দিল্লি, 19 এপ্রিল: কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী আজ রাত থেকে দেশের বহু স্থানে লকডাউন শিথিল করা হচ্ছে ৷ চালু হচ্ছে নানা প্রয়োজনীয় পরিষেবা ৷ তবে প্রতিটি স্থানেই বজায় রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ব- দেশে কোরোনা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানানো হল স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফ থেকে ৷
কাল থেকে বিশেষ পরিষেবা ছাড়াও কৃষি ও উদ্যান পালন, মাছ চাষ, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, নির্মাণ শিল্প, প্রাণী সম্পদ বিকাশ, 100 দিনের কাজ শুরু হবে ৷ 50 শতাংশ শ্রমিক নিয়ে চা-কফি-রবার চাষ শুরু করা যাবে ৷ তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই বজায় রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ব ৷ কাজে যোগ দেওয়া সকল ব্যক্তির জন্য মাস্ক পড়াও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ৷
লকডাউনে ছাড় ঘোষণা করা হলেও হটস্পট ও তার সংলগ্ন এলাকাগুলিতে সেই ছাড় কার্যকরী হবে না ৷ লকডাউনের যাবতীয় নিয়ম কার্যকর থাকবে সেই অঞ্চলগুলিতে ৷ বিশেষ পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাই এলাকার বাইরে যেতে পারবেন, বাকি সমস্ত পরিষেবা বন্ধ থাকবে ৷ রেড জ়োনগুলিতে যদি আগামী 14 দিনে নতুন কোনও সংক্রমণ না হয়, তাহলে তা অরেঞ্জ জ়োনে পরিণত হবে ৷ 28 দিনে নতুন করে কোনও ব্যক্তি সংক্রমিত না হলে তা গ্রিন জ়োনে পরিণত হবে ৷ তারপরই সেইসকল এলাকাতে লকডাউন শিথিল করা সম্ভব বলে জানানো হয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে ৷
লকডাউনের শিথিলতায় বহু প্রতিষ্ঠান খুললেও শপিং মল, সিনেমা হলের মতো বিভিন্ন স্থান যেখানে একাধিক মানুষের জমায়েত হতে পারে, তা বন্ধ থাকবে ৷ যেকোনও সামাজিক, রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক জমায়েত নিষিদ্ধ ৷ পরিবহন ব্যবস্থার মধ্যে দূরপাল্লা ও লোকাল ট্রেন, বাস, ট্যাক্সি, অনলাইন ক্যাব পরিষেবা বন্ধ থাকবে ৷
দেশে গত 24 ঘণ্টায় নতুন করে কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন 1334 জন, মারা গিয়েছেন 24 জন ৷ এখনও পর্যন্ত মোট 3,86,791 টি কোরোনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৷ গতকাল মোট 37173টি পরীক্ষা করা হয়েছে ৷ এছাড়া কোরোনা চিকিৎসার জন্য প্রতিটি রাজ্যের কয়েকটি হাসপাতালকে বিশেষভাবে ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ৷
দেশে COVID-19 চিকিৎসার জন্য মোট 755টি নির্দিষ্ট হাসপাতাল ও 1389 টি নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে ৷ সব মিলিয়ে মোট 2144 টি কেন্দ্র রয়েছে দেশজুড়ে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য ৷
হটস্পট এলাকাগুলিতে যে সকল ব্যক্তির মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গ দেখা দেবে, তাঁদের প্রত্যেকের বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা কোরোনা পরীক্ষা করবেন ৷ নমুনা পরীক্ষায় রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে নির্দিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে ৷ সন্দেহজনক ব্যক্তিদের সরকারি কোয়ারান্টাইনে রাখা হবে ৷
আজ কোরোনা প্রতিরোধে প্রতিষেধক প্রস্তুতকরণ ও ওষুধের পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ এছাড়া সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয় যে, কেন্দ্রীয় বায়োটেকনোলজি ডিপার্টমেন্টকে নির্দিষ্টভাবে COVID-19-র টিকা প্রস্তুত করার জন্য ব্যবহার করা হবে ৷
পুলিশকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের কোরোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে যাবতীয় গাইডলাইন মানতে বলা হয়েছে ৷ পরিষেবা প্রদানকারীদের মাস্ক, গ্লাভস পরা বাধ্যতামূলক ৷