কলকাতা, 12 এপ্রিল : প্রথম দফার নির্বাচনে দুটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট লুট হয়েছে। এই অভিযোগ তুলে আজ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (CEO) দপ্তরে বিক্ষোভ দেখান BJP নেতা ও কর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন মুকুল রায়, জয়প্রকাশ মজুমদার, শঙ্কুদেব পন্ডা, রাকেশ সিং সহ অন্যরা। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরের সদর দরজা বন্ধ করে দিয়ে ঘরের মেঝেতে বসেই বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সঞ্জয় বসুর অপসারণের দাবিও তোলেন। চলতে থাকে তর্ক-বিতর্ক। শেষমেশ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলার পর বিক্ষোভ তুলে নেয় BJP।
ঠিক কী হয়েছিল ভিতরে :
BJP নেতারা বলেন, "আজ এর শেষ দেখে যাব।" উত্তর আসে, "দেখছি।" অফিসরুমের কার্পেটে বসা মুকুলবাবু বলেন, "না দেখছি নয়। এক ঘণ্টার মধ্যে শেষ দেখে যাব। দ্বিতীয় দফায় যদি আপনাদের পর্যাপ্ত বাহিনী না থাকে, তাহলে এটা আমাদের লিখিত দাবি লোকসভা নির্বাচন পিছিয়ে দিন। আমি আবার বলছি রাজ্য পুলিশকে রেখে কোনও জায়গায় ভোট করা যাবে না। যা 2009 হয়নি 2014 হয়নি আর 2016 হয়নি। তাই স্টেট পুলিশকে রেখে কোনও ভোট করা যাবে না।"
এবার জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, "কোচবিহার আর ওখানাকার যে রিপোর্ট আছে সেই বিষয়ে আপনি নির্দেশ দিতে পারেন। আপনার অধিকার আছে।" পরে মুকুল বলেন, "আপনি তো আমাদের কথাগুলি শুনলেন কিন্তু এগুলি নিয়ে আপনার কাছে কোনও রেকর্ড থাকবে ? পাঁচ মিনিট বাদে আমি চলে যাব। কোনও সেক্রেটারি এসে বসে এখানে। কী কী বলছে তা নোট করে। এভাবে সম্ভব? আপনি তো শৈবাল বর্মণ স্যারকে রেখে দিয়েছেন ঢালের মতো। জানেন তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো।" পরে কমিশনের আধিকারিক বলেন, "আমাদের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ এসেছে। দেখছি।"
এবার মুকুল বলেন, "আপনি জানেন গড়বেতার ঘটনা। আপনি জলপাইগুড়ির SP অমিতাভ মাইতির ঘটনা জানেন। এই যে সঞ্জয় বসু মানুষকে বলছে। এতে মানুষের আত্মবিশ্বাস কমছে। এই সঞ্জয় বসু কোন ঘরে বসে ? চল তো একটু দেখা করে আসি। আমরা তাঁকে একটু দেখতে চাই।" পরে পাশে বসে থাকা অন্যরা বলেন, "আপনারা একটা সময় দিন এই সঞ্জয় বসুর ফয়সলা কবে হবে? স্যার আপনি রাজ্য সরকারের চাপে আছেন।"
জয়প্রকাশ বলেন, "কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ জেলাশাসকের ঘরে হাতাহাতি করছে এতে কার সম্মান যাচ্ছে।" এবার মজার ছলে মুকুল বলে ওঠেন, "কখন জানব বলুন, এবার রাস্তায় বসব। এখানে তো ঠান্ডা আছে। আপনি কখন জানাবেন টাইমটা বলুন।" জয়প্রকাশবলেন, "দেখুন না থাকবে বাঁশ না থাকবে বাঁশি। সঞ্জয়বাবুকে অন্য একটি জায়গায় দিলে সমস্যাটা মিটে যায়।" পাশ থেকে একজন বলে ওঠে, "ওঁকে TMC অফিসে বসিয়ে দিন।"
এবার উঠে পড়েন মুকুলবাবু। বলেন, "সঞ্জয় বসু কি আপনাদের কোলের ছেলে ? কমিশনের আধিকারিক বলে ওঠেন, "ওরকম বলে না, আপনারা সবাই আমাদের কোলের ছেলে। আমাদের একটু দেখতে দিন।" মুকুল বলেন, "না দেখার কোনও জায়গা নেই। আজ রাত 12 টার মধ্যে যদি অর্ডার না বের হয় তাহলে কাল সকালে তাঁর বাড়ি ঘেরাও হবে।" পাশ থেকে কেউ বলে ওঠেন, "স্যার কাল আপনার বাড়িও ঘেরাও হবে।"