কলকাতা, 1 জানুয়ারি : ইকুইটি মার্কেটে রিটেল বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় 2020 সালে মিউচুয়াল ফান্ডের শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে। এই ক্ষেত্রের অ্যাসেট আন্ডার ম্যানেজমেন্ট বা এইউএম বৃদ্ধি পেয়েছে 13 শতাংশ। 2020 সালের নভেম্বরের শেষে এর পরিমাণ ছিল 30 লক্ষ কোটি টাকা। আর 2019 সালের ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত এই পরিমাণ ছিল 26.54 লক্ষ কোটি টাকা। এই পরিস্থিতিতে সেবি 2021 সালে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের উপর নতুন কিছু নিয়ম আরোপ করতে চলেছে। সেগুলি কী কী, তা উল্লেখ করা হল -
1. মাল্টি ক্যাপ ইকুইটি মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে পোর্টফোলিও দেওয়ার নিয়মে পরিবর্তন
ইকুইটি ও ইকুইটি সংক্রান্ত বিনিয়োগে অ্যাসেট অ্যালোকেশনের ক্ষেত্রে 75 শতাংশ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। আগে ছিল 65 শতাংশ। এছাড়া মাল্টি ক্যাপ তহবিল থেকে 25 শতাংশ করে লার্জ-ক্যাপ, মিড-ক্যাপ ও স্মল-ক্যাপে বিনিয়োগ করতে হবে। অ্যাসোসিয়েশন অফ মিউচুয়াল ফান্ড ইন ইন্ডিয়া নতুন স্টক ঘোষণা করার এক মাসের মধ্যে নতুন নিয়ম মেনে সবটা জানাতে হবে বলে সেবি সার্কুলার দিয়েছিল। মাল্টি-ক্যাপ তহবিলগুলি নিজেদের পোর্টফোলিও বদল করতে না চায়, তাহলে তারা বর্তমান স্কিমগুলিকে ফ্লেক্সি-ক্যাপ ফান্ডসে বদল করে নিতে পারবেন।
আরও পড়ুন : GDP-র পুনরুথ্থান হলেও অর্থনীতিতে মন্দা অব্যাহত
2. এনএভি হিসেবে বদল
বিনিয়োগের পরিমাণ বা সময়সীমা যখন অনির্দিষ্ট হবে, তখন মিউচুয়াল ফান্ডের স্কিমে এনএভি দেওয়া যাবে। যা ফান্ড থাকবে তার উপর ভিত্তি করেই সেই দিনের ক্লোজিং এনএভি প্রয়োগ করা হবে। বর্তমান নিয়মে 2 লক্ষ টাকা কম চেক দিয়ে মিউচুয়াল ফান্ড কিনলে ওই দিনেই এনএভি পাওয়া যায়। আর অর্থের পরিমাণ 2 লক্ষের বেশি হলে যেদিন চেক ক্যাশ হচ্ছে ওইদিনের হিসেবে এনএভি পাওয়া যায়। নতুন নিয়মে ডিজিটাল পেমেন্ট বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
3. নতুন রিস্ক-ও-মিটার ব্যবস্থা
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ঝুঁকি সংক্রান্ত নিয়মে আজ থেকে বদল করল সেবি। এটাকে 6টি বিভাগে রাখা হয়েছে। 1. কম ঝুঁকি, 2. কম থেকে মাঝারি ঝুঁকি, 3. মাঝারি ঝুঁকি, 4. মাঝারি থেকে বেশি ঝুঁকি, 5. বেশি ঝুঁকি, 6. খুব বেশি ঝুঁকি। যে সংস্থাগুলি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট করেন, সেগুলিকে প্রতিমাসে এই ঝুঁকির মাত্রা ঠিক করতে হবে। আর তা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মাস শেষ হওয়ার 10 দিন আগে জানিয়ে দিতে হবে। মিউচুয়াল ফান্ডকে ঝুঁকির মাত্রা ও বছরে তা কতবার বদলেছে, তা জানাতে প্রতি বছরের 31 মার্চ। ই-মেল ও এসএমএসের মাধ্যমে ক্রেতাদেরও তা জানাতে হবে।
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ক ঋণের অনুপাতে ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে পশ্চিমবঙ্গ, সবার উপরে অন্ধ্রপ্রদেশ
4. এক স্কিম থেকে অন্য স্কিমে ট্রান্সফার
আজ থেকে আর এক স্কিম থেকে অন্য স্কিমে ট্রান্সফার করা যাবে না। গত বছরের অক্টোবরেই এই কথা জানিয়েছিল সেবি। তহবিল বাড়ানোর জন্য লিকুইডিটি বৃদ্ধির চেষ্টা করার পরে এবং তহবিলের মাধ্যমে নিঃশেষিত হওয়ার পরই এই ট্রান্সফার করা যেতে পারে। বর্তমান নিয়মে বাজার মূল্যের হিসেবে এবং প্রকল্পের প্রাপ্তির উপর নির্ভর করে এই ট্রান্সফার করা যেত। শীঘ্রই শেষ হবে এমন স্কিমের ক্ষেত্রে, কেবলমাত্র নতুন তহবিল অফারের (এনএফও) অনুসারে বরাদ্দ হওয়ার তিনটি ব্যবসায়িক দিনের মধ্যে এই ট্রান্সফারের অনুমতি দেওয়া হবে।
5. ডিভিডেন্টের নতুন নাম
বিনিয়োগকারীদের মূলধন যে ডিভিডেন্টে বদল করা যাবে, তা নিয়ে স্পষ্ট জানাতে হবে মিউচুয়াল ফান্ড সংস্থাগুলিকে। সেটা বর্তমান ও আগামীতে আসবে, এমন দুই ফান্ডের জন্যই প্রয়োজনীয়। সেবি এই নির্দেশ দিয়েছে। এর জন্যই ডিভিডেন্টের নাম পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে। এটার নতুন নাম হবে, পেআউট অফ ইনকাম ডিস্ট্রিবিউসন কাম ক্যাপিটাল উইথড্র অপশন। ডিভিডেন্টে পুর্নবিনিয়োগের ক্ষেত্রে এর নতুন নাম হবে, রিইনভেস্টমেন্ট অফ ইনকাম ডিস্ট্রিবিউসন কাম ক্যাপিটাল উইথড্র অপশন। আর ডিভিডেন্ট হাতবদল করার ক্ষেত্রে নতুন নাম হবে, ট্রান্সফার অফ ইনকাম ডিস্ট্রিবিউসন কাম ক্যাপিটাল উইথড্র অপশন।