কলকাতা, 16 জুলাই : কর্পোরেট ভবনের ধাঁচে তৃণমূল ভবন (Trinamool Bhaban) নতুন রূপে গড়ে উঠবে । সেখানে থাকবে সমস্ত আধুনিক সুবিধা । কিন্তু টাকা আসবে কোথা থেকে ? সাধারণ মানুষের মনে এই প্রশ্ন উঠতেই পারে । তৃণমূল (Trinamool Congress) সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, সংসদ, বিধায়ক ও জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া চাঁদাতেই গড়ে উঠবে এই ভবন । দলের তরফে সব হিসেব রাখা হচ্ছে । নয়া ভবন উদ্বোধনের পর তা জনসমক্ষে নিয়ে আসা হবে ।
ঝাঁ চকচকে ভবন তৈরি করতে যে খরচ হবে, তা নিয়ে যাতে বিরোধীরা কোনও অভিযোগ তুলতে না পারে সেই কারণে চাঁদার সমস্ত হিসেব রাখা হচ্ছে ৷ তাছাড়া ভবন তৈরিতে দলের সর্বস্তরের কর্মী-সমর্থকদের অংশীদারিত্ব থাকলে সদর দফতরের প্রতি তাঁদের আলাদা দায়বদ্ধতা থাকবে বলেও মনে করছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল ৷
আরও পড়ুন : সংসদের বাদল অধিবেশনে এবার "দিদি ও দিদি"-র পাল্টা জবাব দেবে তৃণমূল
তৃণমূল কংগ্রেসের এই সদর দফতর রয়েছে সায়েন্স সিটি (Science City) পেরিয়ে রুবি যাওয়ার পথে একেবারে বাইপাসের ধারে তপসিয়ায় ৷ 2004 সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ভবন তৈরির কাজ শুরু হয় ৷ সেই সময় তপসিয়ার 36 জি-এর এই ঠিকানায় তৃণমূল ভবন গড়ে ওঠার পেছনে যথেষ্ট ভূমিকা ছিল রাজ্যের বর্তমান মন্ত্রী জাভেদ খানের । এরপর দীর্ঘ 17 বছর ওই ভবন নানা কাহিনির সাক্ষী ।
তবে এবার লড়াই জাতীয় স্তরে ৷ তাই কর্পোরেট ধাঁচে গড়া হচ্ছে তৃণমূল ভবন । জুন মাস থেকে একটু একটু করে ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে তৃণমূল ভবনের । জুলাই-এর শেষের মধ্যে বাকি অংশ ভাঙা হয়ে যাবে । অগস্ট থেকে নতুন ভবনের কাজ পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে । এখনও পর্যন্ত যা ঠিক হয়েছে, তাতে আগামী বছর দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন এই নতুন ভবন উদ্বোধন করতে চায় রাজ্যের শাসক দল । সেই লক্ষ্যে জোরকদমে কাজ শুরু হয়েছে ।
আরও পড়ুন : দলত্যাগ বিরোধী আইনে শিশির-সুনীলকে চিঠি লোকসভার সচিবালয়ের
নতুন ভবনের ব্লুপ্রিন্ট ইতিমধ্যেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) কাছ থেকে অনুমোদন করানো হয়েছে । নয়া ভবন হতে চলেছে পাঁচতলা । জানা গিয়েছে, নতুন ভবনে শীর্ষ নেতাদের জন্য পৃথক ঘরের ব্যবস্থা থাকবে, শাখা সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের জন্য আলাদা আলাদা ঘর থাকবে । প্রত্যেক জেলার নেতা ও কর্মীদের জন্য আলাদা আলাদা বসার জায়গা থাকবে । করোনাবিধির কথা মাথায় রেখে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকাঠামো রাখা হচ্ছে ভবনে । ক্যান্টিন, গাড়ির পার্কিং-এর জায়গাও থাকছে ।
প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল শীর্ষ নেতার কথায়, দলীয় কর্মীদের আর্থিক সাহায্যেই গড়া হচ্ছে । এমনিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী । তাই নতুন ভবনের জন্য সাংসদদের থেকে নেওয়া হচ্ছে এক লক্ষ টাকা, বিধায়ক, কাউন্সিলর সবার থেকেই ভবনের নবরূপের নির্মাণের জন্য চাঁদা নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন : বিধানসভার ফলের জন্য রাজ্যবাসীকে কৃতজ্ঞতা, একান্ত সাক্ষাৎকারে নচিকেতা
কিন্তু এই বিপুল কর্মকাণ্ডের সমস্যাও একটা রয়েছে । হাতে আর পাঁচ মাস সময় । নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সবকিছু শেষ করা যাবে তো ! তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে মূল ভবনের কাজ যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা হবে । তারপর ধাপে ধাপে বাকি কাজটা করা হবে বলে জানা গিয়েছে । তবে কনফারেন্স হল এখনই ভাঙা হচ্ছে না । কারণ, দলের তরফে বারবার সাংবাদিক বৈঠক বা যোগদানের পালা থাকলে ওই হলেই সবকিছু করা হবে ।