দিল্লি, 11 অক্টোবর : উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হাত থেকে এবার হাথরস মামলার তদন্তভার হাতে নিল CBI । হাথরসে এক যুবতিকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে । সরব হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল । যোগী আদিত্যনাথ সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে । এমনকী , এলাহাবাদ কোর্টও আদিত্যনাথ সরকারের সমালোচনা করেছিল । যদিও সমস্ত প্রতিবাদ-বিক্ষোভকে একটি "রাজনৈতিক অভিসন্ধি" বলে মন্তব্য করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী । তারপরও গত সপ্তাহে তিনি হাথরস মামলায় CBI তদন্তের সুপারিশ করেছিলেন । এরপর মামলার তদন্তভার নিল CBI ।
14 সেপ্টেম্বর মা ও দাদার সঙ্গে প্রতিদিনের মতো ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন যুবতি ৷ অভিযোগ, সেই সময় তাঁকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে টানতে টানতে পাশের একটি জমিতে নিয়ে যায় ও ধর্ষণ করে চারজন ৷ জিভ টেনে ছিঁড়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় ৷ তাঁর জিভে গভীর ক্ষত ছিল । JNMC-এ চিকিৎসা চলছিল যুবতির । অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে ভরতি করা হয় । সেখান থেকে পরে AIIMS-এ নিয়ে আসা হয় । চিকিৎসকরা জানান, ওই যুবতির শিরদাঁড়ায় গুরুতর আঘাত ছিল । যার জন্য তিনি পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন । শ্বাসও নিতে পারছিলেন না যুবতি । অবশেষে 29 সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় তাঁর ৷
হাথরসের এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে কম জলঘোলা হয়নি ৷ পরিবারের অনুপস্থিতিতেই হাথরসের নির্যাতিতার শেষকৃত্য সেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল উত্তরপ্রদেশের পুলিশের বিরুদ্ধে । এমনকী , শেষকৃত্যের সময় পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল ।
তারমধ্যেই কয়েকদিন আগে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তরফে জানানো হয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি ৷ জানায়, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যুবতির ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি ৷ ঘাড়ে আঘাত পেয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে ৷ ফরেনসিক রিপোর্ট আসার পর পুলিশের বক্তব্য, ফরেনসিক রিপোর্টেও ধর্ষণের কোনও চিহ্ন নেই ৷ এর থেকে প্রমাণিত কিছু মানুষ জাত-পাতের ভিত্তিতে বিষয়টিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে ৷ তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷
এদিকে, বিশেষজ্ঞদের মতামত ভিন্ন ৷ তাঁদের বক্তব্য, ঘটনার এগারো দিন কেটে যাওয়ার পর যুবতির নমুনা আগ্রার ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয় ৷ এতদিন বাদে স্বাভাবিকভাবেই কোনও প্রমাণ পাওয়া যেতে পারে না ৷
সমালোচনা, প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মধ্যে হাথরস মামলার তদন্তে রাজ্য সরকার বিশেষ তদন্তকারী দলও (SIT) গঠন করেছে । এবার এই মামলার তদন্তভার হাতে নিল CBI ।