মালদা, 16 সেপ্টেম্বর : চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে এখনও টালমাটাল ইংরেজবাজার পৌরসভা । যার প্রভাব পড়েছে পৌর পরিষেবায় । শহরজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ । এদিকে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার অন্যতম কারণ হিসেবে এলাকার বেহাল সাফাই ব্যবস্থাকে হাতিয়ার করেছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলররা ৷ তবে চেয়ারম্যান নিজেও স্বীকার করেছেন পরিষেবা এখনও স্বাভাবিক হয়নি ৷ যদিও তাঁর দাবি, অনাস্থার কারণে নয়, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের জন্যই শহরের আবর্জনা ঠিকমতো সাফাই করা যাচ্ছে না । যতদিন না 34 নম্বর জাতীয় সড়কের বাইপাস খুলে দেওয়া হবে, ততদিন এই সমস্যা থাকবেই । অন্যদিকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, চলতি মাসে বাইপাস চালু হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই ।
উল্লেখ্য, গত 28 অগাস্ট ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসেন 15 জন তৃণমূল কাউন্সিলর । তাঁদের বক্তব্য ছিল, পৌর পরিষেবা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন চেয়ারম্যান । শহরের আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে না । নিকাশি ব্যবস্থাও তথৈবচ । তাঁরা জনপ্রতিনিধি । অথচ মানুষের প্রশ্নের জবাব দিতে পারছেন না । তাই তাঁরা এই চেয়ারম্যানের অপসারণ চান । এই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয় । আসরে নামতে হয় শাসকদলের রাজ্য নেতৃত্বকে । কিন্তু আজও সমস্যার সমাধান হয়নি । এখনও অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হয়নি । ফলে পৌরসভার অন্দরমহল এখনও অশান্ত । তার প্রভাব পড়ছে পৌর পরিষেবাতেও । শহরের আবর্জনা নিয়মিত পরিষ্কার হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে । পুজোর মুখে এনিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন সবাই ।
![Ingraj Bazar municipality cleaning system of area is affected](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/4457995_wb_chairman.jpg)
এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে চেয়ারম্যান নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, "অনাস্থার জন্য পৌর পরিষেবায় কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি । আমি নিয়মিত পৌরসভায় আসছি । আসছেন ভাইস চেয়ারম্যানও । কেউ কোনও কাজ নিয়ে এলে আমাদের ক্ষমতার মধ্যে থেকে সেই কাজও করে দেওয়া হচ্ছে । আর অনাস্থার সঙ্গে জঞ্জালের কোনও সম্পর্ক নেই । এটা ঠিক, জঞ্জাল নিয়ে একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে । কারণ, জঞ্জাল ফেলার জন্য এতদিন আমাদের কোনও নির্দিষ্ট জায়গা ছিল না । তা ফেলার জন্য আমরা মহদিপুরে একটা জায়গা কিনেছি । সেখানে সীমানা প্রাচীরের কাজও শুরু হয়েছে । আগে আমরা ইংরেজবাজার নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি কিংবা অন্য কোনও জায়গায় আবর্জনা ফেলতাম । এখন মহদিপুরের ওই জায়গায় আবর্জনা ফেলার কাজও শুরু হয়েছে । কিন্তু ওই জায়গাটি শহর থেকে 17 কিলোমিটার দূরে । দূরত্বের জন্য সেখানে আবর্জনা নিয়ে যেতে সময় বেশি লাগছে । উপরন্তু, 34 নম্বর জাতীয় সড়ক ছাড়া সেখানে যাওয়ার কোনও রাস্তা নেই । কিন্তু এখন বাইপাস দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় প্রবল যানজটে এই 17 কিলোমিটার যাতায়াত করতে 4 থেকে 5 ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে । এই সমস্যার জন্য শহরের আবর্জনা যত তাড়াতাড়ি সাফ হওয়ার কথা, তা হচ্ছে না । বাইপাস চালু হয়ে গেলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শহরের আবর্জনা সাফ করে আমরা শহরকে পরিষ্কার রাখতে পারব ।"
অন্যদিকে 34 নম্বর জাতীয় সড়কের প্রোজেক্ট ডিরেক্টর দীনেশ হানসারিয়া জানিয়েছেন, বাইপাস চালু হয়নি ৷ এরই মধ্যে ওই রাস্তায় যান চলাচল শুরু হয়ে গেছে ৷ তাই কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে । বাইপাসের একাংশ বসে গেছে । এই মুহূর্তে সেখান দিয়ে যান চলাচল সম্ভব নয় । তাতে রাস্তার আরও ক্ষতি হবে । তবে ক্ষতিগ্রস্ত অংশের মেরামতির কাজ শুরু করা হয়েছে । রাস্তাটি চলাচলের উপযুক্ত করতে সেপ্টেম্বরের পুরোটাই লেগে যাবে । তবুও তাঁরা জেলাশাসক ও জেলার ব্যবসায়িক সংগঠনের আবেদনে সাড়া দিয়ে পুজোর আগে বাইপাস চালু করার চেষ্টা করছেন ।