দিল্লি, ৬ মার্চ : পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের বালাকোটে আঘাত হানে ভারতীয় বায়ুসেনা। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকিস্তান বায়ুসেনার ২৪টি বিমান। তাতে ছিল ৮টি F-16 যুদ্ধবিমান। পাকিস্তান সরকার দাবি করে, ওই বিমানের ব্যবহার হয়নি। কিন্তু কথাটা যে মিথ্যা তার প্রমাণ ভারতের কাছে আছে। এবার এ বিষয়ে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল কথা বললেন অ্যামেরিকার নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টনের সঙ্গে। সংবাদসংস্থা ANI জানিয়েছে, অজিত দোভাল অ্যামেরিকার নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে জানান, পাকিস্তানের F-16 যুদ্ধবিমান ভারতের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে যে সেনাঘাঁটিতে হামলার চেষ্টা করেছিল, তার নির্দিষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
এছাড়া তাঁরা জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজ়হারকে রাষ্ট্রসংঘ ঘোষিত জঙ্গির তকমা দেওয়া নিয়েও আলোচনা করেছেন বলে জানা গেছে। অ্যামেরিকা, গ্রেট ব্রিটেন ও ফ্রান্সও মাসুদ আজ়হারকে নিষিদ্ধ ঘোষিত করার পক্ষে প্রশ্ন তুলেছে। ইতিমধ্যে মাসুদ আজ়হারের ভাই এবং ছেলে সহ ৪৫ জনকে সতর্কতা মূলক পদক্ষেপ হিসেবে আটক করেছে পাকিস্তান।
ভারত ও অ্যামেরিকার নিরাপত্তা উপদেষ্টার মধ্যে এর আগেও আলোচনা হয়েছে। জঙ্গি হানার পরই জন বল্টন জানিয়েছিলেন, ভারতের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। তিনি বলেন, "অ্যামেরিকা মনে করে নিজের আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে ভারত।"
পুলওয়ামাতে আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় শহিদ হন ৪০ CRPF জওয়ান। পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ হামলার দায় স্বীকার করে। এর ১২ দিন পর প্রত্যাঘাত করে ভারত। ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে পাকিস্তানের বালাকোটে জইশের ট্রেনিং ক্যাম্পে অভিযান চালায় ভারতীয় বায়ুসেনার ১২টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান।
পরের দিনই ভারতের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকিস্তান বায়ুসেনার ২৪টি বিমান। তাতে ছিল ৮টি F-16 যুদ্ধবিমান। ভারতীয় বায়ুসেনার MiG-21 বাইসন, সুখোই-৩০MKI ও মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান পালটা ধাওয়া করে। একটি বিমানকে গুলি করে নামানো হয়। নিখোঁজ হয় ভারতীয় বায়ুসেনার একটি MiG-21 যুদ্ধবিমান ও তার পাইলট অভিনন্দন বর্তমান। পাকিস্তানের হেপাজতে ছিলেন অভিনন্দন। শেষপর্যন্ত ১ মার্চ দেশে ফিরে আসেন অভিনন্দন।
অত্যাধুনিক F-16 যুদ্ধবিমান তৈরি করে অ্যামেরিকান সংস্থা লকহেড মার্টিন। আমেরিকার কাছ থেকে সেটি কিনেছিল পাকিস্তান। নিজেদের দেশে সন্ত্রাস বন্ধে ওই যুদ্ধ বিমান ব্যবহারের শর্তেই তা কেনে ইসলামাবাদ। কিন্তু ভারতের অভিযোগ সেই শর্ত ভেঙে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযানে ব্যবহার করা হয় সেটি।