দিল্লি, 11 এপ্রিল : মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার বৈঠকের পরই লকডাউন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে । ঘোষণা হতে পারে বড় কিছু । দিন কয়েক ধরে এই জল্পনাই চলছিল । তবে এবার তার অবসান হতে চলেছে । আজ মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর তেমনই ইঙ্গিত মিলছে । আরও দু'সপ্তাহ অর্থাৎ 30 এপ্রিল পর্যন্ত বাড়তে পারে লকডাউন । কেন্দ্রীয় সরকারের একাংশের তরফে জানা যাচ্ছে লকডাউন বাড়ানোর এই সিদ্ধান্তে একই অবস্থান রাজ্য ও কেন্দ্রের।
24 মার্চ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে 21 দিন ব্যাপী লকডাউনের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী । তারপর থেকে কখনও প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, কখনও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, কখনও সর্বদলীয় বৈঠক করে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন। ইতিমধ্যেই নানা রাজ্যের লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্তগুলি বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্র । অসম, কর্নাটক জানিয়েছিল তারা কেন্দ্র সরকারের পাশে রয়েছে । তেলাঙ্গানা সরকারও লকডাউন বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছিল । এই পরিস্থিতিতে সবাই তাকিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার বৈঠকের দিকে।
আজকের বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয় উঠে আসে । 30 এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানোর কথা বলেন কেজরিওয়াল । পাশাপাশি লকডাউন বাড়লেও রেল সড়ক পরিবহন বন্ধ রাখার কথা বলেন তিনি উদ্ধব ঠাকরেও একই পথে হাঁটছেন । পঞ্জাব, ওড়িশা সহ পাঁচটি রাজ্য লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে । মিটিংয়ের পর টুইট করে কেজরিওয়াল জানান, লকডাউন বাড়ানো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাকে স্বাগত জানাই । বর্তমানে অনেক উন্নত দেশের তুলনায় ভারতের অবস্থা অনেক ভালো ।যদি এখনই লকডাউন উঠে যায় । তাহলে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাবে ।
আজকের বৈঠকে অধিকাংশ মুখ্যমন্ত্রীরীই জানিয়ে দেন, যদি লকডাউন উঠে যায় তাহলে এই সংক্রমণ পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়ার মতো পরিকাঠামো তাদের নেই । অন্যদিকে অশোক গেহলত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা জানান, একটি সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পুরো লকডাউনকে কার্যকর করতে হবে । কারণ এর সঙ্গে রাজ্যের অর্থনীতি, উৎপাদন, শিল্প সমস্ত কিছু জড়িয়ে রয়েছে ।
চারঘণ্টার মিটিং শেষে যে ইঙ্গিত মিলছে তাতে দেশের শিল্প, উৎপাদন ও নির্মাণশিল্পকে আবার খোলা হবে । যে জায়গাগুলি স্পর্শকাতর নয় সেখানে শিল্প ও ছোটো ছোটো কারখানাগুলিও ধাপে ধাপে খোলা হবে । তবে সেক্ষেত্রে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ করতে হবে । কৃষিক্ষেত্রকেও লকডাউনের আওতা থেকে বাইরে রাখা হচ্ছে ।পাশাপাশি যদি পাইকারি বা বড় বাজারগুলি বন্ধ থাকে সেক্ষেত্রে কৃষকরা গ্রাহকদের সরাসরি পণ্য বিক্রি করতে পারবেন । সরবরাহ, মজুত সব সচল রাখতেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করা হবে ।
পাশাপাশি কোরোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় দেশকে কয়েকটি জ়োনে ভাগ করা হবে বলেও খবর । সংক্রমণের প্রভাবের নিরিখে এই বিভাজন হবে ।
বর্তমান কোরোনা পরিস্থিতিতে কেন্দ্র ও রাজ্য যে এক হয়ে লড়ছে এবং আগামীদিনেও লড়বে,আজকের বৈঠকে তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে । মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, "আপনাকে আমরা সবসময় পাবেন । যে কোনও মুখ্যমন্ত্রী যে কোনও সময়ে আমার সঙ্গে কোরোনা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে পারেন । আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে হবে ।"
উল্লেখ্য, দেশে এপর্যন্ত কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা 7529। মৃত্যু হয়েছে 242 জনের । সুস্থ হয়ে উঠেছেন 653 জন ।