শিবসাগর (অসম), 14 ফেব্রুয়ারি: কৃষক ইশুতে লাগাতার আক্রমণের পর এবার কেন্দ্রের চা বাগান ও চা শ্রমিক নীতি নিয়েও সরব হলেন রাহুল গান্ধি৷ রবিবার ভোটমুখী অসমের একটি জনসভায় তাঁর আশ্বাস, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে বাড়বে চা শ্রমিকদের মজুরি৷ আর সেই টাকা জোগানো হবে গুজরাতের ব্য়বসায়ীদের কাছ থেকে৷
প্রশ্ন হল, হঠাৎ করে অসমের চা শ্রমিকদের স্বার্থের কথা ভাবতে গিয়ে গুজরাতি ব্য়বসায়ীদের কেন নিশানা করলেন রাহুল? সভামঞ্চেই এর ব্যখ্য়া দিয়েছেন কংগ্রেসের সাংসদ৷ তিনি বলেন,‘‘এখনও অসমের চা শ্রমিকদের দৈনিক 167 টাকা মজুরিতে কাজ করতে হয়৷ অথচ গুজরাতের ব্য়বসায়ীরা এক-একটা চা বাগান কিনে বসে আছেন৷ আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, অসমের চা শ্রমিকদের জন্য দৈনিক 365 টাকা মজুরির ব্যবস্থা করব৷ কোথা থেকে আসবে সেই টাকা? টাকা আসবে গুজরাতের ব্য়বসায়ীদের কাছ থেকে৷’’
প্রসঙ্গত, অসমে বিজেপির শাসন রয়েছে৷ সাম্প্রতিক কালে এনআরসি নিয়ে চরম নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে অসমের মানুষকে৷ এনআরসিতে নাম না ওঠায় লাখ লাখ অসমবাসী নাগরিকের অধিকার হারিয়েছেন৷ তাঁদের ঠাঁই হয়েছে ডিটেনশন ক্য়াম্পে৷ যা নিয়ে কেন্দ্রের মোদি সরকারকে বিঁধতে ছাড়েননি বিরোধীরা৷ এদিন বিরোধের সেই সুর ধরা পড়ে রাহুলের গলাতেও৷ তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বের কোনও শক্তিই অসমকে ভাঙতে পারবে না৷ যাঁরাই এখানে হিংসা আর ঘৃণা ছড়ানোর চেষ্টা করবেন, কংগ্রেস আর অসমের মানুষ একসঙ্গে তা প্রতিরোধ করবে৷’’ তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এদিনের সভায় রাহুলকে একটি গামছা গায়ে দিতে দেখা যায়৷ যাতে লেখা ছিল ‘নো সিএএ’৷
আরও পড়ুন: মাথায় পাগড়ি বেঁধে ট্র্যাক্টর চালালেন রাহুল
সিএএ, এনআরসি নিয়ে এমনতিই ভীত, সন্ত্রস্ত অসমের মানুষ৷ ভোটমুখী রাজ্য়ে তাই এই ইশুটিকেই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন রাহুল৷ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘যা হয় হোক৷ সিএএ হবে না৷’’
সিএএ ইশুতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের বিজেপি নেতা সর্বানন্দ সোনোওয়ালকেও তোপ দাগেন রাহুল৷ তাঁর অভিযোগ, সর্বানন্দ নামেই রাজ্য়ের মুখ্যমন্ত্রী৷ আদতে সবটাই চলে কেন্দ্রের নির্দেশে৷ রাহুল বলেন, ‘‘রিমোট কন্ট্রোলে টিভি চলতে পারে, অসমের মতো একটা রাজ্য কখনও চলে না৷ রাজ্য়ের মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্য়ের মানুষের জন্য কাজ করা উচিত৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নাগপুর, দিল্লি আর গুজরাতের নির্দেশ মেনে কাজ করেন৷ তাতে অসমের ভালো হতে পারে না৷’’