কলকাতা, 1 ফেব্রুয়ারি : জলযন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে খাল সংস্কারের তোড়জোড় শুরু করেছে রাজ্যের সেচ দফতর । তবে একাজে প্রধান বাধা বেআইনি নির্মাণ । বাম আমলে খালের ধারে সেচ দফতরের জমি দখল করে অবৈধ নির্মাণ হয়েছে, অভিযোগ করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (KMC Mayor Firhad Hakim blames Left front Government over Canal draining) ।
সোমবার শহরের বিভিন্ন খাল সংস্কার নিয়ে কলকাতা পৌরনগিম, নিকাশি বিভাগ, কেআইআইপি ও সেচ দফতরের সঙ্গে নিয়ে একটি বৈঠক করেন মেয়র । উপস্থিত ছিলেন নিকাশি বিভাগের মেয়র পারিষদ সদস্য তারক সিং ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকেরা । এই বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এই বাম আমলে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে মন্তব্য করেন ।
গত বছর অল্প বা ভারী বৃষ্টিতে দীর্ঘসময় ধরে জলের তলায় থেকেছে মহানগরের রাস্তাঘাট থেকে অলিগলি । জমা জলের যন্ত্রণা থেকে নাগরিকদের মুক্তি দিতে না পারায় রাজ্যের সেচ দফতরকে কাঠগড়ায় তুলে নাগরিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন তৎকালীন পৌরপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিম । তিনি দ্রুত খাল সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছিলেন । গত নভেম্বর থেকে সেচ দফতরের সঙ্গে চিঠি আদান-প্রদান চলেছে ।
আরও পড়ুন : Kmc Firhad Hakim: শহরের জল জমা রুখতে সেচমন্ত্রীকে চিঠি ফিরহাদ হাকিমের
পৌরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে কলকাতায় যতগুলি খাল রয়েছে, তার মধ্যে মাত্র একটি খাল থেকে পলি উত্তোলনের কাজ শুরু করা সম্ভব হয়েছে । বাকি কয়েকটির প্রক্রিয়া চলছে । অনেক খালের ক্ষেত্রে টেন্ডার হওয়া এখনও বাকি । এই বিষয়ে ফিরহাদ হাকিম সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানান, মে-জুনে বর্ষা আসার আগে কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে । অর্থনৈতিক সমস্যা হলে তিনি উদ্যোগ নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন । অর্থ দফতর থেকে এই পলি উত্তোলনের কাজে যাতে টাকা বরাদ্দ করা হয়, সে ব্যবস্থা করবেন ফিরহাদ হাকিম ।
মেয়র জানান, 26টি খালে পলি তুলে রাখার জায়গা না পাওয়াতে সংস্কারের কাজ এগোনো যাচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে বাম সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, “খালের পাড় ধরে থাকা সেচের জমি বাম আমলে ব্যাপকভাবে জবরদখল হয়েছে । সেখানে বেআইনিভাবে দোতলা, তিনতলা বাড়ি উঠেছে । তাই পলি উত্তোলন করে ফেলার কোনও জায়গা নেই । এখনও বেশ কিছু খালের ধারে নির্মাণ কাজ চলছে ।” এবিষয়ে তিনি পুলিশের এগিয়ে আসার কথা জানান । মেয়র বলেন, “পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ নিয়ে আটকাতে হবে । পুলিশের কাজ করা কলকাতা পৌরনিগমের দায়িত্ব নয় । পৌরনিগম নাগরিকদের পুর পরিষেবা দেবে ।”
পাশাপাশি তিনি নিকাশি কাজের জন্য ইন্টিগ্রেটেড সিস্টেম তৈরির কথা জানান । এতে কলকাতা পৌরনিগমের নিকাশি বিভাগের আধিকারিক থেকে মেয়র পারিষদ, সবাই কোথায় কতটা জল জমে রয়েছে তা দেখতে পারবেন । পাশাপাশি জমা জল সরানোয় কী কাজ হচ্ছে তার তদারিকও করা যাবে । এর জন্য কলকাতা পৌরনিগমের কন্ট্রোল রুমের পাশে আরও একটি ঘর তৈরি হচ্ছে ।
আরও পড়ুন : জামিনের কাগজ হাতে পেয়েই কলকাতার জমা জল পরিদর্শনে সস্ত্রীক ফিরহাদ
2022-এ যাদবপুর ও তার আশপাশে দীর্ঘ সময় ধরে জল জমে থাকার ছবি দেখা যাবে না, আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র । নতুন পাম্প এবং গঙ্গার পাড়ে গেটের পাশে লিফটিং স্টেশন তৈরি হবে বলেও জানান ফিরহাদ হাকিম ।