কলকাতা, 27 জুন : কোরোনা চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালগুলি অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে, এই অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্য সরকারের তরফে শুক্রবার একটি নির্দেশিকা কোভিড -19 পরীক্ষা ও চিকিৎসার খরচ হিসেবে কত টাকা নেওয়া যাবে, তা জানিয়ে দেওয়া হল। বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনগুলি রাজ্য সরকারের এই নির্দেশিকা মেনে নিয়েছে।
শুক্রবার রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে জারি করা এক নির্দেশিকায় বলা হয়, বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল এবং ল্যাবরেটরিতে কোভিড-19 পরীক্ষা, চিকিৎসকদের ফি এবং PPE কিট সহ চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় যে ব্যবস্থাগুলি নেওয়া হচ্ছে, তার জন্য অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
কোরোনা চিকিৎসায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে কত টাকা নেওয়া যাবে, তা এই নির্দেশে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে । এই নির্দেশ অনুযায়ী বেসরকারি ক্ষেত্রে কোভিড-19 টেস্টের জন্য 2250 টাকা, হাসপাতালে ভরতি রোগীর চিকিৎসার সময় চিকিৎসকের ফি প্রতিদিন 1000 টাকা এবং PPE কিট-সহ চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় অন্য যে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তার জন্য প্রতিদিন খরচ হিসাবে 1000 টাকা নেওয়া যাবে। এই নির্দেশ ভঙ্গ করা হলে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয়।
সরকারের এই নির্দেশিকা সম্পর্কে বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটালস অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (AHEI)-র প্রেসিডেন্ট রূপক বড়ুয়া বলেন, "রাজ্য সরকার যেটা বলেছে, সেটা আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। রাজ্য সরকারের সঙ্গে একত্রিত হয়ে কোভিড -19 এর বিরুদ্ধে লড়াই চালানো আমাদের দায়িত্ব। একসঙ্গে কোভিড-19-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা পাশে রয়েছি এবং ভবিষ্যতেও একসঙ্গে থাকব।"
অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, " চিকিৎসার অতিরিক্ত খরচ সম্বন্ধে যেটা বলা হচ্ছে, তা ভুল। আমাদের কোনও হাসপাতালই অতিরিক্ত কোনও টাকা নেয় না। যা খরচ হয়, তার উপর বিল তৈরি করা হয়। কোরোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য কোভিড-19 পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার জন্য PPE কিট সহ অন্যান্য ব্যবস্থার জন্য একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা নেওয়া হচ্ছে । আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা দেওয়া প্রাথমিক চিন্তার বিষয়। চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিকেল স্টাফ থেকে শুরু করে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ স্টাফ, হাউসকিপিং, সিকিউরিটির সঙ্গে যুক্ত সকলকে সুরক্ষা দিতে হবে। এর জন্য যে খরচ হয়, তার কিছু অংশ রোগীদের বহন করতে হয়।"
রূপক বড়ুয়া আরও বলেন, " আগে যে দামে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি কেনা হত, তার দাম বর্তমানে আরও বেড়ে গিয়েছে। আনুষঙ্গিক এই খরচ কীভাবে আরও কমাতে পারি, সেই বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করা হবে ।" তিনি বলেন, " তবে PPE কিটের জন্য এপ্রিল মাসে যে টাকা নেওয়া হত, তার তুলনায় বর্তমানে অনেক কম টাকা নেওয়া হয়। আগে যে দামে কেনা হত, বর্তমানে তার থেকে কিছুটা কম দামে কিনতে পারছি বলে এর সুবিধা আমরা রোগীদের দিচ্ছি। এটাই আমাদের লক্ষ্য, রোগীদের কাছ থেকে চিকিৎসা বাবদ যথাসম্ভব কম খরচ নেওয়া যায় ।"
AHEI-র প্রেসিডেন্ট বলেন, "সরকার এখন যে নির্দেশিকা দিয়েছে, অবশ্যই তা মেনে চলা হবে। তবে ভবিষ্যতে খরচের উপর ভিত্তি করে টাকার অঙ্কে যদি কিছু পরিবর্তন করা যায়, সেই বিষয়ে সরকারের কাছে আবেদন করা হবে। "