কলকাতা, 24 অগস্ট: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জড়িত হওয়ার কারণে আগেই তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দল তাঁকে দলের সমস্ত পদ থেকে অপসারণ করেছে । গতকালই রাজ্য বিধানসভার তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিধায়ক থাকলেও দুর্নীতিমুক্ত প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত বিধানসভার কোনও কমিটিতে জায়গা হবে না তাঁর । এ বার জেলে থাকা তৃণমূল বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) কাছ থেকে কোনও ধরনের লেভি নেওয়া বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্যের শাসক দল ।
এছাড়া এতদিন পর্যন্ত তৃণমূল পরিষদীয় দলের যে অ্যাকাউন্ট ছিল, তা শীর্ষ নেতা হিসেবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই দেখাশোনা করতেন । এ বার সেই দায়িত্ব থেকেও তাঁকে অব্যাহতি দিল দল । তাঁর পরিবর্তে এখন এই দায়িত্ব সামলাবেন নতুন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং দলের দুই শীর্ষ নেতা ফিরহাদ হাকিম ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ।
প্রসঙ্গত তৃণমূল কংগ্রেসের প্রত্যেক বিধায়ককে মাসে 2000 টাকা করে দলকে দিতে হয় । প্রত্যেক বিধায়কই এই অর্থ দেন, সেটাই লেভি । সাধারণত তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কদের লেভির অর্থ সরাসরি বিধানসভায় থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের থেকে সরাসরি চলে যায় দলের অ্যাকাউন্টে । এ বার দলের তরফ থেকে চিঠি দিয়ে ওই ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে এই অর্থ দলের অ্যাকাউন্টে পাঠানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে । তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হলেও দল যে তাঁকে পুরোপুরি ছেঁটে ফেলতে চলেছে, এই ঘটনা তারই প্রমাণ ।
আরও পড়ুন: শ্রমিক সংগঠনে নতুন জেলা সভাপতিদের তালিকা ঘোষণা করল তৃণমূল
অতীতে একাধিক তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক এবং মন্ত্রী দুর্নীতির অভিযোগে জেলে গেলেও দল কখনওই তাঁদের কাছ থেকে লেভি নেওয়া বন্ধ করেনি । কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি যেভাবে জনমত তৈরি হয়েছে তারপর দল কোনও ভাবেই তাঁর সঙ্গে নিজেকে জড়াতে চাইছে না । আর সেখান থেকেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে ।
প্রসঙ্গত এমনিতেই তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কেন্দ্র করে যে দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসেছে, সেই বিষয়ে বারবার বলা হয়েছে আইন আইনের পথেই চলবে । এ ক্ষেত্রে পার্থ চট্টোপাধ্যায় যদি আইনে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে আসতে পারেন, তাহলে তাঁর উপর চাপানো সাসপেনশনের বিষয়ে দল ভাবনাচিন্তা করবে । কিন্তু তার আগে পর্যন্ত নিজের ভাবমূর্তি বাঁচাতে পার্থর সঙ্গে সব ধরনের সংস্থা থেকে দূরে থাকতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস । এক্ষেত্রে তাঁর থেকে লেভি না নেওয়া তারই একটা অংশ বলে জানা যাচ্ছে ।