মালদা, 25 মে : স্ত্রী'কে কুপিয়ে খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ করল মদ্যপ স্বামী (Husband kills wife and surrenders to police in Malda) ৷ বুধবার এই ঘটনাটি ঘটেছে চাঁচল 2 নম্বর ব্লকের কাণ্ডারণ গ্রামে । ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে চাঁচল থানার পুলিশ ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত বধূর নাম মিরা সিং ঠাকুর । বয়স 37 বছর । বাবার বাড়ি হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডী গ্রামে । প্রায় 22 বছর আগে তাঁর বিয়ে হয় কাণ্ডারণ গ্রামের বাসিন্দা রাজেশ ঠাকুরের সঙ্গে । রাজেশ পেশায় ক্ষৌরকার । বাড়ির পাশেই তাঁর সেলুন রয়েছে । কয়েক বছর আগে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে । সেই সময় চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হয়ে যায় বলে খবর । চিকিৎসার জন্য তাদের বেশ কিছু টাকা দেনাও হয়ে যায় । দেনার টাকা শোধ করতে বছর দুয়েক ধরে মিরাদেবী শিলিগুড়িতে কাজ করছিলেন । সেখানেই থাকতেন তিনি । তাঁকে সেখানে যেতে একাধিকবার বারণ করে রাজেশ । যদিও স্বামীর বারণ অগ্রাহ্য করেই তিনি শিলিগুড়িতে কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন । মাসে এক থেকে দু’বার কয়েকদিনের জন্য বাড়িতে ফিরতেন । বাড়ি ফিরলেই স্বামীর সঙ্গে তাঁর অশান্তি শুরু হত ।
গত রবিবার তিনি শিলিগুড়ি থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন । এবারও তাঁর সঙ্গে অশান্তি শুরু করে রাজেশ । আজ দুপুরে মদ্যপ অবস্থায় সেলুন থেকে বাড়ি ফিরে স্ত্রীর সঙ্গে ফের ঝামেলা শুরু করে । সেই সময় হঠাৎ ধারাল ছুরি দিয়ে স্ত্রী'কে কোপাতে শুরু করে রাজেশ । চিৎকার করে ঘরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন মীরাদেবী, তা দেখে তাঁর পুত্রবধূ চিৎকার শুরু করে দেন । ছুটে আসেন পড়শিরা । পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সেখান থেকে পালিয়ে যায় রাজেশ । স্থানীয়রাই মীরাদেবীকে স্থানীয় সামসী গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান । কিন্তু পরিস্থিতি দেখে সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে মালদা মেডিক্যালে রেফার করে দেন । মেডিক্যালের গেটেই মারা যান মীরাদেবী (wife murdered by husband)।
মীরাদেবীর ছেলে জয় ঠাকুর বলেন, "সেই সময় আমি সেলুনে কাজ করছিলাম । হঠাৎ আমার স্ত্রী ফোন করে জানায়, বাবা নাকি মাকে ছুরি মেরেছে । মা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছে । আমি সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে ছুটে যাই । মা বছর দুয়েক ধরে শিলিগুড়িতে কাজ করত । বাবার অসুখের চিকিৎসায় অনেক ঋণ হয়ে গিয়েছিল । সেই টাকা মেটাতেই মা শিলিগুড়িতে কাজে গিয়েছিল । রবিবারই মা ঘরে ফিরে এসেছিল । কেন যে বাবা মদ্যপ অবস্থায় মাকে খুন করল, জানি না । বাবা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে ।"
আরও পড়ুন : Malda Gunshot : দেওরের হাতে গুলিবিদ্ধ বৌদি, গ্রেফতার অভিযুক্ত
তবে বাড়ি ছেড়ে পালালেও রাজেশ এলাকা ছেড়ে পালায়নি । বাড়ি থেকে সে সটান চলে যায় চাঁচল থানায় । উপস্থিত পুলিশকর্মীদের নিজের কৃতকর্মের কথা জানায় । থানার আইসি সুকুমার ঘোষ বলেন, "পারিবারিক বিবাদের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। রাজেশ ঠাকুর থানায় আত্মসমর্পণ করেছে। সে স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করেছে।"