ETV Bharat / bharat

শহিদ ভগৎ সিংয়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত সাগর-মনোরঞ্জন! সেন্ট্রাল অ্যাসেম্বলি হামলার অনুকরণ লোকসভায় - শহিদ ভগৎ সিং

Parliament security breach case: সংসদ হামলাকারীরা শহিদ ভগৎ সিংয়ের কাজকর্মে উৎসাহিত হয়েই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে ৷ জেরার মুখে পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছে ধৃতরা ৷

ETV Bharat
সংসদ হামলার নেপথ্যে শহিদ ভগৎ সিংয়ের অনুপ্রেরণা
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 15, 2023, 8:23 AM IST

নয়াদিল্লি, 15 ডিসেম্বর: শহিদ ভগৎ সিংয়ের থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই সংসদে হামলা করেছে অভিযুক্তরা ৷ জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ ৷ 13 ডিসেম্বর লোকসভায় শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন দর্শকাসন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাগর শর্মা ও মনোরঞ্জন ডি ৷ আর একই সময়ে সংসদের বাইরে স্লোগান দিচ্ছিল অমল ও নীলম ৷ তাদের সবাই এখন পুলিশি হেফাজতে ৷ এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে নিজেই থানায় আত্মসমর্পণ করেছে এই হামলার মূল অভিযুক্ত ললিত মোহন ঝা ৷ তারা সবাই শহিদ ভগৎ সিংকে নকল করার চেষ্টায় এই কাণ্ড করেছে বলে জানা গিয়েছে ৷

1929 সালের 8 এপ্রিল ৷ দিল্লির সেন্ট্রাল অ্যাসেম্বলিতে বোমা মারেন ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত ৷ এর সঙ্গে এলোপাথাড়ি গুলি করতে থাকেন ভগৎ সিং ৷ আর বটুকেশ্বর দত্ত হিন্দুস্তান সোশালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশন বা এইচএসআরএ-র প্যামফ্লেট ছুড়তে থাকেন সেন্ট্রাল অ্যাসেম্বলির অন্দরে ৷ এই অ্যাসেম্বলিই এখন পুরনো সংসদ ভবন৷ তাঁরা দু'জনেই সেদিন স্লোগান দিয়েছিলেন 'ইনকিলাব জিন্দাবাদ' । যার অর্থ বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা নিপাত যাক ৷ আগে থেকে পরিকল্পনা করে সেদিন হামলা চালিয়েছিলেন দুই বিপ্লবী ৷

ঠিক এমনটাই করতে চেয়েছিল সাগর, মনোরঞ্জন, নীলম, অমল এবং ললিত ৷ 13 ডিসেম্বর, বুধবার লোকসভায় শীতকালীন অধিবেশনে জিরো আওয়ারে হঠাৎ দর্শকাসন থেকে লাফিয়ে হামলা চালায় সাগর আর মনোরঞ্জন ৷ তাদেরও লোকসভা কক্ষে প্যামফ্লেট ছুড়ে ফেলার পরিকল্পনা ছিল ৷ বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশ জানায়, তাদের কাছ থেকে সেই প্যামফ্লেট পাওয়া গিয়েছে ৷ তাতে লেখা রয়েছে, "প্রধানমন্ত্রী নিখোঁজ ৷ যে তাঁকে খুঁজে দিতে পারবেন, তাঁকে সুইস ব্যাঙ্ক থেকে টাকা দেওয়া হবে ৷"

সাগর আর মনোরঞ্জন লাফিয়ে নীচে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পা থেকে হলুদ রঙের ধোঁয়া বেরতে থাকে ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের জুতোগুলি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছিল ৷ তাতে বড় গর্ত রয়েছে ৷ সেখানেই লুকিয়ে রাখা হয়েছিল স্মোক ক্যান ৷ অভিযুক্ত সাগর শর্মা লখনউ থেকে ওই ক্যানগুলি নিয়ে এসেছিল ৷ জেরার মুখে অভিযুক্তরা জানিয়েছে, তারা ভগৎ সিংয়ের বোমা ছোড়ার ঘটনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এই কাজ করেছে ৷ তাই স্মোক বোমার পর প্যামফ্লেটও ছোড়ার কথা ছিল ৷ তবে তার আগেই দু'জনকে ধরে ফেলেন সাংসদরা ৷ এমনকী অভিযুক্তদের কাছ থেকে তেরঙাও পাওয়া গিয়েছে ৷ কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তরুণদের প্ররোচিত করতে আরও বেশ কিছু ব্যানার এনেছিল সাগর, মনোরঞ্জন ৷ তাতে বিজেপি সরকার বিরোধী কথা লেখা আছে ৷

অভিযুক্তরা সবাই মিলে সোশাল মিডিয়ায় 'ভগৎ সিং যুব ফ্যান ক্লাব' নামের একটি পেজও তৈরি করেছিল ৷ তবে পরে সেই পেজটি মুছে ফেলা হয় ৷ অভিযুক্তরা জানিয়েছে, কৃষক আন্দোলন, মণিপুর সংঘর্ষ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে বার্তা দিতে চেয়েছিল ৷

সাগর, মনোরঞ্জন, নীলম, অমলদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খতিয়ে দেখছে পুলিশ ৷ যদি অন্য কোনও সংগঠন তাদের অর্থ দিয়ে থাকে, তা জানার চেষ্টা চলছে ৷ বৃহস্পতিবার এই চারজনকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির একটি আদালত ৷ অভিযুক্তদের এনআইএ-র বিশেষ বিচারকের সামনে পেশ করা হয় ৷ তিনি তাদের 15 দিনের হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ৷ দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল পাঁচজনের বিরুদ্ধে কঠোর ইউএপিএ ধারায় এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে ৷

আরও পড়ুন:

  1. রাজস্থান থেকে দিল্লি ফিরেই আত্মসমর্পণ সংসদ হামলার 'মাস্টারমাইন্ড' ললিতের
  2. সংসদে হামলার তদন্তে নয়া মোড়! 5 অভিযুক্তের নেপথ্যে ষড়যন্ত্রী অন্য কেউ, চাঞ্চল্যকর দাবি দিল্লি পুলিশের
  3. সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের জেরে দর্শক গ্যালারির জন্য আর কোনও পাশ ইস্যু করা হবে না

নয়াদিল্লি, 15 ডিসেম্বর: শহিদ ভগৎ সিংয়ের থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই সংসদে হামলা করেছে অভিযুক্তরা ৷ জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ ৷ 13 ডিসেম্বর লোকসভায় শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন দর্শকাসন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাগর শর্মা ও মনোরঞ্জন ডি ৷ আর একই সময়ে সংসদের বাইরে স্লোগান দিচ্ছিল অমল ও নীলম ৷ তাদের সবাই এখন পুলিশি হেফাজতে ৷ এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে নিজেই থানায় আত্মসমর্পণ করেছে এই হামলার মূল অভিযুক্ত ললিত মোহন ঝা ৷ তারা সবাই শহিদ ভগৎ সিংকে নকল করার চেষ্টায় এই কাণ্ড করেছে বলে জানা গিয়েছে ৷

1929 সালের 8 এপ্রিল ৷ দিল্লির সেন্ট্রাল অ্যাসেম্বলিতে বোমা মারেন ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত ৷ এর সঙ্গে এলোপাথাড়ি গুলি করতে থাকেন ভগৎ সিং ৷ আর বটুকেশ্বর দত্ত হিন্দুস্তান সোশালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশন বা এইচএসআরএ-র প্যামফ্লেট ছুড়তে থাকেন সেন্ট্রাল অ্যাসেম্বলির অন্দরে ৷ এই অ্যাসেম্বলিই এখন পুরনো সংসদ ভবন৷ তাঁরা দু'জনেই সেদিন স্লোগান দিয়েছিলেন 'ইনকিলাব জিন্দাবাদ' । যার অর্থ বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা নিপাত যাক ৷ আগে থেকে পরিকল্পনা করে সেদিন হামলা চালিয়েছিলেন দুই বিপ্লবী ৷

ঠিক এমনটাই করতে চেয়েছিল সাগর, মনোরঞ্জন, নীলম, অমল এবং ললিত ৷ 13 ডিসেম্বর, বুধবার লোকসভায় শীতকালীন অধিবেশনে জিরো আওয়ারে হঠাৎ দর্শকাসন থেকে লাফিয়ে হামলা চালায় সাগর আর মনোরঞ্জন ৷ তাদেরও লোকসভা কক্ষে প্যামফ্লেট ছুড়ে ফেলার পরিকল্পনা ছিল ৷ বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশ জানায়, তাদের কাছ থেকে সেই প্যামফ্লেট পাওয়া গিয়েছে ৷ তাতে লেখা রয়েছে, "প্রধানমন্ত্রী নিখোঁজ ৷ যে তাঁকে খুঁজে দিতে পারবেন, তাঁকে সুইস ব্যাঙ্ক থেকে টাকা দেওয়া হবে ৷"

সাগর আর মনোরঞ্জন লাফিয়ে নীচে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পা থেকে হলুদ রঙের ধোঁয়া বেরতে থাকে ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের জুতোগুলি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছিল ৷ তাতে বড় গর্ত রয়েছে ৷ সেখানেই লুকিয়ে রাখা হয়েছিল স্মোক ক্যান ৷ অভিযুক্ত সাগর শর্মা লখনউ থেকে ওই ক্যানগুলি নিয়ে এসেছিল ৷ জেরার মুখে অভিযুক্তরা জানিয়েছে, তারা ভগৎ সিংয়ের বোমা ছোড়ার ঘটনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এই কাজ করেছে ৷ তাই স্মোক বোমার পর প্যামফ্লেটও ছোড়ার কথা ছিল ৷ তবে তার আগেই দু'জনকে ধরে ফেলেন সাংসদরা ৷ এমনকী অভিযুক্তদের কাছ থেকে তেরঙাও পাওয়া গিয়েছে ৷ কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তরুণদের প্ররোচিত করতে আরও বেশ কিছু ব্যানার এনেছিল সাগর, মনোরঞ্জন ৷ তাতে বিজেপি সরকার বিরোধী কথা লেখা আছে ৷

অভিযুক্তরা সবাই মিলে সোশাল মিডিয়ায় 'ভগৎ সিং যুব ফ্যান ক্লাব' নামের একটি পেজও তৈরি করেছিল ৷ তবে পরে সেই পেজটি মুছে ফেলা হয় ৷ অভিযুক্তরা জানিয়েছে, কৃষক আন্দোলন, মণিপুর সংঘর্ষ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে বার্তা দিতে চেয়েছিল ৷

সাগর, মনোরঞ্জন, নীলম, অমলদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খতিয়ে দেখছে পুলিশ ৷ যদি অন্য কোনও সংগঠন তাদের অর্থ দিয়ে থাকে, তা জানার চেষ্টা চলছে ৷ বৃহস্পতিবার এই চারজনকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির একটি আদালত ৷ অভিযুক্তদের এনআইএ-র বিশেষ বিচারকের সামনে পেশ করা হয় ৷ তিনি তাদের 15 দিনের হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ৷ দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল পাঁচজনের বিরুদ্ধে কঠোর ইউএপিএ ধারায় এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে ৷

আরও পড়ুন:

  1. রাজস্থান থেকে দিল্লি ফিরেই আত্মসমর্পণ সংসদ হামলার 'মাস্টারমাইন্ড' ললিতের
  2. সংসদে হামলার তদন্তে নয়া মোড়! 5 অভিযুক্তের নেপথ্যে ষড়যন্ত্রী অন্য কেউ, চাঞ্চল্যকর দাবি দিল্লি পুলিশের
  3. সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের জেরে দর্শক গ্যালারির জন্য আর কোনও পাশ ইস্যু করা হবে না
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.