কলকাতা, 2 অগস্ট: মমতা যদি পয়লা নম্বর হন, তিনি দলে দুই নম্বর । তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের কাছে তিনি যুবরাজ । বর্তমানে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকও । কাউকে বলে দিতে হবে না দলে তাঁর গুরুত্ব কতটা । গতকাল নয়া জেলা কমিটির যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতেও তাঁর ছায়া প্রকট । গতকাল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন আগামিকাল মন্ত্রিসভার রদবদল (Cabinet Expansion) করবেন তিনি । সেখানেও কি প্রকট হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়া ? এখনও পর্যন্ত যে নামগুলি নিয়ে জল্পনা ছড়াচ্ছে, তাতে বেশিরভাগই রয়েছেন এমন কয়েকজন যাঁরা সাংগঠনিক স্তরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) ঘনিষ্ট বলেই পরিচিত । আর তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এখন কি মমতার মন্ত্রিসভাতেও দীর্ঘায়িত হচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়া (new cabinet)!
রাজনৈতিক মহলে এমন বক্তব্যের পেছনেও যথেষ্ট কারণ রয়েছে । সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপি থেকে বাবুল সুপ্রিয়কে তৃণমূল কংগ্রেসে নিয়ে এসে চমক দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ছেড়ে যাওয়া আসনে, লড়াইয়ের ক্ষেত্রেও তিনি বাবুলের হয়ে ব্যাট ধরেছিলেন । নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে এলাকার মানুষের কাছে বলেছিলেন, "আগামী পাঁচ বছরের জন্য এই এলাকার উন্নয়নের দায়িত্ব আমি নিচ্ছি ।" সেই অভিষেক ঘনিষ্ঠ বাবুল সুপ্রিয়র নাম এ বার মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণে জল্পনায় রয়েছে ।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিসভা থেকে সংগঠন, পার্থর ধাক্কায় একাধিক রদবদলের সামনে শাসকদল
একই ভাবে জল্পনায় রয়েছে অভিষেকের দুই ঘনিষ্ঠ নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক এবং জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তীর নামও । অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি থাকার সময় থেকেই এই দুই নেতা অভিষেক ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত । খুব স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জোরালো হচ্ছে, নিজে মমতার মন্ত্রিসভার অংশ হবেন না বলে প্রকাশ্যে বললেও ক্রমেই মমতা মন্ত্রিসভাতেও কি বাড়ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়া ?
যদিও রাজ্যের শাসক দল রাজনৈতিক মহলের এই বক্তব্যে মত প্রকাশ করতে নারাজ । দলের অন্যতম মুখপাত্র তাপস রায় স্পষ্টতই বলছেন, "তৃণমূল কংগ্রেসে আমরা সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দল করি । কাজেই আমরা সকলেই দিদির অনুগামী । অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন দলে একটাই মুখ সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । অতএব প্রচার ভিত্তিহীন । যে কোনও মন্ত্রিসভা নতুন এবং পুরনোদের সংমিশ্রণে গঠিত হয় । দলীয় সংগঠনে যাঁরা ভালো কাজ করছেন তাঁদের আগামী দিনে বড় জায়গায় সুযোগ দেওয়া হবে এটাই তো নিয়ম । এ ক্ষেত্রে এ সব কথা বলে বাস্তবে যাঁদের মন্ত্রী করা হচ্ছে, তাঁদের যোগ্যতাকে ছোট করা হচ্ছে । আমরা সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে কাজ করছি । সেখান থেকে এ ধরনের আলোচনার কোনও গুরুত্ব নেই ।"