ETV Bharat / bharat

সিয়াচেনে তুষার ঝড় ও ভারতীয় জওয়ানরা - ice crashing down on Siachen's braves

বিশ্বের উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্র সিয়াচেনের বানা পোস্টের নিষ্ঠুর আবহাওয়া মানুষের কাছে কঠিনতম অঞ্চলে পরিণত করেছে । মেরু অঞ্চলের পর এটাই দ্বিতীয় বৃহত্তম হিমবাহ । সোমবার সেনাবাহিনীর টহলদারির সময় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 20 হাজার ফুট উঁচুতে ভয়ংকর তুষারধস নামে । তাতে চাপা পড়েন আটজন সেনা ।

সিয়াচেনে তুষার ঝড় ও ভারতীয় জওয়ানরা
author img

By

Published : Nov 20, 2019, 5:10 PM IST

দিল্লি, 20 নভেম্বর : বিশ্বের উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্র সিয়াচেনের বানা পোস্টের নিষ্ঠুর আবহাওয়া মানুষের কাছে কঠিনতম অঞ্চলে পরিণত করেছে । মেরু অঞ্চলের পর এটাই দ্বিতীয় বৃহত্তম হিমবাহ । আদতে এটি একটি মৃত্যু উপত্যকা, যেখানে অক্সিজেন দুর্লভ, মানুষের জীবন ধারণের পক্ষে জায়গাটা অত্যন্ত কঠিন ।

গত সোমবার সেনাবাহিনীর টহলদারির সময় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 20 হাজার ফুট উঁচুতে ভয়ংকর তুষারধস নামে । তাতে চাপা পড়েন আটজন সেনা । তাঁরা সেদিন সেখানে রুটিন টহলদারি করছিলেন ।

এটা বোধ হয় এমন একটা জায়গা যেখানে ঘাস জন্মায় না, কিন্তু এই বানা পোস্ট থেকে সালটারো শৈলশিরা এবং সিয়াচেন হিমবাহ স্পষ্ট দেখা যায় । সেনাবাহিনীর কাছে বোঝানোর দরকার নেই জায়গাটার গুরুত্ব কতটা, দেশের বৃহত্তম স্বচ্ছ জলের সংরক্ষণ এলাকাটিও এখানে ।

প্রায় 21 হাজার ফুট উঁচুতে সুবেদার মেজর এবং অবৈতনিক ক্যাপটেন বানা সিংয়ের অমর কৃতিত্বের কথা স্মরণে রেখেই বানা পোস্টকে স্মরণ করা হয় । 1987-র 26 জুলাই বানা সিং 15 হাজার ফুট উচ্চতায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে খুব অল্প সংখ্যক সেনা নিয়ে বীরের মতো লড়াই চালিয়ছিলেন ।

টহলদারির জন্য উত্তর সিয়াচেনে মোতায়েন ছিল আটজনের একটি দল । দুপুর তিনটে নাগাদ আচমকাই বিশাল তুষারধস নামে । তাতে সবাই চাপা পড়েন । খবর পেয়ে সেনার অন্য একটি দল কিছুক্ষণ পরেই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে তল্লাশি অভিযান শুরু করে । ঘটনাস্থান চিহ্নিত করার পর শুরু হয় পুরু বরফের স্তর সরিয়ে তাঁদের উদ্ধারকাজ । উদ্ধারের পরে হেলিকপ্টারে করে স্থানীয় সেনা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় । কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই 6 জন মারা যান । এর মধ্যে চার সেনা জওয়ান ও দুই মালবাহক ।

মঙ্গলবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং কথা বলেন সেনা প্রধান বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে । তদন্তের স্বার্থে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সিয়াচেনে একটি সরকারি সফরে যাওয়ার কথা জানান । সেনা কর্মীদের মৃত্যুর জন্য টুইট করে শোক প্রকাশ করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী । তিনি লেখেন, 'তুষারধসে সেনা জওয়ান ও মালবাহকদের মৃত্যুর খবরে আমি গভীর ভাবে শোকাহত । ওঁদের সাহসিকতা ও দেশের জন্য বলিদানকে কুর্নিশ করি । পরিবারকে জানাই গভীর সমবেদনা ।'

2016 সালের ফেব্রুয়ারিতে সিয়াচেনে 19,500 ফুট উঁচুতে প্রায় একই রকম তুষারধসের কবলে পড়েছিলেন 10জন সেনা জওয়ান। 35 ফুট পুরু বরফের স্তরের নীচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থানে 9 জনের মৃত্যু হলেও জীবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয় ল্যান্সনায়ক 33 বছরের হনুমানাথাপ্পা কোপ্পাড়কে । যদিও তিনদিন পর হাসপাতালে তাঁরও মৃত্যু হয় । সোমবারের তুষারধস ফের মনে করিয়ে দিয়েছে প্রায় সাড়ে তিন বছর আগের সেই ঘটনা ।

1984 থেকে 2018 সাল পর্যন্ত অর্থাৎ, 34 বছরে 869 জন ভারতীয় জওয়ান সিয়াচেনে প্রাণ হারিয়েছেন, এঁরা কিন্তু কেউই যুদ্ধেক্ষেত্রে প্রাণ হারাননি ।

2002 সালের 7 এপ্রিল ভয়ংকর ধসের কারণে 135 জন পাকিস্থানী সেনা প্রাণ হারিয়েছিলেন ।

এটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ যে উচ্চ হিমালয়ে হিমবাহ পতনের হার গত তিন শতকে অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, এ পিছনে কাজ করছে বিশ্ব উষ্ণায়ণের কালো ছায়া । এর ফলে তাপমাত্রা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার ফলে তুষার ঝড়ের পরিমাণ বাড়ছে ।

সঞ্জীবকুমার বড়ুয়া

দিল্লি, 20 নভেম্বর : বিশ্বের উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্র সিয়াচেনের বানা পোস্টের নিষ্ঠুর আবহাওয়া মানুষের কাছে কঠিনতম অঞ্চলে পরিণত করেছে । মেরু অঞ্চলের পর এটাই দ্বিতীয় বৃহত্তম হিমবাহ । আদতে এটি একটি মৃত্যু উপত্যকা, যেখানে অক্সিজেন দুর্লভ, মানুষের জীবন ধারণের পক্ষে জায়গাটা অত্যন্ত কঠিন ।

গত সোমবার সেনাবাহিনীর টহলদারির সময় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 20 হাজার ফুট উঁচুতে ভয়ংকর তুষারধস নামে । তাতে চাপা পড়েন আটজন সেনা । তাঁরা সেদিন সেখানে রুটিন টহলদারি করছিলেন ।

এটা বোধ হয় এমন একটা জায়গা যেখানে ঘাস জন্মায় না, কিন্তু এই বানা পোস্ট থেকে সালটারো শৈলশিরা এবং সিয়াচেন হিমবাহ স্পষ্ট দেখা যায় । সেনাবাহিনীর কাছে বোঝানোর দরকার নেই জায়গাটার গুরুত্ব কতটা, দেশের বৃহত্তম স্বচ্ছ জলের সংরক্ষণ এলাকাটিও এখানে ।

প্রায় 21 হাজার ফুট উঁচুতে সুবেদার মেজর এবং অবৈতনিক ক্যাপটেন বানা সিংয়ের অমর কৃতিত্বের কথা স্মরণে রেখেই বানা পোস্টকে স্মরণ করা হয় । 1987-র 26 জুলাই বানা সিং 15 হাজার ফুট উচ্চতায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে খুব অল্প সংখ্যক সেনা নিয়ে বীরের মতো লড়াই চালিয়ছিলেন ।

টহলদারির জন্য উত্তর সিয়াচেনে মোতায়েন ছিল আটজনের একটি দল । দুপুর তিনটে নাগাদ আচমকাই বিশাল তুষারধস নামে । তাতে সবাই চাপা পড়েন । খবর পেয়ে সেনার অন্য একটি দল কিছুক্ষণ পরেই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে তল্লাশি অভিযান শুরু করে । ঘটনাস্থান চিহ্নিত করার পর শুরু হয় পুরু বরফের স্তর সরিয়ে তাঁদের উদ্ধারকাজ । উদ্ধারের পরে হেলিকপ্টারে করে স্থানীয় সেনা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় । কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই 6 জন মারা যান । এর মধ্যে চার সেনা জওয়ান ও দুই মালবাহক ।

মঙ্গলবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং কথা বলেন সেনা প্রধান বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে । তদন্তের স্বার্থে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সিয়াচেনে একটি সরকারি সফরে যাওয়ার কথা জানান । সেনা কর্মীদের মৃত্যুর জন্য টুইট করে শোক প্রকাশ করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী । তিনি লেখেন, 'তুষারধসে সেনা জওয়ান ও মালবাহকদের মৃত্যুর খবরে আমি গভীর ভাবে শোকাহত । ওঁদের সাহসিকতা ও দেশের জন্য বলিদানকে কুর্নিশ করি । পরিবারকে জানাই গভীর সমবেদনা ।'

2016 সালের ফেব্রুয়ারিতে সিয়াচেনে 19,500 ফুট উঁচুতে প্রায় একই রকম তুষারধসের কবলে পড়েছিলেন 10জন সেনা জওয়ান। 35 ফুট পুরু বরফের স্তরের নীচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থানে 9 জনের মৃত্যু হলেও জীবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয় ল্যান্সনায়ক 33 বছরের হনুমানাথাপ্পা কোপ্পাড়কে । যদিও তিনদিন পর হাসপাতালে তাঁরও মৃত্যু হয় । সোমবারের তুষারধস ফের মনে করিয়ে দিয়েছে প্রায় সাড়ে তিন বছর আগের সেই ঘটনা ।

1984 থেকে 2018 সাল পর্যন্ত অর্থাৎ, 34 বছরে 869 জন ভারতীয় জওয়ান সিয়াচেনে প্রাণ হারিয়েছেন, এঁরা কিন্তু কেউই যুদ্ধেক্ষেত্রে প্রাণ হারাননি ।

2002 সালের 7 এপ্রিল ভয়ংকর ধসের কারণে 135 জন পাকিস্থানী সেনা প্রাণ হারিয়েছিলেন ।

এটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ যে উচ্চ হিমালয়ে হিমবাহ পতনের হার গত তিন শতকে অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, এ পিছনে কাজ করছে বিশ্ব উষ্ণায়ণের কালো ছায়া । এর ফলে তাপমাত্রা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার ফলে তুষার ঝড়ের পরিমাণ বাড়ছে ।

সঞ্জীবকুমার বড়ুয়া

Kolkata, Nov 20 (ANI): Players of Bangladesh cricket team were seen practicing with pink ball at Eden Gardens ahead of the 1st-ever day-night test match of the team scheduled to begin on November 22. It will be the 1st instance where Indian and Bangladesh will play with pink ball. Eden Gardens has also been decorated with pink lights and historic match has got a special mascot.
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.