ETV Bharat / bharat

Tea Seller of Kargil War: সেনারা তাঁর পথ আটকায়, কার্গিল যুদ্ধের চা-ওয়ালা নাসিম আহমেদ - কার্গিল যুদ্ধের রাঁধুনি নাসিম

তখন কার্গিলে বোমা পড়ছে ৷ চায়ের দোকান ছেড়ে নাসিম আহমেদ গাড়িতে উঠে পড়েছিলেন ৷ তাঁকে যেতে দিলেন না ভারতীয় সেনারা ৷ কার্গিল যুদ্ধে সেনাদের জন্য চা বানাতে, রান্না করতে হবে ৷ যুদ্ধক্ষেত্রের চা-ওয়ালা নাসিম আহমেদের কাহিনি ৷

Tea Seller of Kargil War
কার্গিলের চাওয়ালা
author img

By

Published : Jul 28, 2023, 3:06 PM IST

কার্গিল যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীকে চা ও খাবার বানিয়ে দিতেন নাসিম আহমেদ

দ্রাস, 28 জুলাই: একজন সাধারণ চা বিক্রেতা নাসিম আহমেদ ৷ যুদ্ধ তাঁকে অসামান্য করেছে ৷ 1999 সালের কার্গিল যুদ্ধের একজন হিরো আজকের প্রৌঢ় নাসিম ৷ 24 বছর আগে কার্গিলে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বেধেছে ৷ সেই সময় তিনি যুদ্ধ না করলেও সেনা-জওয়ানদের জন্য চা তৈরি করতেন ৷ তাঁদের খাবার রান্না করতেন ৷ তাই কার্গিল যুদ্ধের এক অজানা নায়ক চা বিক্রেতা নাসিম ৷

লাইন অফ কন্ট্রোল বা এলওসি পেরিয়ে কার্গিলে বেআইনিপথে ঢুকেছিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ৷ তাদের হঠাতে যুদ্ধে নেমে পড়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী ৷ 60 দিন ধরে চলা যুদ্ধের পর কার্গিল ফিরিয়ে এনেছিলেন দেশের জওয়ানরা ৷

কার্গিলের সেই দিনগুলির কথা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে নাসিম বলেন, "আমিই শুধু এখানে ছিলাম ৷ বাকিরা সব এই জায়গা ছেড়ে চলে গিয়েছিল ৷ সীমান্তের ওপার থেকে মাঝে মাঝেই বোমা পড়ছে এদিক ওদিকে ৷ বহু বাড়ির উপরেও পড়েছে ৷ কয়েকটি বাড়ি তো পুড়েই গেল ৷"

আরও পড়ুন: প্রয়োজনে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরতে পারে সেনা, কার্গিল যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে হুঙ্কার রাজনাথের

তিনি এই যুদ্ধে সামিল হলেন কী করে ? এ প্রসঙ্গে 24টা বছর পিছনে ফিরে গেলেন নাসিম আহমেদ ৷ তিনি বলেন, "আমিও এই জায়গা ছেড়ে চলে যাচ্ছিলাম ৷ গাড়িতে উঠে পড়েছি ৷ হঠাৎ ভারতীয় সেনা এসে আমাকে থামিয়ে দিল ৷ সেনারা বললেন, তাঁদের চা, খাবার- এসব করে দিতে হবে ৷" যুদ্ধক্ষেত্রে দুইপক্ষের মধ্যে বোমা বর্ষণ হচ্ছে ৷ তখন কেঁপে উঠতেন কার্গিল যুদ্ধের রাঁধুনি নাসিম ৷ তিনি বলেন, "বোম পড়লে আমি ভয়ে কাঁপতাম ৷ জিজ্ঞেস করতাম কী হচ্ছে ? খুব আতঙ্ক হত ৷"

তবে চা-ওয়ালা নাসিমের কাজ ছিল যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াকু সৈন্যদের চা, খাবার জোগানো ৷ তাই ভারত-পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্তে বোমা, বারুদের মাঝে তিনি রান্নার কাজ চালিয়ে যেতেন ৷ তাতেও প্রাণের ঝুঁকি ছিল, তাও দেশের জন্য, সেনা-জওয়ানদের মুখে খাবার তুলে দিতে এই কাজে রাজি হয়েছিলেন সেদিনের মধ্যবয়স্ক নাসিম ৷

জওয়ানদের কথা মনে করে তিনি বলেন, "সেনারা এসে নিজের হাতে বাসন ধুত ৷ আমি ওসব পারতাম না ৷ আমি তাঁদের জন্য রান্না করতাম ৷ ওটাই আমার কাজ ছিল ৷ তাঁরা রেশনের ব্যবস্থা করতেন ৷ রান্নাবান্না চালিয়ে যেতে অন্য যা কিছু দরকার, সে সবের বন্দোবস্তও করতেন সেনারা ৷"

এখনও দ্রাস শহরের মানুষ নাসিমের এই সাহসের কথা মনে রেখেছে ৷ এলাকার এক বাসিন্দা নাসিম আহমেদকে 30-35 বছর ধরে চেনেন ৷ তিনি বলেন, "কার্গিল যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি সেনাদের চা, খাবারদাবার করে দিতেন ৷ ভারতীয় সেনাদের খেয়াল রাখতেন ৷ আমরা তো সবাই চলে গিয়েছিলাম ৷ তবে নাসিম এখানে থেকে সেনাদের সেবা করেছেন ৷ আমরা ফিরে এসে আমাদের বাড়িঘর ঠিক আছে কি না, দেখলাম ৷ দেখি তখনও নাসিমের চায়ের দোকান খোলা রয়েছে ৷"

আরও পড়ুন: কার্গিল বিজয় দিবসের 24 বছর, একনজরে কবে কী হয়েছিল ?

2 মাস ধরে নাসিম সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রে কাটিয়েছিলেন ৷ তিনিও জওয়ানদের বন্ধু হয়ে গিয়েছিলেন ৷ সেখানে আসা সাংবাদিকদের সঙ্গেও তাঁর আড্ডা জমে উঠেছিল ৷ সাংবাদিকদের কাছ থেকে গল্প শুনতেন চা-ওয়ালা নাসিম ৷ তাঁর নিজের সুখ-দুঃখের গল্পও ভাগ করে নিতেন দ্রাসের এক ছোট্ট চায়ের দোকানের মালিক ৷

কার্গিল যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীকে চা ও খাবার বানিয়ে দিতেন নাসিম আহমেদ

দ্রাস, 28 জুলাই: একজন সাধারণ চা বিক্রেতা নাসিম আহমেদ ৷ যুদ্ধ তাঁকে অসামান্য করেছে ৷ 1999 সালের কার্গিল যুদ্ধের একজন হিরো আজকের প্রৌঢ় নাসিম ৷ 24 বছর আগে কার্গিলে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বেধেছে ৷ সেই সময় তিনি যুদ্ধ না করলেও সেনা-জওয়ানদের জন্য চা তৈরি করতেন ৷ তাঁদের খাবার রান্না করতেন ৷ তাই কার্গিল যুদ্ধের এক অজানা নায়ক চা বিক্রেতা নাসিম ৷

লাইন অফ কন্ট্রোল বা এলওসি পেরিয়ে কার্গিলে বেআইনিপথে ঢুকেছিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ৷ তাদের হঠাতে যুদ্ধে নেমে পড়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী ৷ 60 দিন ধরে চলা যুদ্ধের পর কার্গিল ফিরিয়ে এনেছিলেন দেশের জওয়ানরা ৷

কার্গিলের সেই দিনগুলির কথা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে নাসিম বলেন, "আমিই শুধু এখানে ছিলাম ৷ বাকিরা সব এই জায়গা ছেড়ে চলে গিয়েছিল ৷ সীমান্তের ওপার থেকে মাঝে মাঝেই বোমা পড়ছে এদিক ওদিকে ৷ বহু বাড়ির উপরেও পড়েছে ৷ কয়েকটি বাড়ি তো পুড়েই গেল ৷"

আরও পড়ুন: প্রয়োজনে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরতে পারে সেনা, কার্গিল যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে হুঙ্কার রাজনাথের

তিনি এই যুদ্ধে সামিল হলেন কী করে ? এ প্রসঙ্গে 24টা বছর পিছনে ফিরে গেলেন নাসিম আহমেদ ৷ তিনি বলেন, "আমিও এই জায়গা ছেড়ে চলে যাচ্ছিলাম ৷ গাড়িতে উঠে পড়েছি ৷ হঠাৎ ভারতীয় সেনা এসে আমাকে থামিয়ে দিল ৷ সেনারা বললেন, তাঁদের চা, খাবার- এসব করে দিতে হবে ৷" যুদ্ধক্ষেত্রে দুইপক্ষের মধ্যে বোমা বর্ষণ হচ্ছে ৷ তখন কেঁপে উঠতেন কার্গিল যুদ্ধের রাঁধুনি নাসিম ৷ তিনি বলেন, "বোম পড়লে আমি ভয়ে কাঁপতাম ৷ জিজ্ঞেস করতাম কী হচ্ছে ? খুব আতঙ্ক হত ৷"

তবে চা-ওয়ালা নাসিমের কাজ ছিল যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াকু সৈন্যদের চা, খাবার জোগানো ৷ তাই ভারত-পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্তে বোমা, বারুদের মাঝে তিনি রান্নার কাজ চালিয়ে যেতেন ৷ তাতেও প্রাণের ঝুঁকি ছিল, তাও দেশের জন্য, সেনা-জওয়ানদের মুখে খাবার তুলে দিতে এই কাজে রাজি হয়েছিলেন সেদিনের মধ্যবয়স্ক নাসিম ৷

জওয়ানদের কথা মনে করে তিনি বলেন, "সেনারা এসে নিজের হাতে বাসন ধুত ৷ আমি ওসব পারতাম না ৷ আমি তাঁদের জন্য রান্না করতাম ৷ ওটাই আমার কাজ ছিল ৷ তাঁরা রেশনের ব্যবস্থা করতেন ৷ রান্নাবান্না চালিয়ে যেতে অন্য যা কিছু দরকার, সে সবের বন্দোবস্তও করতেন সেনারা ৷"

এখনও দ্রাস শহরের মানুষ নাসিমের এই সাহসের কথা মনে রেখেছে ৷ এলাকার এক বাসিন্দা নাসিম আহমেদকে 30-35 বছর ধরে চেনেন ৷ তিনি বলেন, "কার্গিল যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি সেনাদের চা, খাবারদাবার করে দিতেন ৷ ভারতীয় সেনাদের খেয়াল রাখতেন ৷ আমরা তো সবাই চলে গিয়েছিলাম ৷ তবে নাসিম এখানে থেকে সেনাদের সেবা করেছেন ৷ আমরা ফিরে এসে আমাদের বাড়িঘর ঠিক আছে কি না, দেখলাম ৷ দেখি তখনও নাসিমের চায়ের দোকান খোলা রয়েছে ৷"

আরও পড়ুন: কার্গিল বিজয় দিবসের 24 বছর, একনজরে কবে কী হয়েছিল ?

2 মাস ধরে নাসিম সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রে কাটিয়েছিলেন ৷ তিনিও জওয়ানদের বন্ধু হয়ে গিয়েছিলেন ৷ সেখানে আসা সাংবাদিকদের সঙ্গেও তাঁর আড্ডা জমে উঠেছিল ৷ সাংবাদিকদের কাছ থেকে গল্প শুনতেন চা-ওয়ালা নাসিম ৷ তাঁর নিজের সুখ-দুঃখের গল্পও ভাগ করে নিতেন দ্রাসের এক ছোট্ট চায়ের দোকানের মালিক ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.