বেঙ্গালুরু, 8 মে: কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচন বুধবার ৷ তার আগে আজ শেষ দফার প্রচার করছে শাসক বিজেপি এবং বিরোধী কংগ্রেস ও জেডিএস ৷ পরীক্ষায় বসার আগে রাজ্যের প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলই সোমবারের প্রচারে ঝড় তুলেছে ৷ ভোটারদের সমর্থন পেতে শেষবারের মতো চেষ্টা করবে এই তিন দল ৷ তবে, গত এক সপ্তাহে এই তিন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কর্ণাটকের প্রতিটি শহর ও গ্রামে জোরদার প্রচার চালিয়েছে ৷ এমনকি কর্ণাটকের গত 38 বছরের সরকার গঠনের রীতি বদলাতে নিজেদের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছে ৷
গত 38 বছরে দক্ষিণের এই রাজ্যে কোন রাজনৈতিক দলই একদফার বেশি ক্ষমতায় আসতে পারেনি ৷ এমনকী 2018 সালের বিধানসভা নির্বাচনেও ত্রিশঙ্কু হয়েছিল সে রাজ্যে ৷ বিজেপি সরকার গড়লেও, জেডিএস ও কংগ্রেসের ভোট পরবর্তী জোটের ফলে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছিলেন বিএস ইয়েদুরাপ্পা ৷ পরবর্তীকালে কংগ্রেস বিধায়করা বিজেপিতে যোগ দিলে 2019 সালে ফের ক্ষমতায় আসে বিজেপি ৷ যদিও, সেই সময় বিজেপির বিরুদ্ধে 'ঘোড়া কেনাবেচা'র অভিযোগ তুলেছিল কংগ্রেস ও জেডিএস ৷
তবে, সেসব অতীত ৷ 2023 বিধানসভা নির্বাচনে এবার নতুন পরীক্ষার সামনে কংগ্রেস ৷ অন্যদিকে, নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা এবং তাঁর নেতৃত্বে কর্ণাটক বিধানসভায় ফের একবার ক্ষমতায় আসার লড়াই শুরু করেছে পদ্মশিবির ৷ কংগ্রেস নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য সবরকম চেষ্টা করেছে নির্বাচনী প্রচারে ৷ 2024 লোকসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রে প্রধান বিরোধী হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে, কর্ণাটকের সিংহাসনে ফেরার জন্য প্রচারে জোর লাগিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস ৷
এমনকী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইডি দেবগৌড়ার নেতৃত্বে জেডিএস নিজেদের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করেছে নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ৷ তারা ঘোষণা করেছে, জনতা দল সেকুলার 'কিং' হতে চায়, 'কিং-মেকার' নয় ৷ স্পষ্টতই কংগ্রেসের ধারে কাছেও যেতে রাজি নয় এইচডি দেবগৌড়া এবং কুমারস্বামীর দল ৷ এমনকী সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাও তারা পাবে বলে জানিয়েছে জেডিএস নেতৃত্ব ৷ উল্লেখ্য, 2019 সালে ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর থেকেই বছরে নিজেদের সংগঠন মজবুত করার কাজ শুরু করেছিল জেডিএস ৷
আরও পড়ুন: কর্ণাটকে শেষবেলার প্রচারে কংগ্রেসকে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির সঙ্গে তুলনা মোদির
তবে, শুধু জেডিএস নয়, কর্ণাটক বিধানসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে সরকার গঠনের স্লোগান শোনা গিয়েছে বিজেপি ও কংগ্রেসের প্রচারেও ৷ 224 আসনের কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রিয় স্লোগানও ছিল 'একক সংখ্যাগরিষ্ঠের সরকার' ৷ উদ্দেশ্য একটাই ৷ এককভাবে শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী সরকার গঠন ৷ যেখানে বিজেপির প্রচারের পুরোটাই ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন্দ্রিক ৷ গেরুয়া শিবিরের স্লোগান ছিল, ‘‘মোদির নেতৃত্বে ডবল ইঞ্জিন সরকার ৷’’ যেখানে কেন্দ্রীয় সুযোগ-সুবিধা এবং উন্নয়নের ভাগীদার হতে বিজেপিই একমাত্র বিকল্প, সেই বার্তাই তুলে ধরা হয়েছে ৷ 150 আসন নিয়ে ক্ষমতার ফেরার লক্ষ্য নিয়েছে বিজেপি ৷
আরও পড়ুন: ধর্মকে শিখণ্ডী করে প্রচারের অভিযোগ, কর্ণাটকে মোদির উপর নিষেধাজ্ঞার দাবি গেহলতের
অন্যদিকে, কংগ্রেস তাদের প্রচারে লক্ষ্য রেখেছিল স্থানীয় সমস্যাগুলিতে ৷ আর তাই স্থানীয় নেতৃত্বদের ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছে কংগ্রেস ৷ কর্ণাটকের মানুষের সরকারের কাছে কী চাওয়া-পাওয়ার আশা রয়েছে ? কোথায় সমস্যা হচ্ছে ? সেই সব নিয়েই প্রচারে নেমেছিলেন স্থানীয় নেতারা ৷ আর সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধি এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধিরা বেশ কয়েকটি জনসভা করেছেন ৷ কংগ্রেসের প্রধান লক্ষ্য ছিল, স্থানীয় নেতৃত্বকে সামনে রেখে মানুষের সমস্যাগুলিকে তুলে ধরা ৷