ফ্রান্সের ইস্ট্রেস এয়ারবেস থেকে ভারতের পথে রওনা দিয়েছে পাঁচটি রাফাল যুদ্ধবিমান ৷ যুদ্ধবিমানগুলি ভারতের অম্বালা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে পৌঁছবে আগামীকাল অর্থাৎ 29 জুলাই ৷ এই পাঁচটি যুদ্ধবিমানের মধ্যে রয়েছে তিনটি সিঙ্গল সিটার এবং দুইটি টুইন সিটার যুদ্ধবিমান । ভারতীয় বিমানবাহিনীর 17 নম্বর 'গোল্ডেন অ্যারোজ়'-এ যুক্ত হবে এই পাঁচটি যুদ্ধবিমান । 2016 সালের সেপ্টেম্বরে ভারত ফ্রান্সের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে । সেই চুক্তি অনুযায়ী, 36টি রাফাল তৈরি করা হবে । যার খরচ প্রায় 59 হাজার কোটি টাকা । বিমানবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার জন্য এই পদক্ষেপ প্রতিরক্ষামন্ত্রকের । রাফালের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য ভারতীয় বায়ুসেনা খরচ করেছে প্রায় 400 কোটি টাকা । বিমানগুলি রাখার শেল্টার, হ্যাঙার এবং দুইটি বেস মেন্টেনেন্সের ব্যবস্থা করা হচ্ছে । রাফাল যুদ্ধবিমানের প্রথম স্কোয়ারডন মোতায়েন থাকবে অম্বালা বায়ুসেনাঘাঁটিতে । দ্বিতীয় স্কোয়ারডন থাকবে পশ্চিমবঙ্গের হাসিমারা বেসে । 2022-র এপ্রিলের মধ্যে 36টি যুদ্ধবিমান ভারত পেয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে ।
ভারতের সক্রিয় ফাইটার স্কোয়ারডনগুলি : ভারতীয় বায়ুসেনার এখন 30টি সক্রিয় স্কোয়ারডন রয়েছে । প্রত্যেক স্কোয়ারডনের 18টি করে যুদ্ধবিমান রয়েছে । তথ্য অনুযায়ী, ভারতের এখন 538টি যুদ্ধবিমান রয়েছে ।
রাফাল যুদ্ধবিমানের বিশেষত্ব :
- এটি জোড়া ইঞ্জিনের যুদ্ধবিমান - রাফাল যুদ্ধবিমানে দুইটি M88-2 ইঞ্জিন রয়েছে । প্রত্যেকটিতে 75kN থ্রাস্ট রয়েছে ।
- মাঝরাস্তায় যুদ্ধবিমানগুলি একে অপরকে সাহায্য করতে পারে - রাফাল যুদ্ধবিমানে রয়েছে 'বাডি-বাডি' ব্যবস্থা ।
- ভিজ়ুয়াল রেঞ্জের বাইরে থাকলেও টার্গেটকে লক্ষ্য করে METEOR ফায়ার করতে পারে রাফাল ।
- SCALP মিসাইল 300 কিলোমিটার দূরত্ব থেকেই টার্গেটকে নিশানা করতে পারে ।
- একইসঙ্গে ছয়টি AASM মিজ়াইল বহন করতে পারে - প্রত্যেক AASM মিজ়াইলে GPS রয়েছে ।
- এর রয়েছে হলোগ্রাফিক ককপিট ডিসপ্লে ।
- একইসঙ্গে আটটি টার্গেটকে নিশানা করতে পারে রাফাল ।
- আধুনিক যুদ্ধবিমানে থাকবে লেথাল HAMMER মিজ়াইল ।
বায়ুসেনার প্রধান যুদ্ধবিমানগুলি :
SU-30 MKI : জোড়া সিটার এবং জোড়া ইঞ্জিন রয়েছে । একটি X 30mm GSH গান রয়েছে । এর সর্বোচ্চ গতিবেগ 2500কিমি/ ঘণ্টা । 2002 সালে সেপ্টেম্বর থেকে এই যুদ্ধবিমানটি বায়ুসেনায় রয়েছে ।
যুদ্ধবিমান মিরাজ-2000 : এটি সিঙ্গল সিটার । ফ্রান্সে তৈরি । সিঙ্গল ইঞ্জিন দ্বারা চালিত । সর্বোচ্চ গতিবেগ 2495 কিমি/ ঘণ্টা । এটিতে দুইটি 30mm কামান রয়েছে । 1985 সালে বাহিনীতে নিয়ে আসা হয় যুদ্ধবিমানটি । কার্গিল যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল বিমানটি ।
যুদ্ধবিমান MiG -29 : দুইটি ইঞ্জিন দ্বারা চালিত । সিঙ্গল সিটার । রাশিয়ায় তৈরি । সর্বোচ্চ গতিবেগ 2445 কিমি/ঘণ্টা । একটি 30mm-র কামান রয়েছে । ভারতীয় বিমানবাহিনী বর্তমানে MiG-29 UPG ব্যবহার করে । অত্যাধুনিক MiG-29 । কার্গিল যুদ্ধে এই বিমান ব্যবহার করা হয়েছিল । 1985 সালে এই যুদ্ধবিমান ভারতীয় বিমানবাহিনীতে নিয়ে আসা হয় ।
যুদ্ধবিমান MiG-21 BISON : MiG-21 এর আপগ্রেডেড ভার্সন । 1980-র প্রথমদিকে বাহিনীতে এই যুদ্ধবিমান নিয়ে আসা হয় । রাশিয়ায় তৈরি । সিঙ্গল ইঞ্জিন দ্বারা চালিত এবং সিঙ্গল সিটার । 2230কিমি/ঘণ্টা গতিবেগ । 23mm টুইন-ব্যারেল কামান রয়েছে । ভারতীয় বিমানবাহিনীর 'মেরুদণ্ড' বলা হয় এই যুদ্ধবিমানকে ।
যুদ্ধবিমান জাগুয়ার : দুইটি ইঞ্জিন দ্বারা চালিত । সিঙ্গল সিটার । সর্বোচ্চ গতিবেগ 1350কিমি/ঘণ্টা । দুইটি 30mm বন্দুক রয়েছে । ভারতীয় বিমানবাহিনীতে প্রথম 1979 সালের 26জুলাই নিয়ে আসা হয় এই বিমানটি ।
LCA তেজস : হিন্দুস্তান এয়ারোনটিক্স লিমিটেড 1980 সালে লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট (LCA) প্রোগ্রাম শুরু করে । প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এর নাম রাখেন তেজস । প্রথম তেজস স্কোয়ারডন 2016 সালে তৈরি হয় ।