মিসামারি (অসম), 18 অক্টোবর : অরুণাচলপ্রদেশের ভারত-চিন সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারের মতো বাহনের সংখ্যা বাড়াচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনী ৷ মোতায়েন করা হয়েছে স্বয়ংক্রিয় বিমানও ৷ এত দিন মূলত চিতা (Cheetah) হেলিকপ্টারই ব্যবহার করত সেনাবাহিনী ৷ এখন তাদের হাতে এসেছে স্বয়ংক্রিয় বিমান ‘হেরন’ (Heron), হালকা ওজনের অত্যাধুনি হেলিকপ্টার ‘এএলএইচ-ধ্রুব’ (ALH Dhruv) এবং সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত হেলিকপ্টার ‘রুদ্র’ (Rudra) ৷ ফলে চিন সীমান্তে নিজেদের শক্তি বাড়াতে আরও তৎপর হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী ৷
আরও পড়ুন : Ladakh talks : মাঝপথে বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় ভারতের বিরুদ্ধে তোপ চিনের
সেনাবাহিনী সূত্রে খবর, সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এএলএইচ-ধ্রুব হেলিকপ্টারে দু’টি ইঞ্জিন রয়েছে ৷ অত্যাধুনিক এই হেলিকপ্টারের ওজন সাড়ে পাঁচ টন ৷ যে কোনও জায়গায় বাহিনীকে দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই হেলিকপ্টার আদর্শ ৷ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে হেলিকপ্টার রুদ্রর মোতায়েনও এই প্রথম ৷ একাধিক রকেট ও আগ্নেয়াস্ত্র এই হেলিকপ্টারের অঙ্গ ৷ শুধু হামলা করা নয়, শত্রুকে তাড়া করার ক্ষেত্রেও এটি একটি অত্যন্ত ভাল বাহন ৷
বাহিনীর এই পদক্ষেপ নিয়ে বলতে গিয়ে এক সেনা আধিকারিক জানান, ‘‘অত্যাধুনিক ধ্রুব হেলিকপ্টার একজন তিরন্দাজদের মতো ৷ যে কিনা শত্রুর উপর হামলা চালিয়ে তাকে আহত করবে ৷ দূর থেকেই শত্রুকে নিকেশ করতে পারবে ৷ এই বাহন আসলে অনেকটা উগ্র কোনও দেবতার মতো ৷ যে শত্রু শিবিরে মৃত্যু আর ধ্বংস ডেকে আনবে ৷’’ আর এক সেনা আধিকারিক লেফটেন্য়ান্ট কর্নেল অমিত দধওয়াল জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বাহিনীর হাতে ঘূর্ণায়মান প্ল্য়াটফর্ম এসে পৌঁছেছে ৷ সঙ্গে রয়েছে অত্যাধুনিক সব সামরিক বাহন ৷ যা আকাশপথে হামলা চালাতে সক্ষম ৷ এর ফলে আগামিদিনে ভারতীয় সেনা যেকোনও অভিযানে সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কর্নেল দধওয়াল ৷
আরও পড়ুন : India-China 13th Meet : এলএসি-র মলডোতে ভারত-চিন 13তম বৈঠক
ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে মেজর কার্তিক গর্গ জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকায় ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে চিনের সেনা ৷ আর সেই কারণেই যেকোনও পরিস্থিতির জন্য ভারতেরও প্রস্তুত থাকা উচিত ৷ মেজর বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই নজরদারির ক্ষেত্রে যুদ্ধবিমান অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে ৷ নীচে দাঁড়িয়ে থাকা কমান্ডারদের পরস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করতে এই যুদ্ধবিমানগুলি 30 হাজার ফুট উচ্চতা পর্যন্ত উড়তে পারে এবং সেখান থেকেই নীচে তথ্য সরবরাহ করতে পারে ৷ এর ফলে প্রয়োজন মাফিক আমরা বাহিনীকে প্রস্তুত করতে পারি ৷ কাজটা করতে সময় লাগে 24 থেকে 30 ঘণ্টা ৷’’
প্রসঙ্গত, সিকিম থেকে অরুণাচলপ্রদেশ পর্যন্ত ভারত-চিন সীমান্তের দৈর্ঘ্য 1 হাজার 346 কিলোমিটার ৷ গত 18 মাস ধরে চিনের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছে ভারত ৷ শেষবার দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে কমান্ডারস্তরে মোট 13 দফা বৈঠক হয়েছে ৷ কিন্তু তাতেও বিবাদের মীমাংসা কিছুই হয়নি ৷ শেষবার এই বৈঠক হয় গত 10 অক্টোবর ৷