কলকাতা, 9 জুলাই : পশ্চিমবঙ্গের সপ্তদশ বিধানসভায় (West Bengal Assembly) নেই বামফ্রন্ট (Left Front) ও কংগ্রেসের (Congress) কোনও প্রতিনিধি ৷ বঙ্গ রাজনীতির ইতিহাসে এবারই প্রথম এই ঘটনা ঘটেছে ৷ যা নিয়ে গত 2 মে ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে বিস্তর আলোচনা চলছে ৷
এবার এই বিষয়ে মুখ খুললেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee) ৷ বাংলার পঞ্চায়েতমন্ত্রী অকপটে জানালেন যে বাম-কংগ্রেসহীন বিধানসভায় তাঁর ভাল লাগছে না ৷ আর এই নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির দিকেও ছুঁড়ে দিয়েছেন কটাক্ষ ৷
আরও পড়ুন : দেহরক্ষীর অস্বাভাবিক মৃত্য়ুতে নাম জড়াল শুভেন্দু অধিকারীর, তিন বছর পর দায়ের অভিযোগ
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক পর বঙ্গের ক্ষমতা হারিয়ে 2011 সালে বিধানসভায় প্রধান বিরোধী ছিল বামফ্রন্ট ৷ ফ্রন্টের প্রধান শরিক সিপিএম ছিল প্রধান বিরোধী দল ৷ 2016 সালে অবশ্য প্রধান বিরোধী দল হয় কংগ্রেস ৷ আর এবার সিপিএম তথা বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস একটিও বিধানসভায় জিততে পারেনি ৷
তবে বকলমে তাদের এক প্রতিনিধি আছেন ৷ তিনি ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী ৷ যদিও তিনি ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের সদস্য ৷ কিন্তু এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বাম, কংগ্রেসের সঙ্গে সংযুক্ত মোর্চা তৈরি করে লড়াই করেছিল আইএসএফ (ISF) ৷ তাই তাঁকে সংযুক্ত মোর্চার প্রতিনিধিও বলা যেতে পারে ৷ কিন্তু তা যে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো, তা স্পষ্ট সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কথায় ৷
আরও পড়ুন : কোভিড-ব্যর্থতা ঢাকতে হর্ষ বর্ধনকে বলির পাঁঠা করেছেন মোদি, কটাক্ষ অধীরের
এদিন তিনি বলেছেন, ‘‘বাম-কংগ্রেস বিধানসভায় না থাকলে আমার ভাল লাগছে না ৷ তার কারণ, ওরা ভাল-মন্দ যাই হোক, প্রথম দিন থেকে বিধানসভায় ছিল ৷’’ আর এটা তাঁর কাছে যে অস্বস্তির, তা স্বীকার করতেও দ্বিধাবোধ নেই বালিগঞ্জের বিধায়কের ৷ তিনি বললেন, ‘‘যখন প্রথম বিধানসভায় এসেছি, তখন ওরা ছিল ৷ ওদেরই দেখেছি ৷ আর তো কেউ ছিল না ৷ এটা অস্বস্তি ৷’’
সপ্তদশ বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দল বিজেপি (BJP) ৷ তারা এবার 77টি আসনে জেতে ৷ দু’জনের পদত্যাগ ও মুকুল রায়ের (Mukul Roy) দলবদলের পর তাদের সংখ্যা এখন 74 ৷ সাম্প্রতিক অতীতে কোনও বিরোধী দলই এত বিধায়ক নিয়ে বিধানসভায় আসেনি ৷ স্বাভাবিকভাবেই তাই এবার শাসককে অনেক বেশি চড়া বিরোধিতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে ৷ ইতিমধ্যে অধিবেশেনর শুরুতে বিজেপির বিক্ষোভে ভন্ডুল হয়ে যায় রাজ্যপালের ভাষণ পাঠ ৷
আরও পড়ুন : বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করছে বিরোধীরা : পার্থ
আর এই সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘এখন যারা এসেছে, বলছে পঞ্চায়েত ৷ চলে যাচ্ছে কোথায় !’’ তিনি মনে করেন বিজেপির বাম-কংগ্রেস বিধানসভা ব্যবস্থাকে 120 গুণ বেশি জানত ৷ তিনি বলেছেন, ঝগড়া হত, লড়াই হত ৷ কিন্তু এই বিধানসভার বিষয়টা জানত ৷’’
এই নিয়ে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে বরাবরই তৃণমূলের একটা গোপন আঁতাত ছিল । সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আজকের বক্তব্যে সেটা প্রমাণ হয়ে গেল । এই অভিযোগ আমরা অতীতে বহুবার করেছি । বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়ায় তৃণমূল সরকার চলত । তাই এখন সুব্রতবাবুর কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে । বিজেপি বিরোধী দলের মর্যাদা পাওয়ার পর সেই কাজটা তো আর তৃণমূল করতে পারবে না । তাই এখন বাম-কংগ্রেসের জন্য দরদ উথলে উঠছে । রাজ্যের মানুষকে ধন্যবাদ। এবার বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসকে শূন্য করার জন্য ৷’’
আরও পড়ুন : দেহরক্ষীর অস্বাভাবিক মৃত্য়ুতে নাম জড়াল শুভেন্দু অধিকারীর, তিন বছর পর দায়ের অভিযোগ