কলকাতা, 16 মে: লকডাউনের মধ্যে ছড়ানো হচ্ছে দেদার গুজব। কলকাতা তো বটেই গোটা রাজ্যেই ছড়ানো হচ্ছে নানা ধরনের ভুল তথ্য ও সংবাদ। গত 25 মার্চ থেকেই গুজব ছড়ানোর অপরাধে গ্রেপ্তারি শুরু করে কলকাতা পুলিশ। একইভাবে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ CID-র সাইবার সেলও ব্যস্ত গুজব রুখতে।এক্ষেত্রে গোয়েন্দারা চিহ্নিত করছেন, মূলত কারা গুজব ছড়াচ্ছে। রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও অবধি গুজব ছড়ানোর অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে 182 জনকে।
এক বৃদ্ধ দুদিন ধরে খাবার পাচ্ছেন না। পাচ্ছেন না রেশনও। লকডাউনের শুরুর দিকে এমনই একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সোশাল মিডিয়ায়। এমনকী রাজ্য BJP-র ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও সেটি শেয়ার করা হয়। যেখানে দেখা যায়, ওই বৃদ্ধ ব্যক্তি রেশন সামগ্রী পাচ্ছেন না বলে কাঁপা গলায় অভিযোগ করছেন। ওই ভিডিয়ো নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য প্রশাসনের অন্দরমহলে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, যে ব্যক্তিকে ওই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে তিনি একজন যাত্রাশিল্পী। বসিরহাটের বেগমপুরের বাসিন্দা। নাম মোবারক মণ্ডল। যাত্রা শিল্পী হলেও পেশায় ভ্যান চালক।
ভ্যান চালিয়ে বাড়ি ফেরার সময় কিছু যুবক তাঁর রাস্তা আটকে ওই অভিনয় করতে বলে। তিনি সেটাই করেন। পুলিশের কাছে অন্তত এমনটাই দাবি করেন অভিযুক্ত। মোবারকের মণ্ডলের সেই অভিনয়ই ছড়িয়ে দেওয়া হয় সোশাল মিডিয়ায়। ঘটনার পর মোবারক মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা পুলিশ। পাশাপাশি কারা ওই ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ছডিয়ে দিয়েছে তা খতিয়ে দেখতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়। অন্য একটি ভুয়ো অডিও, যেখানে এক চিকিৎসক ও এক ব্যাঙ্ক কর্তার কথোপকথন শোনা গিয়েছে। চিকিৎসক বলেন, "রাজ্যের প্রায় এক লাখ মানুষ কোরোনা আক্রান্ত। সরকার সব তথ্য চেপে দেওয়ার চেষ্টা করছে।" এছাড়াও মাঝে রাজ্য BJP-র একটি টুইটার অ্যাকাউন্টে লেখা হয়, কোটা থেকে 3 টি বাসে আনা হচ্ছে 3 হাজার পড়ুয়াকে। যদিও পরে জানা যায় সেটি ভুয়ো পোস্ট। রাজনৈতিক দলটির টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে তা করা হয়নি। দাঁতনের কোয়ারানটিন সেন্টারের দুরবস্থা নিয়েও ভুয়ো পোস্ট ছড়ায় সোশাল মিডিয়ায়। প্রতি ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। প্রয়োজনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গুজব ছড়ানোর অপরাধে এখনও অবধি গ্রেপ্তার করা হয়েছে 182 জনকে।
CID সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুয়ো পোষ্টের জন্য 240 টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। 464 জনকে সতর্ক করা হয়েছে ভুয়ো খবর ছড়ানোর সূত্রে।