মালদা, 9 মে : তৃণমূলের পর মালদায় কোন্দল দেখা দিল বিজেপিতেও । নব্য-পুরনো কোন্দলের জেরে পদত্যাগ করলেন বিজেপির যুবমোর্চার মণ্ডল কমিটির নেতা সন্দীপ পাণ্ডে (BJP leader resigns in Malda)। নিজের পদত্যাগের চিঠি তিনি মণ্ডল সভাপতি-সহ দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছেন বলে জানান । যাঁর বিরুদ্ধে তাঁর মূল অভিযোগ, সেই দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক রতন দাসের সাফ কথা, কারও ইচ্ছে হলে তিনি অন্য দলে যেতেই পারেন । গোটা বিষয়টি আলোচনা সাপেক্ষে মিটিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত (BJP Factionalism in Malda)।
পদত্যাগকারী যুবমোর্চা নেতা সন্দীপ পাণ্ডের বক্তব্য, "দল এখন যেভাবে চলছে তাতে আমি ব্যথিত । এমন সংস্কৃতি দেখে আমি বিজেপিতে আসিনি । বিভিন্ন বিষয় লক্ষ্য করে আমি বুঝতে পেরেছি, এই দলে থাকা আমার আর সম্ভব নয় । এর আগে আমি মণ্ডল কমিটির সম্পাদক ছিলাম, তার আগে যুবমোর্চার সভাপতি ছিলাম । কিন্তু নতুন যে কমিটি হয়েছে তাতে আমাকে কোষাধ্যক্ষ করা হয়েছে । বর্তমান জেলা সাধারণ সম্পাদক রতন দাসের আগেও তিনি বিধানসভার আহ্বায়ক ছিলেন । এখনও সম্ভবত তিনি সেই পদে রয়েছেন । তিনি দলের মধ্যে নিজের গোষ্ঠী তৈরি করে ফেলেছেন । তাঁর গোষ্ঠীর লোকজনকেই সামনে এগিয়ে আনার চেষ্টা হচ্ছে । অন্যদের উপর বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে তাদের একঘরে করে রাখা হচ্ছে ।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা মিডিয়ার সামনে মুখ খুললে দলের অনেক তথ্য সামনে চলে আসার ভয়ে আমাদের দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে । দলের কোনও মিটিংয়ে শুধু চা খাওয়া আর সেলফি তোলা ছাড়া আর কিছু হয় না । সেই ছবি জেলা নেতৃত্বকে পাঠানো হচ্ছে । আজ আমি এর বিরুদ্ধে সামনে আসলাম । কিন্তু আমার পিছনেও আরও অনেকে রয়েছে । দলের জেলা সভাপতিকে অনেক আগেই বিষয়টি জানিয়েছিলাম । কিন্তু তিনি আমাদের কোনও গুরুত্বই দেন না । একই অবস্থা মণ্ডল সভাপতিরও । তিনি তো আমাকে নানা প্রলোভন দিয়েছেন । যারা সদ্য দলে ঢুকেছে, তাঁরাই এখন পদাধিকারী । আর পুরোনোরা না ঘরকা, না ঘাটকা । এসবের বিরুদ্ধেই আজ আমি পদ এবং দল থেকে ইস্তফা দিচ্ছি ।"
বিষয়টি নিয়ে রতন দাস বলেন, "সন্দীপ যে পদত্যাগ করেছে তা আমি জানতাম না । তিনি 2014 সালের পর দলে এসেছেন । আর আমরা জন্মের পর থেকেই বিজেপির বিচারধারায় মানুষ হয়েছি । আমাদের মতের অমিল হতেই পারে । কিন্তু তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত । আসলে যাঁরা এসব অভিযোগ করছেন, তাঁরা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন । আমাদের একজন কর্মীও দল ছেড়ে গেলে দলের ক্ষতি । কিন্তু যাঁরা দলের কোনও কর্মসূচিতেই যোগ দেন না, তাঁরা যদি অন্য দলে যেতে চান, তা তাঁরা যেতেই পারেন ।"
আরও পড়ুন : Nirmal Maji on Malda Medical : আসি যাই, পয়সা পাই; মালদা মেডিক্যালের একাংশের বিরুদ্ধে তোপ নির্মল মাজির
এপ্রসঙ্গে বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, "দলে কোনও কর্মীকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না, এটা ঠিক নয় । নতুন ও পুরনোদের মেলবন্ধনেই দল এতদিন চলে এসেছে । আগামীতেও চলবে । পুরনোদের অভিজ্ঞতা আর নতুনদের উদ্যমই দলের সম্পদ । এখন সবে মাত্র আমাদের মণ্ডল ও মোর্চা কমিটিগুলির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন । এরপর বিভিন্ন মণ্ডল ও মোর্চা কমিটি তৈরি হবে । তাই কেউ যদি মনে করেন তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না, সেটা ঠিক নয় । আমরা সবার সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব ।"