানি মুলতবি রাখার আবেদন জানান পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনেরাল আনওয়ার মনসুর খান।
১৮ জানুয়ারি থেকে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস(ICJ)-এ শুরু হয়েছে কুলভূষণ যাদব মামলার শুনানি। আজ শেষ হবে শুনানি। মঙ্গলবার অ্যাড হক জাজ তাসাদুক হুসেন জিলানি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে শুনানি মুলতবি রাখার আবেদন জানান পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনেরাল আনওয়ার মনসুর খান। নতুন অ্যাড হক জাজ নিযোগ করার জন্যই এই আবেদন করে পাকিস্তান। যদিও সেই আবেদনে সাড়া দেননি ICJ-র প্রেসিডেন্ট। ICJ-র প্রেসিডেন্ট আবদুলকাবি আহমেদ ইউসুফ পাকিস্তানের অ্যাডভোকেটকে বলেন, "যদি বিবৃতি প্রস্তুত থাকে তাহলে আপনারা বিবৃতি দিন।"
এর আগে ভারতের তরফে শুনানিতে বলা হয়, পাকিস্তানের একটি মিলিটারি কোর্ট কুলভূষণ যাদবকে সাজা শুনিয়েছে। সেই কোর্টে "অস্বচ্ছভাবে" শুনানি হয়েছে। তাই কুলভূষণ যাদবকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক।" জবাবে পাকিস্তানের তরফে কুলভূষণের মুক্তির দাবি খারিজের আবেদন জানানো হয়।
গতবছর পাকিস্তানে গিয়ে কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করে তাঁর পরিবার। তাদের সঙ্গে ছিলেন পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার জে পি সিং। কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করার পর তিনি জানান, ভারতীয় নৌ বাহিনীর প্রাক্তন কর্মীকে দেখে ভালো রয়েছেন বলে মনে হয়নি। ICJ-তে গতকাল জে পি সিংয়ের সেই বক্তব্য খতিয়ে দেখার আবেদনও জানান পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনেরাল। এছাড়াও কুলভূষণের এক "সহযোগী"-কে সাক্ষী হিসেবে কোর্টে পেশ করার আবেদন জানায় পাকিস্তান। সেই আবেদনও খারিজ করে ICJ।
২০১৭ সালের এপ্রিলে চরবৃত্তি ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে পাকিস্তানের একটি সেনা আদালত কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করে। তা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। প্রথম থেকেই ভারতের দাবি, কুলভূষণ নির্দোষ। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। ভারতের তরফে বলা হয়, একটি হাস্যকর শুনানির মাধ্যমে কুলভূষণকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। তা নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে যায় ভারত। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ICJ-র ১০ সদস্যের বেঞ্চ কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর করা যাবে না বলে নির্দেশ দেয়।