কলকাতা, 7 জুন : আলিমুদ্দিনের পর এবার অসন্তোষের আগুন রাজ্য কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনেও ৷ দিল্লি থেকে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, রাস্তায় নেমে আন্দোলন করার ৷ দিল্লির নির্দেশ পেয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী জেলা সভাপতিদের সঙ্গে তড়িঘড়ি বৈঠকও করেন ৷ কিন্তু তিনদিনের সেই বৈঠকের আবহ মোটেই ঠান্ডা ছিল না ৷ অন্তত এমনটাই দাবি সংশ্লিষ্ট সূত্রের ৷
পশ্চিমবঙ্গে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রাপ্তি শূন্য ৷ ভোটে ভরাডুবির পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কলকাতামুখো হননি ৷ হাইকম্যান্ড নিযুক্ত পর্যবেক্ষকরাও কার্যত উবে গিয়েছেন ৷ এই অবস্থায় 9 জুন সর্বজনীন টিকাকরণ ইস্যুতে জেলাশাসকদের দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস ৷
এই প্রেক্ষাপটে কর্মসূচির সিদ্ধান্ত হলেও বিধানসভা ভোটের পর প্রদেশ সভাপতির সঙ্গে প্রথম বৈঠকে কংগ্রেসের জেলা সভাপতিরা ভোটে বিপর্যয়ের কারণ নিয়ে সরব হন ৷ এমনকি তাঁরা নাকি কটু কথা শোনাতেও ছাড়েননি ! বিশেষ করে জোট নিয়ে তাঁরা তাঁদের ক্ষোভ উগরে দেন ৷
কংগ্রেসের জেলা সভাপতিদের অভিযোগ ছিল, একুশের বিধানসভা ভোটে বাম, কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের জোট হলেও তার কোনও সারবত্তা ছিল না ৷ কার্যত, এটি লোক দেখানো জোটে পরিণত হয়েছিল ৷ কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের আসন বণ্টন হলেও অন্যান্য় বাম শরিক এবং আইএসএফের সঙ্গে সেই বণ্টনের ছবি পরিষ্কার ছিল না ৷ এর ফলে মুখে জোটের কথা বলা হলেও আদতে বহু আসনে তা আত্মঘাতী গোলের পরিস্থিতি তৈরি করেছিল বলে জেলার নেতারা অভিযোগ করেছেন। যার ফায়দা তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷
আরও পড়ুন : কাউকে ধরব কাউকে ছাড়ব যেন না হয় : অধীর
বিজেপিকে রোখার প্রশ্নে দোদুল্যমান ভোটাররা জোটের বদলে তৃণমূল কংগ্রেসের উপর আস্থা রেখেছেন ৷ বিশেষ করে সংখ্যালঘু ভোটাররা বেশি প্রভাবিত হয়েছেন ৷ মালদা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুরের ভোটে এর প্রভাব পড়েছে বলে মত জেলার কংগ্রেস নেতাদের ৷
ইতিমধ্যে দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী না দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নিয়েছেন, তা নিয়েও মতান্তর রয়েছে দলের অন্দরে ৷ কারণ, ভবানীপুরকে বাদ দিয়ে বকেয়া বিধানসভা আসনগুলিতে এবং উপনির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত ফের আত্মঘাতী হতে পারে বলে মনে করছেন কংগ্রেসের নিচুতলার কর্মীরা ৷