কলকাতা, 30 ডিসেম্বর: একদিকে অবৈধ কয়লা খাদান, বালি খাদান এবং গোরু পাচারের কোটি কোটি টাকার জোগানের পথ বা মানি ট্রেইল খুঁজে পেতে সক্রিয় সিবিআই, ইডি-র মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। অপরদিকে এই রাজ্যে স্পঞ্জ আয়রনের অবৈধ কারবারের বিরুদ্ধে সক্রিয় হল আয়কর বিভাগ ।
মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দফায় দফায় পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল শিল্পাঞ্চল এবং কলকাতার কয়েকটি অফিস এবং আবাসনে অভিযান চালান আয়কর বিভাগের কর্তারা। সূত্রের খবর, অভিযান চালিয়ে কিছু চমকে দেওয়ার মতো নথি হাতে এসেছে তাদের হাতে। এই নথি আসানসোল এবং বাঁকুড়াতে অবস্থিত কয়েকটি অবৈধ স্পঞ্জ আয়রন সংস্থার অর্থ জোগানের পথ বা মানি ট্রেইল-এর। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আয়কর বিভাগের এক কর্তার মতে, দেখা যাচ্ছে যে গত কয়েক বছর ধরে এই সমস্ত অবৈধ স্পঞ্জ আয়রন সংস্থার আনুমানিক 30 কোটি টাকা বিভিন্ন পথ ঘুরে আসত দক্ষিণ কলকাতায় অবস্থিত একটি নির্দিষ্ট ঠিকানায়।
আয়কর বিভাগের এক কর্তা বলেন,"আসানসোল বা বাঁকুড়া থেকে আলাদা আলাদা গাড়িতে এই টাকাগুলি প্রথমে আসত দুর্গাপুরে । তারপর দুর্গাপুর থেকে সমস্ত টাকা একটা গাড়ি করে আসত দক্ষিণ কলকাতায় অবস্থিত সেই নির্দিষ্ট ঠিকানায়। এর মধ্যে আবার অনুমানিক প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা করে যেত একটি নির্দিষ্ট থানাতে। এই বিপুল পরিমাণ টাকা কি সেই অবৈধ স্পঞ্জ আয়রন ব্যবসার ভাগ নাকি এই অবৈধ ব্যবসা যাতে নির্বিঘ্নে চালানো যায় তার জন্য কমিশন, সেটাই খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি আমরা ।"
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে ব্রিটেন থেকে ফেরা 565 জনের খোঁজ নেই, চিন্তায় প্রশাসন
বিভাগীয় কর্তাদের মতে, অনুসন্ধান যত গভীরে যাবে রাজ্যের অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের ঘনিষ্ট আত্মীয়দের নাম উঠে আসার সম্ভাবনা আছে। আয়কর বিভাগের সন্দেহ যে সমস্ত কয়লা মাফিয়াদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই বা ইডির মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি, তাদের কারও কারও যোগাযোগ থাকতে পারে এই সমস্ত অবৈধ স্পঞ্জ আয়রনের অবৈধ কারবারিদের সঙ্গে। পলাতক কয়লা মাফিয়া লালার বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত কিছু নথিতেই এই যোগাযোগের ইঙ্গিত মিলেছিল। জানা যায় যে বেশ কিছু স্পঞ্জ আয়রনের অবৈধ কারবারে লালার টাকা খাটছিল।
আয়কর বিভাগের এক কর্তা বলেন, "আসলে শুধু অবৈধ কয়লার ব্যবসায় টাকা না ঢেলে বিভিন্ন রকমের ব্যবসায় টাকা ঢালত লালা। এবং এই অবৈধ ব্যবসার সম্প্রসারণের জন্য তাকে বিভিন্ন মহলে গুনাগারও দিতে হত ।"
আরও পড়ুন: নাগাল্যান্ডে আফস্পার মেয়াদ আরও 6 মাস বাড়াল কেন্দ্র
ইতিমধ্যেই সিবিআই তিনবার সমন পাঠিয়েছে লালাকে। কিন্তু প্রতিবারই সেই সমন এবং হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছে সে । কেন্দ্রীয় সংস্থার খাতায় লালা এখন ফেরার। লালা এই মুহূর্তে দেশে কোথায় আছে, সেই নিয়ে অন্ধকারে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা আধিকারিকরা।