দিল্লি, 5 এপ্রিল : লোকসভা নির্বাচনের আগে কলকাতা পুলিশ কমিশনার-সহ চার IPS অফিসারকে সরিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। ওই চার অফিসারকে নির্বাচনের কোনও দায়িত্ব দেওয়া যাবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা পুলিশ কমিশনার ছিলেন অনুজ শর্মা। তাঁর জায়গায় আনা হয়েছে রাজেশ কুমারকে। তিনি আগে ছিলেন ADG CID। 19 ফেব্রুয়ারি পুলিশ কমিশনার হন অনুজ। তিনি আগে ADG আইনশৃঙ্খলা ছিলেন। রাজীব কুমারকে সরিয়ে দেওয়ার পর তাঁর জায়গায় আসেন অনুজ শর্মা। এর আগে কলকাতা পুলিশ কমিশনার থাকাকালীন রাজীব কুমারের বাড়িতে হানা দেয় CBI। চিটফান্ড সংক্রান্ত মামলায় বারবার তলব সত্ত্বেও দেখা করতে যাননি রাজীব। তাই, CBI-র টিম রাজীবের বাড়ি যায়। সেখানে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বিবাদে জড়ায় তারা। এরপর ময়দানে নামেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। 3 ফেব্রুয়ারি ধরনায় বসেন তিনি। একাধিক মহলের বক্তব্য, সেসময় ধরনা মঞ্চে দেখা যায় অনুজ শর্মা ও জ্ঞানবন্ত সিংকেও। জ্ঞানবন্ত বিধাননগর পুলিশ কমিশনার। তাঁদের উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। BJP প্রশ্ন তোলে, কীভাবে পুলিশ অফিসাররা মুখ্যমন্ত্রীর ধরনা মঞ্চে গেলেন ? মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য জানিয়ে দেন, তাঁরা ধরনা মঞ্চে ছিলেন না। নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করার জন্যই আশপাশে ছিলেন।
গতকাল নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, জ্ঞানবন্ত সিংকে সরিয়ে বিধাননগর পুলিশ কমিশনার করা হয়েছে নটরাজন রমেশ বাবুকে।
এবিষয়ে BJP রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "কয়েকজন পুলিশ অফিসারকে নিয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রশ্ন ছিল। অনেককেই মমতা ব্যানার্জির ধরনা মঞ্চে দেখা গেছিল। এমনকী, বিমানবন্দরের ঘটনার সময়তেও তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ কাস্টমস অফিসারদের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়েছেন।"
এদিকে, আভান্নু রবীন্দ্রনাথকে বিধাননগরের DC(এয়ারপোর্ট ডিভিশন) থেকে সরিয়ে বীরভূমের পুলিশ সুপার হিসেবে পাঠানো হয়েছে। তিনি শ্যাম সিংয়ের জায়গায় এলেন।
বেশ কয়েকবছর ধরে রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত বীরভূম। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় একাধিকবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে BJP ও তৃণমূল কর্মীরা। বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, "পুলিশকে বোমা মারুন।"
ডায়মন্ডহারবারের পুলিশ সুপার সেলভা মুরুগানকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর জায়গায় DC, KAP, 3rd ব্যাটেলিয়ন থেকে নিয়ে আসা হয়েছে শ্রীহরি পান্ডেকে। উল্লেখ্য, ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক ব্যানার্জি।
গতকাল নির্বাচন কমিশনার বলেন, "কমিশনের নির্দেশিকা দ্রুততার সাথে কার্যকর করতে হবে। উপরিউক্ত অফিসারদের নতুন পদে যোগদানের রিপোর্ট 24 ঘণ্টার মধ্যে পাঠাতে হবে।"