দিন দিন সাপের ছোবলে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে দেশে । গ্রামাঞ্চলেই এই মৃত্যুর হার বেশি । কিন্তু সেই সমস্ত এলাকায় এখনও সাপে কাটার চিকিৎসার পরিকাঠামো ততটা উন্নত হয়নি । এই পরিস্থিতিতে কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে দেশ । কী অবস্থায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ? দেখে নেওয়া যাক একনজরে ।
সাপের ছোবলে মৃত্যু নিয়ে কানাডার টরেন্টো বিশ্ববিদ্য়ালয়ে ভারত ও ব্রিটেনের গবেষকদের সঙ্গে (CGHR) সেন্টার ফর গ্লোবাল হেল্থ রিসার্চ একটি গবেষণা করেছে । সেই গবেষণার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হল ।
গবেষণার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
- 2001 সাল থেকে 2014 সাল পর্যন্ত 6,11,483 টি নমুনার মধ্যে 2,833 টির বিশ্লেষণ করা হয়েছে । পাশাপাশি 2000-2019 সাল পর্যন্ত 87,590 সাপে কামড়ের ঘটনার উপর লিটারেচার রিভিউ করা হয়েছে ।
- বেশিরভাগ সাপের ছোবলে মৃত্যু সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর অর্থাৎ বৃষ্টিকালে হয়েছে ।
- এই গবেষণায় যে বিষয়গুলি উঠে এসেছে ।
- 2000-2019 সালের মধ্যে সাপের ছোবল কেড়েছে 12 লাখ প্রাণ । বছরে গড়ে প্রায় 58,000 ।
- অর্ধেকের বেশি মৃত্যু 30-69 বছরের মধ্যে । এক চতুর্থাংশ মৃত্যু 15 বছরের নিচে ।
- গ্রামাঞ্চলে মূলত বাড়িতেই সাপের ছোবলে মৃত্যুর পরিমাণ বেশি ।
- 70 বছরের পূর্বে সাপের ছোবলে মৃত্যুর সম্ভাবনা প্রতি 250 জনে একজনের । তবে কিছু এলাকায় ব্যতিক্রমও রয়েছে ।
- আগাম সতর্কতা ও যথাযথ চিকিৎসা পদ্ধতি দেশে সাপের ছোবলে মৃত্যুর হার আংশিকভাবে কমাচ্ছে ।
একনজরে ভারতের সাপের সংখ্যা
দেশে 270 প্রজাতির সাপ রয়েছে । যার মধ্যে 60 প্রজাতির সাপ বিষধর । শুধুমাত্র একধরনেই সাপের বিষের অ্যান্টিভেনম চিকিৎসায় ব্যবহার হয় । মূলত চার ধরনের সাপ থেকে বিষ নিয়ে এই অ্যান্টিভেনম তৈরি হয় । এই চার ধরনের সাপ হল স্পেকট্যাকলড কোবরা, কমন ক্রেট, রাসেলস ভাইপার, স-স্কেলড ভাইপার ।
চারটে সাপের বাইরে যদি অন্য কোনও সাপে কামড়ায়, তাহলে এই অ্যান্টিভেনম কাজ করে না ।
বিশ্বের পরিসংখ্যান
- WHO-র মতে বর্তমানে সাপের ছোবলে মৃত্যুর ঘটনাকে গ্লোবাল হেল্থ প্রায়োরিটি দেওয়া হয়েছে ।
- 2019- র শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর সাপের ছোবলে মৃতের সংখ্যা প্রায় 5.4 মিলিয়ন ।
- প্রতিবছর 100,000 মানুষের মৃত্যু হয় ।
- সাপের কামড়ের পর 400,000 মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে ।
আগাম সতর্কতা
- যেখানে সাপের কামড়ে মৃত্যুর হার বেশি, সেই এলাকায় অ্যান্টিভেনমের সহজলভ্যতা বাড়াতে হবে।
- সরকারি হাসপাতালগুলিতে সাপে কাটার চিকিৎসার পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে ।
- ব্লক ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীদের সাপে কাটার প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে যথাযথভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া ।
- বেশি মাত্রায় অ্যান্টিভেনম তৈরি করা । যাতে হাসপাতালগুলিতে সহজে পরিষেবা দেওয়া যায় ।