মুম্বই, 17 এপ্রিল: রাজ্যে অক্সিজেনের অভাব, সঙ্কটে মরণাপন্ন কোভিড-19 রোগী, তাও ফোনে সে কথা জানাতে পারলেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ৷ কারণ তিনি তো "বাংলায় পরিবর্তন আনতে প্রচারে ব্যস্ত", জানালেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ৷ এমনকি কেন্দ্রের কাছে অক্সিজেনের আবেদন করার দু'দিন পর তার উত্তর পেয়েছেন তিনি, দাবি তাঁর ৷
এমনকি দেশে প্রথম থেকেই ভয়াবহ অবস্থা যে রাজ্যের, সরকারের তরফে সেই রাজ্যের শাসকের আবেদনের উত্তর দিতে দু'দিন কেটে গিয়েছে ৷
যদিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের দাবি তিনি টুইটে ঠাকরেকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে পর্যাপ্ত আর নিরবচ্ছিন্ন মেডিক্যাল অক্সিজেন আর 1,121 টি ভেন্টিলেটরও পাঠানো হবে মহারাষ্ট্রে ৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই টুইটের আগেই আরেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ঠাকরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঠাকরের কঠিন সমালোচনা করেন, "এমনকি এও জানান যে মহারাষ্ট্র এখনো পর্যন্ত খুব ভাল মানের অক্সিজেন পেয়েছে, আর ঠাকরের আবেদনের আগের দিনই নাকি প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্র ও রাজ্যকে একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে৷" তাই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী "হীন রাজনীতি" করছে আর তাঁর সরকার "অযোগ্য আর দুর্নীতিগ্রস্ত" বলে আঙুল তোলেন উদ্ধবের দিকে ৷ গোয়েলের এই টুইটের পরেই হর্ষ বর্ধন ঠাকরের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে টুইট করেন ৷
এই বিতর্কের শুরু হয় ঠাকরে ফোন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে যোগাযোগ করতে না পারার পর থেকে ৷ তখন মোদি বাংলায় প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন ৷
আরও পড়ুন: শেষ 24 ঘণ্টায় নতুন রোগী 24 হাজার, দিল্লিতে ফুরোচ্ছে শয্যা, অক্সিজেন, ওষুধ
দেশজুড়ে কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে যখন, ঠিক সেই সময় অসাম, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু-সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রধানমন্ত্রী, অমিত শাহ, এমনকি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতার প্রচার সভাকে ঘিরে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন ৷ জনসভার প্রতিটি ছবিতে স্পষ্ট কী ভাবে মানুষ কোনও রকম শারীরিক দূরত্ব বজায় না রেখে, মাস্ক না পরে ভিড় করেছেনে নেতাদের বক্তৃতা শুনতে ৷ নির্বাচন কমিশনের কথাতেও পাত্তা দিচ্ছে না কেউ ৷ অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারই বার বার এমন সঙ্কটজনক পরিস্থিতির জন্য প্রয়োজনীয় কোভিড প্রোটোকল না মেনে চলাকে দায়ী করছে ৷
দেশে মহারাষ্ট্রে অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা ছ'লক্ষ ছাড়িয়েছে, মধ্যপ্রদেশের অবস্থাও খুবই খারাপ ৷ দু'টি রাজ্যই অক্সিজেনে অভাব-সহ আরও নানা সমস্যায় জেরবার ৷ কিন্তু কেন্দ্রের তরফে গত কয়েকদিন ধরে কোথাও অক্সিজেনের কোনও অভাব নেই বলে উল্টো চাপ দেওয়ার পর শুক্রবার রাতে কেন্দ্রের তরফে তৃতীয় জরুরিভিত্তিতে নির্দেশ জারি করা হয় ৷ 24 ঘণ্টার মধ্যে 50,000 মেট্রিক টনের অক্সিজেন পাঠানো হবে বলে আশ্বাসবাণী দেওয়া হয় ৷
তবে শোনা যাচ্ছে, ঠাকরের এই অভিযোগের কয়েক ঘণ্টা আগেই নাকি প্রধানমন্ত্রী সরকারের উচ্চ আধিকারিকদের সঙ্গে একটি জরুরি বৈঠক সেরেছিলেন অক্সিজেন উৎপাদন আর সরবরাহ নিয়ে ৷