কলকাতা, 27 ফেব্রুয়ারি: সুরক্ষাবিধির তোয়াক্কা না করেই ম্য়ানহোলে নেমেছিলেন ঠিকাকর্মীরা ৷ তার জেরেই প্রাণ যায় চার শ্রমিকের ৷ ঘটনা ঘটার পরই কলকাতা পৌরনিগমের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল ৷ ঘোষণা মোতাবেক, মৃতদের প্রত্য়েকের পরিবারের সদস্য়দের হাতে পাঁচ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেন কলকাতার মুখ্য পৌরপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিম ৷
গত বৃহস্পতিবারের ঘটনা ৷ কুঁদঘাটে ম্য়ানহোল পরিষ্কার করতে নামেন সাত ঠিকাকর্মী ৷ সেই সময়েই পা হড়কে নীচে পড়ে যান তাঁরা ৷ দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হলেও বিষাক্ত গ্য়াসের প্রভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন সকলেই ৷ পরে মৃত্য়ু হয় চারজনের ৷
ঘটনা ঘটার পরই তদন্তের নির্দেশ দেয় পৌর প্রশাসন ৷ তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে সামনে এসেছে গাফিলতির ঘটনা ৷ তার স্বপক্ষে প্রমাণও পেয়েছেন তদন্তকারীরা ৷ জানা গিয়েছে, শ্রমিকদের নীচে নামানোর সময় সুরক্ষাবিধির তোয়াক্কা করা হয়নি ৷ ছিল না ‘সেফটি রোপ’ ৷ ফলে পা হড়কে নীচে পড়ে গেলেও নিজেদের সামলানো সুযোগ পাননি শ্রমিকরা ৷ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ঠিকা সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: শহরের চার বেসরকারি হাসপাতালকে ছয় লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ কমিশনের
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ফিরহাদ জানান, যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত মর্মান্তিক ৷ মৃতদের পরিবারের সদস্যরা এককালীন অর্থসাহায্য় পেলেও পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে পরিবারের একজনের চাকরির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা ৷ যা মেনে নিয়েছেন পৌরনিগমও ৷ দেওয়া হয়েছে হয়েছে দ্রুত চাকরির আশ্বাস ৷ তবে স্বজনহারাদের আক্ষেপ, টাকা বা চাকরি কখনই একজন মানুষের বিকল্প হতে পারে না ৷ তাঁরা মনে করেন, একটু সতর্ক হলেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এড়ানো যেত ৷ প্রসঙ্গত, এই ঘটনায় যাঁদের মৃত্য়ু হয়েছে, অতিমারীর আগে পর্যন্ত তাঁরা ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেন ৷ কিন্তু লকডাউনের পর বাড়িতেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ৷ পরিবারের সকলের ভাত জোটাতেই ম্য়ানহোল পরিষ্কারের কাজ নেন তাঁরা ৷ আর তাতেই হারাতে হয় জীবন ৷ মৃতদের পরিবারের আর্তি, আর কারও সঙ্গে যেন এমন ঘটনা না ঘটে, সবার আগে সেটা নিশ্চিত করুক প্রশাসন ৷