কলকাতা, 24 অগস্ট: আবার কি অতীতের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে ত্রিপুরায় (Tripura TMC)? সূত্রের খবর, তৃণমূল থেকে বিজেপির দিকে পা বাড়াতে চলেছেন বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব সামলানো সুবল ভৌমিক (Tripura TMC removes Subal Bhowmik)। মূলত এই সুবল ভৌমিককে সামনে রেখেই বাংলার প্রতিবেশী রাজ্যে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছিল তৃণমূল । কিন্তু এ বার সেই হেভিওয়েট নেতা তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরের দিকে পা বাড়াতেই দলের রাজ্য সভাপতি পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল ।
বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সুবল ভৌমিককে তারা রাজ্য সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দিচ্ছে । তবে ওই রাজ্যে পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে যথারীতি থাকবেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুস্মিতা দেব । শীঘ্রই তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে নতুন রাজ্য সভাপতির নামও ঘোষণা করা হবে (Tripura TMC President)।
কিন্তু ঢাকঢোল পিটিয়ে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে আসা সুবল ভৌমিকের তৃণমূল ত্যাগ করলে তা এ রাজ্যের শাসকদলের জন্য একটা বড় ধাক্কা । অতীতেও দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের তৈরি করা সংগঠনের উপর ভিত্তি করেই ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি । সে সময়ও একঝাঁক তৃণমূল নেতা ঘাসফুল শিবির ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে । একুশে এই রাজ্যে অভাবনীয় ফল করার পর আবার নতুন করে সংগঠন সাজায় তৃণমূল কংগ্রেস । এ বার সেই সংগঠনকে বড় ধাক্কা দিয়ে সুবল ভৌমিকের গেরুয়া শিবিরের দিকে যাওয়া আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে বড় সমস্যায় ফেলে কি না সেটাই এখন দেখার ।
চলতি বছর এপ্রিলে সুবল ভৌমিককে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি করা হয়েছিল । আগামী বছর ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন । তার আগে তৃণমূল শিবিরের কাছে এটা বড় ধাক্কা । বিপ্লব দেবকে সরিয়ে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী পদে মানিক সাহাকে আনার পরেও পদ্মশিবির খুব ভালো জায়গায় নেই । তবে রাজ্যে সিপিএম-কংগ্রেসের বিকল্প হিসেবে এখনও ত্রিপুরায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি তৃণমূল ।
আরও পড়ুন: কংগ্রেসের ঘর ভাঙা লক্ষ্য নয়, ত্রিপুরায় সুর নরম অভিষেকের
সুবল ভৌমিক ত্রিপুরা তৃণমূলের সভাপতি হওয়ার পর থেকে দলে তুমুল অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল । 2021 সালে ত্রিপুরায় পৌর নির্বাচনে লড়াই করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল । সেই পৌরভোটে বাম-কংগ্রেসকে টপকে শতাংশের বিচারে দ্বিতীয় স্থান দখল করে তৃণমূল । কিন্তু চলতি বছর বিধানসভা উপনির্বাচনে একেবারে খারাপ ফল হয় তৃণমূলের । রাজ্যের চারটি বিধানসভা কেন্দ্রেই জামানত জব্দ হয়েছিল জোড়া ফুল প্রার্থীদের । উপনির্বাচনে খারাপ ফল হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল গোষ্ঠীকোন্দল । নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের সব সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে সুবলের বিরুদ্ধে । তাঁর বিরুদ্ধে তোপ দেগে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা বাপটু চক্রবর্তী ।
ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসের এই ডামাডোল নিয়ে সে রাজ্যে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "দল সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে । বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এ রাজ্যে আমরা কোনও আপোষ করব না । আমরা ত্রিপুরার মানুষের পক্ষে । ত্রিপুরার মানুষের হয়ে আমাদের লড়াই জারি আছে । দলের তরফ থেকে শীঘ্রই নতুন সভাপতির নামও ঘোষণা করে দেওয়া হবে । সুবলবাবুর থাকা না থাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের উপর কোনও প্রভাব পড়বে না ।"