শিলিগুড়ি, 7 জুলাই : বাঙালির পায়ের তলায় নাকি সরষে থাকে ৷ তাই সময় পেলেই দেশ-বিদেশে ঘুরতে যাওয়া চাই-ই-চাই ৷ আম-বাঙালির তিনটি ডেস্টিনেশন দার্জিলিং, দিঘা ও পুরি ৷ এককথায় দিপুদা ৷ তবে ভ্রমণ পিপাসু বাঙালির এই তিনটি জায়গা ছাড়াও সম্প্রতিক সময়ে সিকিমের বিভিন্ন প্রান্তেও ঘুরতে যায় ৷ যদিও মাঝে বাধ সেধেছিল করোনা প্যানডেমিক ৷ সংক্রমণ রুখতে সিকিমের প্রবেশ পথ পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে দেয় পর্যটন দফতর ৷ তবে সেই বাধাও উঠে গেল ৷ এমনকি আরটিপিসিআর টেস্টেরও আর দরকার নেই ৷ নতুন নির্দেশিকায় সিকিম ঘুরতে দরকার শুধু করোনা টিকার দুটি ডোজ ৷ সোমবার এমনই নির্দেশিকা জারি করেছে সিকিমের পর্যটন দফতর ।
উত্তর সিকিমের লাচুং, লাচেন পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের স্থান ৷ পাহাড়ের কোলে ছোট্ট এই দুই জনপদে প্রতি মরসুমে পর্যটক প্রায় উপচে পড়ে ৷ এছাড়া ইয়াংথাম ভ্যালি, জিরো পয়েন্ট, কালো পাথর, গুরুদংমার লেক দেখতে প্রতি বছর কয়েক হাজার পর্যটকদের এখানে আসেন ৷ পথের একদিকে সারি দেওয়া বিস্তৃণ পর্বতমালা ও একপাশে গভীর খাদ, এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি দেয় ৷ যার টানে প্রতি বছর পর্যটকদের ঢল নামে সিকিমে ৷ এছাড়া পূর্ব সিকিমের ছাঙ্গু লেক, হনুমান মন্দির, নাথু-লা তো আছেই ৷ এমনকি পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য ফুলের ডালি সজিয়ে থাকে রাজধানী গ্যাংটক ৷ স্বল্প টাকায় শীতবস্ত্র কেনার অন্যতম স্থান গ্যাংটকের গান্ধি মার্গ ৷ ছবির মতো সাজানো গান্ধি মার্গ প্রথম দর্শনে আপনার মনে হতেই পারে আপনি ভারতে নয়, ইউরোপের কোনও দেশে ভ্রমণ করছেন ৷ কিন্তু বাধ সধল করোনা ৷ দেশজুড়ে দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হতেই বন্ধ করে দেওয়া হয় রাজ্যে প্রবেশ পথ ৷ ফলে এতদিন গোটা দেশে করোনা বিধি নিষেধ কিছুটা ছাড় দেওয়া হলেও, সিকিম প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল ৷ ফলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ থেকে বঞ্চিত ছিল ভ্রমণ পিপাসুরা ৷
তবে আজ থেকে মুক্তি ৷ সিকিমের মুক্ত বাতাসে আবার শ্বাস নিতে পারবেন সাধারণ ভ্রমণ পিপাসুরা ৷ ঘুরতে পারবেন রাজ্যের প্রতিটি কোণায় ৷ তবে অবশ্যই নিতে হবে করোনা ভাইরাসের দুটি ডোজ ৷ এমনই নির্দেশিকা জারি করেছে সিকিম পর্যটন দফতর ৷ ফলে ফের আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ ৷
হিমালয়ের হসপিটালিটি এন্ড ট্যুর ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, " সিকিম সরকারের এই পদক্ষেপে নতুন করে আশার আলো জেগে উঠেছে । সামনে দুর্গা পুজো এবং তারপরে দীপাবলি এবং নতুন বছরের পর্যটনের মরসুম রয়েছে ৷ তাই এখানকার পর্যটন শিল্প দ্রুত ছন্দে ফিরবে বলে আশা করি ৷’’ ইস্টার্ন হিমালায়া ট্র্যাভেল এন্ড ট্যুরস অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সন্দীপন ঘোষ বলেন, " পর্যটকদের কাছে দার্জিলিং, কালিম্পং, তরাই, ডুয়ার্সের পাশাপাশি সিকিমকে নিয়ে একটি ট্যুরিজম সার্কিট তৈরি হয় । পর্যটকরা দার্জিলিং কিংবা কালিম্পিং আসলে সিকিমেও যান । সেইজন্য সিকিম সরকার এই পদক্ষেপ পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকে অনেকটাই আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন ।"
