ক্রাইস্টচার্চ, ১৬ মার্চ : কয়েদির সাদা পোশাকে খালি পায়ে দুই পুলিশ অফিসারের সঙ্গে এসে দাঁড়াল সে। শুনানির সময় চিত্র সাংবাদিকরা তখন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ব্রেন্টন হ্যারিসন ট্যারান্টের ছবি তুলতে ব্যস্ত। মসজিদে গুলি চালানোর ঘটনায় যখন পুরো দুনিয়া তাকে ঘৃণার চোখে দেখছে, ট্যারান্টের মুখে তখন তাচ্ছিল্যের হাসি। এমন কী ফোটোগ্রাফারদের সামনে সাদা চামড়ার মানুষ হিসেব নিজেকে আর পাঁচজনের থেকে আলাদা করে জাহির করার চেষ্টায় মত্ত।
ব্রেন্টন হ্যারিসন ট্যারান্ট (২৮) ক্রাইস্টচার্চ থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে ডিউনডিনে থাকত। তার উপরের ঠোঁটে একটি কাটা দাগও রয়েছে। মসজিদে হামলা চালানোর সময় প্রায় ১৭ মিনিট ধরে পুরো ঘটনার লাইভ স্ট্রিমিং করে সে। শুনানি চলাকালীন সারাক্ষণ নীরব ছিল ট্যারান্ট। শুধু সাংবাদিকদের দেখছিল। শুনানি চলাকালীন আইনজীবী রিচার্ড পিটার্স জানিয়ে দেন ট্যারান্টের হয়ে কোনও জামিনের আবেদন করা হবে না। ক্রাইস্টচার্চ হাইকোর্টে পরবর্তী শুনানি ৫ এপ্রিল। বর্তমানে তাকে পুলিশি হেপাজতে নেওয়া হয়েছে। নিউজ়িল্যান্ডের দুটি মসজিদে হামলা চালানোর ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে তিনজন পুরুষ এবং একজন মহিলা। একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দুজন'কে পুলিশি হেপাজতে নেওয়া হয়েছে।
দুটি মসজিদ থেকেই একাধিক বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থান থেকে দুটি বিস্ফোরক উদ্ধার করে পুলিশ। এর মধ্যে একটিকে নিস্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর নিউজ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্দান বলেন, "দেশের ইতিহাসে এইরকম ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার পর বন্দুক আইনে (গান ল) পরিবর্তন আনা হবে।" তিনি জানান, এই হামলার চতুর্থ অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সে একজন সাধারণ নাগরিক ছিল। হামলায় পাঁচটি বন্দুক ব্যবহার করা হয়েছিল। হামলাকারীদের কাছে বন্দুকের লাইসেন্সও ছিল। গতবছরের ডিসেম্বরে আগ্নেয়াস্ত্রগুলি কেনা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেলে নিউজ়িল্যান্ডের দুটি মসজিদে গুলি চলে। এই ঘটনায় কমপক্ষে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর জখম হয়েছেন ২০ জন। এই ঘটনায় গতকালই শোকপ্রকাশ করেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, "ধৃতদের মধ্যে একজন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। এরা সকলেই জঙ্গি।"