কলকাতা, 10 ফেব্রুয়ারি : আলমারির তালা ভাঙা হয়নি । ঘরে অপরিচিত কেউ আসেনি । তার পরেও খোয়া গিয়েছিল 50 লাখের সোনা, রূপো, হিরের গয়না । চুরি যায় লক্ষাধিক টাকা । এটা কি করে সম্ভব ! মাথায় হাত পড়েছিল হিন্দুস্থান পার্কের অভিজাত আগরওয়াল পরিবারের । ঘটনা গত 6 ফেব্রুয়ারির । সেই ঘটনার তদন্তে নেমে মুর্শিদাবাদের একটি বাড়ির মেঝে খুঁড়ে চুরি যাওয়া গয়না উদ্ধার করল পুলিশ । ওই বাড়ির চাল থেকে উদ্ধার হয়েছে টাকা । ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে 3 জনকে ।
ইদানিং গৃহস্থ বাড়িতে গয়না চুরির ঘটনায় প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে হাত রয়েছে পরিচারিকার । গল্পটা প্রতি ক্ষেত্রেই প্রায় একই । গয়না হাতিয়ে গা-ঢাকা দেয় পরিচারিকা । গরিয়াহাট থানায় অভিযোগ নেওয়ার সময়েই জানতে চায়, সব পরিচারিকা, পরিচারক, ড্রাইভাররা আছেন তো? কেউ চাকরি ছাড়েননি তো? অভিযোগকারী শিবাঙ্গি আগরওয়াল জানান, সবাই আছেন । তখন চুরির বিবরণ শুনে কিছুটা হলেও কপালে ভাঁজ পড়েছিল পুলিশের । তবে একটা বিষয়ে তদন্তকারীরা নিশ্চিত ছিলেন, চুরিতে যুক্ত আছে পরিবারেরই কেউ । কারণ বাড়িতে অপরিচিত কেউ ঢোকেনি । ঘরের কোনও দরজার তালা ভাঙা হয়নি । আলমারির তালাও অটুট ।
গড়িয়াহাট থানার পুলিশ এবং লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের অফিসাররা এই ঘটনার তদন্তে নেমে পরিবারের প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন । জানা যায় পরিচারিকা অঞ্জলি দাস ঘটনার কয়েকদিন আগে মুর্শিদাবাদে নিজের বাড়িতে গিয়েছিল । ঘটনার দিন দুপুরবেলা গ্রামের বাড়ি থেকে দু'জন তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল । তাদের একজন অঞ্জলির মামা । অঞ্জলিকে টের না পেতে দিয়েই তার মুর্শিদাবাদের ঠিকানায় হানা দেয় পুলিশ । জানা যায় অঞ্জলির কোনও মামা সেদিন কলকাতায় যায়নি । গিয়েছিল অঞ্জলির বর্তমান স্বামী শেখ ইমরান এবং তার আগের পক্ষের ছেলে লাল্টু শেখ । লাল্টুকে লালগোলার পীরতলা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় বাড়ির মেঝের ভিতর গর্ত করে লুকিয়ে রাখা হয়েছে ওই সোনা । সেই মেঝে খুঁড়ে বেরোয় গয়নার বাক্স । গোয়ালের চাল থেকে উদ্ধার হয় 1 লাখ টাকা । শেক ইমরানকে মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় । এরই মাঝে কলকাতায় অঞ্চলিকে গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারীরা ।