শিলিগুড়ি, 25 জুন : উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে গড়ে তোলার দাবি করায় বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্য়ায়ের (Sikha Chatterjee) আবারও থানায় অভিযোগ দায়ের করল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ শুক্রবার শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত ভক্তিনগর থানায় ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় শিলিগুড়ি টাউন ব্লক-3 তৃণমূল কংগ্রেস ৷ অন্যদিকে, এদিনই ‘শিলিগুড়ি দিবস’ উপলক্ষে রাস্তায় নেমে বঙ্গভঙ্গের চক্রান্তের প্রতিবাদ জানান ছাত্রছাত্রীরা ৷
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য হিসাবে গড়ে তোলার দাবি জানান আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বারলা ৷ তারপর একে একে গেরুয়া শিবিরের অন্য নেতা, বিধায়ক, সাংসদরাও তাঁর সুরে সুর মেলাতে শুরু করেন ৷ তাঁদের যুক্তি উন্নয়ন ও সুরক্ষার স্বার্থেই এই দাবি তুলছেন তাঁরা ৷
আরও পড়ুন : ইস্যু বঙ্গভঙ্গ, বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের তৃণমূলের
এই দলে রয়েছেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্য়ায়ও ৷ এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে মাঠে নামে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে আঁতাঁতের অভিযোগ তুলে শিখার বিরুদ্ধে একের পর এক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন দলের নেতা ও কর্মীরা ৷ শুক্রবার যেমন ভক্তিনগর থানায় শিখার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷
এদিনের এই কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন টাউন ব্লক-3 তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দুলাল দত্ত ৷ তিনি বলেন, ‘‘বিধায়ক সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন ৷ বাংলাকে ভাগ করার চক্রান্ত করছেন ৷ তাই আমরা অবিলম্বে তাঁকে গ্রেফতার করার দাবি জানাচ্ছি ৷ ’’ এদিকে, গোটা ঘটনায় মুখ খুলেছেন শিলিগুড়ি পৌরনিগমের প্রশাসক তথা রাজ্য়ের প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেবও ৷ তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির নেতারা দিল্লিতে যান ৷ রাষ্ট্রসংঘে যান ৷ কিন্তু, বাংলার মানচিত্রে একচুলও পরিবর্তন হবে না ৷’’
অন্যদিকে, যখন পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরগরম রাজ্য রাজনীতি, ঠিক সেই সময় বাংলাকে অখণ্ড রাখার পাল্টা দাবিতে মৌন প্রতিবাদে সামিল হল শিলিগুড়ির ছাত্র সমাজ। এদিন শহরজুড়ে এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সামিল হয় স্টুডেন্ট সোসাইটি অফ শিলিগুড়ি ৷
আরও পড়ুন : বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাবকারী দুই সাংসদের বিরুদ্ধে আউশগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের
2017 সালে পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পাহাড় ও সমতল ৷ প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল সর্বত্র ৷ সেই সময় থেকেই 25 জুন দিনটিকে ‘শিলিগুড়ি দিবস’ হিসেবে পালন করা হয় ৷ সেই দিন মাহাত্ম্যের কথা মাথায় রেখেই এদিনও মৌন প্রতিবাদ জানান ছাত্রছাত্রীরা ৷ প্ল্যাকার্ড হাতে বাংলাকে অখণ্ড রাখার দাবি জানান তাঁরা ৷ পাশাপাশি, সাধারণ মানুষকে রাখী পরিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তাও দেন ৷
প্রতিবাদী ছাত্রছাত্রীদের তরফে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সদস্য বিবেক ঝা বলেন, ‘‘এই করোনা আবহে মানুষ দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন ৷ অথচ এমন একটা কঠিন সময়েই কিছু মানুষ আবার বাংলাকে ভাগ করার চক্রান্ত করছে ৷ বাংলাকে কোনওভাবেই ভাগ হতে দেওয়া যাবে না ৷ এই চক্রান্তের প্রতিবাদ জানাতেই আমরা পথে নেমেছি ৷’’