কলকাতা, 26 সেপ্টেম্বর : কৃষক আন্দোলনের ইস্যুতে সমর্থন থাকলেও বনধে নয় । স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন মমতা ।
কেন্দ্রের নয়া তিনটি কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে আগামিকাল, সোমবার দেশজুড়ে ভারত বনধের ডাক দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি । কংগ্রেস ও বামদলগুলি সমর্থন করেছে এই বনধকে । কিন্তু কৃষকদের পাশে দাঁড়ালেও বাংলায় বনধ বিরোধী যে অবস্থান তাঁর সরকার নিয়েছে, তাতে অনড় থাকবেন বলে রবিবার স্পষ্ট করে দিলেন রাজ্য়ের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তবে অন্যান্য বনধের মতো এবার নবান্নের তরফে, বনধের দিন সরকারি দফতরে ১০০ শতাংশ হাজিরা আবশ্যিক, এরকম কোনও ঘোষণা করা হয়নি ।
এদিন ভবানীপুরে ভোট প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বনধ সমর্থন করি না । তবে ইস্যুকে সমর্থন করছি ।" উল্লেখ্য, তিনটি কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে গত বছর থেকে আন্দোলন চালাচ্ছেন কৃষকরা । সংযুক্ত কিষান মোর্চার তরফে সোমবার ভারত বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে । তবে এরাজ্যে বনধ বিরোধী অবস্থান আগেই নিয়েছে তৃণমূল সরকার । এক্ষেত্রেও সেই অবস্থানই ধরে রাখছে শাসকদল । রবিবার যদুবাবুর বাজারে উপভোটের প্রচারমঞ্চে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ''সারা ভারতে কৃষক আন্দোলন হচ্ছে । আমরা তাদের সমর্থন করছি। তিনটি বিল প্রত্যাহার করতে বলছি । ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বনধ সমর্থন করি না । কোনও বনধ করি না । পার্টির কেউ মারা গেলেও না ৷ কিন্তু ইস্যুটাকে সমর্থন করি ।''
আরও পড়ুন : Abhishek Banerjee: মোদির থেকে বেশি জনপ্রিয় বলেই মমতাকে রোম যেতে দেয়নি কেন্দ্র : অভিষেক
কৃষি বিল প্রত্যাহারের জন্য কেন্দ্রের কাছে আরও একবার এদিন দাবি করেছেন মমতা । বলেন, ''কেন্দ্রীয় সরকার তিনটি বিল প্রত্যাহার করুক । কালা কানুন মানছি না । দরকার হলে পঞ্জাব, হরিয়ানায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আমি ।'' ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর ভাইরাল ভিডিও তুলে ধরে এদিন মমতা বলেন, 'বিজেপির রাজত্বে কখনও সুবিচার পাওয়া যায় না । ত্রিপুরায় দেখুন । আমার হাতে একটা ভিডিয়ো এসেছে। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, আদালত কী করবে? আমিই তো সব । আমি যা বলব, আদালত তাই করবে। আমি কাউকে মানি না । এই ভিডিয়োটা আমার কাছে আছে। চাইলে দিয়ে দেব । একজন মুখ্যমন্ত্রী এমনটা কীভাবে বলতে পারেন?’' এরপর মমতা জানান, আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করা যায়, কিন্তু বিচারক বা বিচারপতিকে নয় । তাঁর কথায়, ‘'আমিই সব ভেবে নেওয়া, এত ঔদ্ধত্য ভাল নয় ।'’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘'অসমে মানুষের অধিকার খর্ব হলে সেখানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যায় না । কিন্তু বাংলায় কিছু ঘটলেই চলে আসে । নির্লজ্জের দল, হেরে গিয়েও হিউম্যান রাইটস পাঠিয়েছে।'’
পাশাপাশি গুজরাতের উদাহরণ তুলেও তিনি দাবি করলেন, সেখানকার মানুষও আজ ভাল নেই । বাংলার বিজেপি নেতাদের গুন্ডা বলেও দাবি করলেন মমতা । বললেন, "যাদের একটা কান মুলে দিলে পালিয়ে যাবে, তাঁদের কত কথা । সব ডান্সিং ড্রাগন । রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে শুধু উস্কানি নিয়ে হিংসা করে ওরা। জোর করে অশান্তি পাকায় । ওরা ভাবছে এভাবে মানুষকে ধমকাও, চমকাও। কেউ কিছু করতে পারবে না। গ্যাসের দাম এক হাজার থেকে দশ হাজার করে দাও, পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়িয়ে দাও। পিএম কেয়ার্সের নামে টাকা তোলো, সেই টাকার হিসাব কাউকে দেব না। যা ইচ্ছে করে যাও। প্রতিবাদ করার কেউ থাকবে না । এটাই চাইছে বিজেপি ।"