হায়দরাবাদ, 4 ডিসেম্বর : সবাই চায় নিজের একটা বাড়ি হোক ৷ এই ইচ্ছে পূরণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গৃহ ঋণ বা 'হোম লোন' (home loan) নিতে হয় ৷ আর এমন সুযোগে কোন ব্যাঙ্ক কী ভাবে কাকে আগেভাগে কতটা সুবিধেজনক হারে গৃহ ঋণ দিতে পারবে, এ নিয়ে একে অপরকে টেক্কা দিতে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে ৷ এমনকি ব্যাঙ্কগুলি গ্রাহকদের ঋণ মঞ্জুর করতে গিয়ে সুদের হারও কমিয়ে দিচ্ছে ৷ কিন্তু যাঁরা বাড়ি কিনছেন, তাঁদের সতর্ক ও যথাযথ পরিকল্পনার মাধ্যমে ইএমআই-এর (EMIs) বোঝা কী ভাবে কমানো সম্ভব, তা অবশ্যই জেনে রাখা উচিত ৷
বাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ক্রেতাকে একটা যথার্থ পরিকল্পনা ছকে রাখতে হবে ৷ আয়ের 40% বাড়ির ইএমআই-এর জন্য সরিয়ে রেখে, বাকি টাকা থেকে কীভাবে অন্য সব খরচ আর সঞ্চয় করা যায়, সেটা আগে কষে ফেলা প্রয়োজন ৷ তাই আগে থেকে প্রত্যেক মাসের ঋণের বোঝা সামলানোর একটা সুষ্ঠু রেখাচিত্র করে রাখা দরকার ৷
বাড়ি ক্রেতাদের জন্য বোঝা কমানোর কয়েকটি টিপস (Tips to reduce the burden of home loan EMIs) :
একটা অতিরিক্ত কিস্তি (One additional installment)
সাধারণত একজন ক্রেতাকে প্রতি বছর 12টি কিস্তি দিতে হয় ৷ তবে তিনি যদি তাড়াতাড়ি দেনার দায় মিটিয়ে ফেলতে চান, তাহলে বছরে 13টি কিস্তি দিতেই পারেন ৷ এই অতিরিক্ত কিস্তির জন্য, হয় তাঁকে অন্য কোনও উপায়ে রোজগার বাড়াতে হবে নতুবা প্রতিদিনের খরচ থেকে কাটছাঁট করে টাকা বাঁচাতে হবে ৷ এতে ঋণের মূল টাকাটা কিছুটা কমবে এবং নির্ধারিত সময়ের আগেই ঋণ শোধ করা যাবে ৷ এর জন্য ব্যাঙ্ক বা গৃহ ঋণ দেওয়া সংস্থাগুলি ফ্লোটিং রেটে (floating rate) দেওয়া গৃহ ঋণের উপর আলাদা কোনও মূল্য (upfront fees) ধার্য করে না ৷ পাশাপাশি আগাম ইএমআই-এর টাকা দিয়ে রাখলে ক্রেডিট স্কোরেও উন্নতি হবে ৷
খরচ সামলাতে ব্যর্থ হলে (Unable to meet expenses)
বাড়ির কিস্তির টাকা মেটানোর পর অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতা তাঁর অন্য খরচগুলি চালাতে পারেন না ৷ এতে দুশ্চিন্তার কিছু নেই ৷ সুদের হার হ্রাস পেলে, ইএমআইগুলোর বোঝাও কমে যাবে ৷ এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলি এবং গৃহ ঋণ দেওয়া সংস্থাগুলির থেকে বিস্তারিত জেনে নিলে আরও ভাল হয় ৷
সব বিষয়গুলি ভাল করে বিচার করার পরও আরেকটা উপায় ভাবা যেতে পারে ৷ ঋণ শোধের সময় (term of the loan) বাড়লে ইএমআই-এর টাকার পরিমাণও কমবে (Also extending the term of the loan, which eventually reduces the EMI) ৷ এর ফলে একজন ক্রেতা তাঁর বাড়ির সব খরচখরচা কোনও সমস্যা ছাড়াই সামলাতে পারবেন ৷ তবে, যদি কোনও ভাবে আয় বাড়ে, তাহলে সেই অনুপাতে ইএমআই-এর টাকা বাড়াতে ভুললে চলবে না ৷
আরও পড়ুন : Indian Economy : এই দশকে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি সাত শতাংশের বেশি, দাবি অর্থনৈতিক পরামর্শদাতার
অনেক সময় ক্রেতা অন্য কোনও সম্পত্তি বেচে বা উত্তরাধিকার সূত্রে বিশাল অঙ্কের টাকা পেয়ে থাকেন ৷ সেক্ষেত্রে, ওই টাকা ধার দেওয়া সংস্থাকে দিয়ে তাড়াতাড়ি ঋণ মিটিয়ে ফেলা যায় ৷ এতে সুদের হার কমবে ৷
বর্তমানে, গৃহঋণে সুদের হার অনেকটা কমেছে ৷ তা সত্ত্বেও যদি কোনও ক্রেতা এখনও ধার মেটানোর জন্য মোটা অঙ্কের সুদ দেন, তাহলে আরেকবার ভেবে দেখুন ৷ এর চেয়ে বরং অন্য কোনও ব্যাঙ্কে সেই ঋণ স্থানান্তরিত করা যেতে পারে ৷ যদি কোথাও সুদের হার কম হয়, তাহলে ইএমআই-এর বোঝা অনেকটাই কমে যাবে ৷ যাইহোক, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ফি এবং অন্য সব চার্জগুলো ভাল করে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন ৷ নাহলে, পরিকল্পনা বাতিল করে দিন ৷
শেষমেশ, ভাল ভাবে জীবনযাপন করতে হলে মনে রাখতে হবে, ইএমআই যেন আয়ের 40%-এর বেশি না হয়ে যায় ৷ তাই, ইএমআই-এর বোঝা যতটা সম্ভব কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করা উচিত ৷