আসানসোল, 15 মার্চ: ফের দিন ফিরছে সিনেমা হলের। এতদিন পর্যন্ত যে সমস্ত দর্শকরা মাল্টিপ্লেক্সে যেতেন, এখন তাদেরই একটা বড় অংশ আবার সিনেমা হলমুখী হচ্ছেন আসানসোলে । ফলে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষতির মুখে চলা সিনেমা হল শিল্প আবার স্বমহিমায় ফিরতে চলেছে বলে আশাবাদী সিনেমা হলের মালিকরা।
বাঙালিদের নস্টালজিয়া ছিল সিনেমা হল। আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে মানুষদের স্মৃতির মণিকোঠায় প্রাচীন সিনেমা হলগুলি নিয়ে কতই না আবেগ । কিন্তু থাবা বসিয়ে ছিল মাল্টিপ্লেক্স । মাল্টিপ্লেক্সে যাওয়ার হুজুগে সিনেমা হল থেকে মুখ ফিরিয়ে ছিল দর্শকরা । ক্ষতির মুখে পড়ে ছিল আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের প্রচুর পুরনো সিনেমা হল । বন্ধ হয়ে গিয়েছে আসানসোলের চিত্রা সিনেমা হল । বন্ধ হয়ে যাওয়া সেই চিত্রা সিনেমা হল নিয়ে আসানসোলের মানুষের মনে রয়েছে অনেক আবেগ । একই চিত্র ঘটেছে দুর্গাপুরেও । কিন্তু হঠাৎ হাওয়া বদল । দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে ফের দেখা যাচ্ছে সিনেমা হলমুখী হচ্ছেন দর্শকরা।
দুর্গাপুর সিনেমা হল প্রাচীন সিনেমা হল । দুর্গাপুরবাসীদের কাছে প্রচলিত নাম DC। এখন থেকে দেখা যাচ্ছে সেই DC সিনেমা হলে মানুষজনেরা লাইন দিয়ে টিকিট কাটছেন । দলে দলে লোকেরা সিনেমা দেখতে আসছেন । কিন্তু কেন এই চিত্রের বদল হচ্ছে? এক দর্শক সুভাষ কর্মকার জানালেন "মাল্টিপ্লেক্সের টিকিটের যা দাম, তার তুলনায় অনেকটাই কম সিনেমা হলের টিকিটের দাম । অথচ পরিষেবার ক্ষেত্রে সিনেমা হল আজ কোনও অংশেই কম নয় । উন্নতমানের সাউন্ড এবং ছবি দেখা যায় সিনেমা হলে বসে । তাছাড়া মাল্টিপ্লেক্সে খাবারের দাম অত্যন্ত বেশি । এখানে সাধ্যের মধ্যে খাবার পাওয়া যায় । তবু কিছু অংশে পিছিয়ে রয়েছে সিনেমা হলগুলি । কিন্তু মধ্যবিত্তদের মাল্টিপ্লেক্সে টাকা খরচা করে সিনেমা দেখতে যাওয়ার মনোবৃত্তি আর নেই।" দুর্গাপুর সিনেমা হলের মালিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় জানালেন "পরিকাঠামোগত ভাবে আমরা সিনেমা হলের অনেক উন্নতি সাধন করেছি। লাইট, সাউন্ড, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গোটা প্রেক্ষাগৃহ তার সঙ্গে সাধ্যের মধ্যে দর্শকদের জন্য খাবার । সবকিছু মিলে মাল্টিপ্লেক্সের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে আজকের সিনেমা হল । এখন কিন্তু সেখান থেকে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটেছে। আগামী দিনে আরও প্রচুর মানুষ সিনেমা হলমুখী হবে বলে আশা করছি।"