ওয়াশিংটন, 30 জুলাই : আফগানিস্তানে ক্রস ফায়ারে মৃত্যু হয়নি পুলিৎজার পুরস্কার প্রাপ্ত চিত্র সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকীর ৷ তালিবান জঙ্গি সংগঠন তাঁর পরিচয় জানার পর পরিকল্পিতভাবে তাঁকে খুন করে ৷ আমেরিকার প্রকাশিত একটি ম্যাগাজিনের রিপোর্টে এই কথা উল্লেখ করা হয়েছে ৷
আফগানিস্তানে একটি অ্যাসাইনমেন্টে ছিলেন 38 বছরের সিদ্দিকী, সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় ৷ আফগানিস্তানের কান্দাহার শহরের স্পাইন বোলডাক প্রদেশে আফগান সেনা ও তালিবানের মধ্যে সংঘর্ষের খবর করার সময় ক্রস ফায়ারে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা যায় ৷ যদিও আমেরিকা স্থিত ওই ম্যাগাজিনের দাবি ভিন্ন ৷
ওয়াশিংটন এক্সামিনার নামক ওই ম্যাগাজিনের রিপোর্ট অনুযায়ী আফগান সেনার সঙ্গে স্পাইন বোলডক প্রদেশে যাচ্ছিলেন ৷ তিনি আফগান সেনার সঙ্গে তালিবানদের সংঘর্ষের খবর করতে যাচ্ছিলেন ৷ সেই সময় কাস্টম পোস্টের কাছে তাঁরা তালিবান আক্রমণের মুখে পড়েন ৷ তিন জন আফগান সেনার সঙ্গে সিদ্দিকী বাকি দলের থেকে আলাদা হয়ে যান ৷
এই সময় বোমার আঘাতে আহত হন দানিশ ৷ তাই স্থানীয় একটি মসজিদে তিনি ও তাঁর দল আশ্রয় নেন ৷ সেখানেই প্রথমিক চিকিৎসা নেন ৷ কিন্তু মসজিদে সাংবাদিক লুকিয়ে থাকার খবর ছড়িয়ে পড়লে, তালিবান জঙ্গিরা ফের মসজিদে আক্রমণ করে ৷ রিপোর্টে বলা হয়েছে, স্থানীয় তদন্তে জানা গিয়েছে শুধুমাত্র সিদ্দিকী ওইখানে লুকিয়ে আছে জেনই মসজিদে আক্রমণ করে তালিবান ৷
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘ তালিবান যখন সিদ্দিকীকে ধরে, তখন তিনি জীবিত ছিলেন ৷ তালিবান প্রথমে দানিশের পরিচয় জানে ও তারপর তাঁকে হত্যা করে ৷ একই সঙ্গে দানিশের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন, তাঁদেরও হত্যা করা হয় ৷ বাকি আফগান সেনারা দানিশদের উদ্ধার করতে এলে, তাঁদেরও হত্যা করে তালিবানরা ৷’’
আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের এক আধিকারিক মিচেল রুবিন লেখেন, ‘‘ চারিদিকে দানিশের যে ছবি ছড়িয়ে পড়ে, তাতে তাঁর মুখ পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল ৷ কিন্তু আমি আরও অনেক ছবি ও ভিডিয়ো দেখি, যেগুলি ভারত সরকারের একটি সূত্র মারফত আমি পেয়েছিলাম ৷ তাতে তালিবানরা প্রথমে সিদ্দিকীর মাথায় আঘাত করে ও পরে বুলেট দিয়ে তাঁর শরীর ঝাঁঝরা করে দেয় ৷’’
আরও পড়ুন : Danish Siddiqui : দিল্লি পৌঁছাল দানিশের মরদেহ, শেষকৃত্য হবে জামিয়া মিলিয়ার কবরস্থানে
রিপোর্টে বলা হয়েছে, সিদ্দিকীকে খুঁজে, তাঁকে হত্যাকরার এই সিদ্ধান্তই প্রমাণ করে তালিবানরা যুদ্ধনীতি মানে না ৷ রয়টার্স দলের হয়ে রোহিঙ্গা ইস্যু কভার করার জন্য পুলিৎজার পুরস্কার জেতেন দানিশ সিদ্দিকী ৷ তিনি আফগানিস্তানের সমস্যা, হংকং প্রতিবাদ সহ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বড় ইভেন্টগুলি কভার করেছেন ৷ 18 জুলাই তাঁর মরদেহ দিল্লি পৌঁছায় ৷ সেখান থেকে দেহ তাঁর বাড়ি জামিয়া নগরে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ পরে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া কবরস্থানে তাঁকে সমাদ্ধিস্থ করা হয় ৷