দিল্লি, 17 ডিসেম্বর : নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন, 2019-র বিরুদ্ধে দিল্লি ও আলিগড়ে ছাত্রদের আন্দোলনে পুলিশের গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে । এই ঘটনাকে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে । তিনি রবিবার জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন । উদ্ধব ঠাকরে বলেন, "এই ঘটনা আমাদের স্বাধীনতার আগে জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘটনার কথা মনে পড়িয়ে দেয় ।"
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় রবিবার রাতে গন্ডগোল হয় । তারপর ক্যাম্পাসে ঢুকে ছাত্রদের বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ ওঠে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় । ওই ঘটনায় জখম একাধিক পড়ুয়ারা দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । তাঁদের মধ্যে দুজনের শরীরে গুলির ক্ষত রয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সূত্রে দাবি করা হয়েছে, রবিবার ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ গুলি চালায়নি ।
উদ্ধব বলেন, "দেশজুড়ে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যেখানে পুলিশ দিল্লির ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছিল এবং শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালায়। যা আমাকে মনে করিয়ে দেয়, জালিয়ানওয়ালাবাগের ট্র্যাজেডি । " তিনি প্রশ্ন তোলেন, "আমরা কি শিক্ষার্থীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করে এই দেশে জালিয়ানওয়ালাবাগের মতো পরিস্থিতি তৈরি করছি?" রবিবার রাতের ওই ঘটনা নিয়ে আজ কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন উদ্ধব ঠাকরে । তিনি ছাত্রদের সমর্থনে বলেন "যে দেশ বা রাজ্যে যুবকরা ক্ষিপ্ত সেখানে শান্তি থাকতে পারে না । তারুণ্য আমাদের শক্তি। আমরা শীঘ্রই সর্বাধিক সংখ্যক যুবকের দেশ হব । যুব শক্তি একটি বোমা এবং সরকার যেন এতে আগুন না লাগায় ।"
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির প্রতিবাদে দক্ষিণ দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা রবিবার রাতে তুমুল বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে । শতাধিক মোটর বাইক ও তিনটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা । পুলিশ বিক্ষোভ বন্ধ করতে সেখানে পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয় । বিক্ষোভ দমন করতে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পডু়য়াদের বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে । ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, শুধু লাঠিপেটা করাই নয়, গুলিও চালিয়েছে পুলিশ ।