আলিপুরদুয়ার, 22 এপ্রিল : পর্যটকদের জন্য সুখবর । ভোটপর্ব মিটতেই ডুয়ার্সের জঙ্গলে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে এক শৃঙ্গ গন্ডারদের আরও একটি চারণভূমি । আলিপুরদুয়ার জেলার পাতলাখাওয়ায় রসমতী জঙ্গলে রয়েছে এই চারণভূমি । প্রায় দশ বছর আগে বামজমানায় এই প্রকল্প শুরু করেছিলেন তৎকালীন বনমন্ত্রী যোগেশ চন্দ্র বর্মণ ।
বনবিভাগ জানিয়েছে, গন্ডারদের এই নতুন চারণভূমি খোলার পেছনে দুটি উদ্দেশ্য রয়েছে । প্রথমত, রসমতীর জঙ্গলে কোচবিহারের রাজারা একদা মৃগয়া করতেন । সে সময়ে এই জঙ্গলে বাঘ, হাতি, গন্ডার সবই ছিল । পরবর্তীতে চোরাশিকার ও কাঠ মাফিয়াদের দাপটে একসময়ে কার্যত ধু ধু মাঠে পরিণত হয়েছিল কোচরাজাদের ওই মৃগয়াক্ষেত্র । সেই মৃগয়ার স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখা বনবিভাগের উদ্দেশ্য । দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হল জলদাপাড়া এবং গরুমারা জাতীয় উদ্যানের উপর থেকে পর্যটকদের অতিরিক্ত চাপ কমানো ।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপে জলদাপাড়া থেকে পাঁচটি গন্ডার এনে ছাড়া হবে এই জঙ্গলে । বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, "জলদাপাড়া থেকে দুটি পুরুষ ও তিনটি মাদি গন্ডার রসমতিতে ছাড়া হবে। দিল্লির অনুমোদন আগেই চলে এসেছে । এবার আমাদের কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। যে গন্ডারগুলিকে ছাড়া হবে সেগুলিকে চিহ্নিত করে ডাক্তারি পরীক্ষার ব্যাপার রয়েছে ।"
পাতলাখাওয়ার রসমতি জঙ্গলে ৭০ হেক্টর জমিতে লাগানো হয়েছে গন্ডারের পছন্দের পুরুন্ডি , চেপটি ঢাড্ডা , হোগলা ও নল ঘাস। এছাড়া গন্ডারের বসবাসের জন্য কর্দমাক্ত জলাভূমি প্রয়োজন । পাতলা খাওয়া জঙ্গলের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে তোর্সা নদী। জঙ্গলের ভেতর রয়েছে ৭ হেক্টর জমির উপর রসমতি ঝিল । এছাড়া রয়েছে কয়েকটি পুকুর। ওই সব জলাভূমিতে সারাবছর জল থাকে ।বনদপ্তরের দাবি এত ভালো তৃণভূমি জলদাপাড়াতেও নেই।
বনমন্ত্রী জানান "পাতলাখাওয়া জঙ্গলকে ঘিরে গড়ে উঠবে পর্যটনকেন্দ্র। এলাকার আর্থিক উন্নতি হবে। প্রচুর ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থান হবে।"