কলকাতা, 1 সেপ্টেম্বর: গত কয়েকদিন ধরে তাঁর বক্তব্য পাওয়ার জন্য চেষ্টা করেছে সংবাদমাধ্যম । কারণ একটাই, আজ যে ইউনেসকোর এই স্বীকৃতি, এর পেছনে যদি কেউ থাকেন তাহলে তিনি তপতী গুহ ঠাকুরতা (Tapati Guha Thakurta)। প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তনীর গবেষণাই প্রথম দুর্গা পূজা নিয়ে নজর কেড়েছিল আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের । ইউনেসকোর স্বীকৃতির জন্যেও তিনি কম পরিশ্রম করেননি । এই অবস্থায় সমালোচকদের একটা অংশ বলতে শুরু করেছিলেন, সরকার যে ইউনেসকোর (UNESCO) এই স্বীকৃতির জন্য তাদের সাফল্যের কথা প্রচার করছে বাস্তব কিন্তু তা নয় । বৃহস্পতিবার রেড রোডে সেই তপতী গুহ ঠাকুরতাই স্বীকার করে নিলেন, সরকারের সক্রিয়তা না থাকলে আজ এই স্বীকৃতি পাওয়া সম্ভব হত না । বিগত কয়েকদিন সংবাদমাধ্যমে তিনি মুখ খোলেননি । তবে সেই তিনিই এ দিন সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে বলেন, তিনি একজন স্কলার । এই স্বীকৃতির জন্য সরকারের অবদানও কিছু কম নয় (Durga puja intangible cultural heritage)।
যদিও এ দিন রেড রোডে ইউনেসকোর দুই প্রতিনিধিকে সম্মান জানানোর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী নিজে তাঁকেও সম্মান জানান । টেরাকোটার কাজের একটি দুর্গামূর্তি তাঁর হাতে তুলে দিয়ে তাঁকে সম্মান জানানো হয় । এ দিন মূল অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন এই প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী ।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, রাষ্ট্রীয় সীমানা ভুলে ঐক্যের ডাক মমতার
প্রসঙ্গত, 2015 সালে অধ্যাপিকা তপতী গুহ ঠাকুরতার লেখা একটি বই, 'ইন দ্য নেম অফ দ্য গডেস: দ্য দুর্গাপুজোস অফ কন্টেম্পোরারি কলকাতা' প্রকাশিত হয় । ইউনেসকোর এই স্বীকৃতির পেছনে অন্যতম অবদান রয়েছে এই গবেষণা ভিত্তিক বইটির । তপতীর কথা অনুসারে, তিনি তাঁর এই গবেষণাধর্মী বইটিতে কলকাতা ও তার দুর্গাপুজো নিয়ে লেখালেখি করেন এবং তা নজরে আসে আন্তর্জাতিক বিশ্বের । 2018 সাল থেকে তপতী চালাচ্ছিল দুর্গাপুজোকে ইউনেসকোর হেরিটেজ তকমা পাইয়ে দেওয়ার লড়াই । এর জন্য প্রথমে দুর্গাপুজো নিয়ে ডসিয়ার তৈরি করে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে পাঠানো, তার পর সেটিকে ইউনেসকোর মনোনয়নের জন্য প্রেরণ করা, সবকিছুই করেন তপতী । 2021 সালে শেষপর্যন্ত সেই লড়াই সার্থক হয় এবং কলকাতার দুর্গাপুজো পায় 'ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ' সম্মান ।
এ দিন সেই তিনিই বলছিলেন, "আমি বাংলার জন্য এই কাজ করেছিলাম । দুর্গাপুজো সমস্ত ধর্মের মানুষ, বিভিন্ন শিল্পকে নিয়ে হয় । তাই এই সম্মান খুব জরুরি ছিল ।"