নয়াদিল্লি, 6 জানুয়ারি: আদালত কক্ষে হাজির হুইস্কির বোতল ৷ তাও আবার দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের সামনে ৷ ভরা কক্ষে আইনজীবীদের ভিড় ৷ সেখানে দু'টি মদের বোতল আনলেন প্রবীণ আইনজীবী মুকুল রোহাতগি ৷ তবে এমন আজব কাণ্ডে অবশ্য হেসে ফেললেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চের অন্য দুই বিচারপতি- জে বি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র ৷
বিচারপতিরা প্রবীণ আইনজীবী রোহাতগিকে মশকরা করে বলেন, "আপনি আপনার সঙ্গে বোতল নিয়ে এসেছেন!" তবে এমন ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে একটি মামলা ৷ দু'টি মদ উৎপাদনকারী কোম্পানির মধ্যে ট্রেডমার্ক লঙ্ঘন সংক্রান্ত একটি মামলা চলছে ৷ সেই মামলার স্বার্থে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতিদের সামনে মদের বোতল হাজির করেছেন প্রবীণ আইনজীবী রোহাতগি ৷
তিনি জোর দিয়ে জানান, দু'টি হুইস্কির বোতল কতটা একই রকম দেখতে তা প্রমাণ করতেই এটা করেছেন ৷ আর তিনি যে ট্রেডমার্ক লঙ্ঘনের বিষয়টি আদালতে পেশ করেছেন, তাও প্রধান বিচারপিতর বেঞ্চ চাক্ষুষ করতে পারবে ৷ মদের কোম্পানি পেরনোদ রিচার্ড ইন্দোরের জেকে এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, তারা একটি মদ উৎপাদন করে তার নাম দিচ্ছে 'লন্ডন প্রাইড' ৷ এত 'ব্লেন্ডার্স প্রাইড' নামের ট্রেডমার্কটি লঙ্ঘিত হচ্ছে ৷ তাই ইন্দোরের কোম্পানিটিকে এই ট্রেডমার্ক ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দিক আদালত ৷ পাশাপাশি ওই মদের বোতলটি 'ইম্পেরিয়াল ব্লু' নামের একটি ব্র্যান্ডের বোতলটির মতো দেখতে ৷ তাই জেকে এন্টারপ্রাইজ বোতলটির ধরনও নকল করেছে ৷ পেরনোদ রিচার্ড আবেদন জানিয়েছিল, জেকে এন্টারপ্রাইজের উপর সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করুক হাইকোর্ট ৷
এদিকে নভেম্বরে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট এই মামলার পর্যবেক্ষণে জানায়, যাঁরা স্কচ-হুইস্কির নেশা করেন, তাঁদের বেশিরভাগই সমাজের উচ্চবিত্ত মানুষ। তাঁরা যথেষ্ট শিক্ষিতও ৷ তাঁরা দু'টি মদের কোম্পানির ব্র্যান্ডের মধ্যে পার্থক্যটা সহজেই বুঝতে পারবেন ৷ তাই ইন্দোরের জেকে এন্টারপ্রাইজকে 'লন্ডন প্রাইড' নামে মদ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার কোনও কারণ নেই ৷
মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের হয়েছে ৷ শীর্ষ আদালতে পেরনোদ রিচার্ডের হয়ে মামলাটি লড়ছেন আইনজীবী মোহিত ডি রাম ৷ শুনানির সময় দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন, এই ব্যবসার ক্ষেত্রে বোতলের আকৃতি কীরকম, সেই বিষয়টি জড়িত রয়েছে ৷ বেঞ্চ পেরনোদ রিচার্ডের আবেদনের ভিত্তিতে একটি নোটিশ জারি করেছে ৷ দু'সপ্তাহ পর আবার শুনানি ৷
আরও পড়ুন: