অমরাবতী, 18 মে: অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডির পরা চটির দাম 1,34,800 টাকা ৷ তিনি পকেটে যে মঁ ব্লাঁ কোম্পানির কলম রাখেন তার দাম প্রায় এক লাখ টাকা । তাঁর পানীয় জলের বোতলের জন্য খরচ 5,499 টাকা (মাস্টার্ড কোম্পানির 750 মিলির 45টি বোতল)...৷ এমনই দাবি করে জগনের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন টিডিপির জাতীয় প্রতিনিধি আনাম ভেঙ্কটরমন রেড্ডি ৷
বুধবার মঙ্গলাগিরিতে টিডিপির জাতীয় অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, "কীভাবে তারা এত অল্প সময়ের মধ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করল ? আপনি কি কোনও হিরে খুঁজে পেয়েছেন ?" সাক্ষী ম্যাগাজিন এবং টিভি চন্দ্রবাবু নাইডু এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ প্রচার চালিয়েছে বলে দাবি করে, তার জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি । অন্যথায়, জগনের চটি, পানীয় জল, কলম, শার্ট এবং ব্র্যান্ডের দাম সাক্ষী ম্যাগাজিনে প্রকাশ করা উচিত বলে তোপ দাগেন টিডিপি নেতা ৷
কুমিরের চামড়ার চটি পরে আপনি কীভাবে সাধারণ ব্যক্তি হতে পারেন ?
ভেঙ্কটরমন রেড্ডির প্রশ্ন, "আপনি যদি রবারের স্যান্ডেল পরার পর্যায় থেকে 1,34,800 টাকা দামের স্যান্ডেল কেনার পর্যায়ে পৌঁছে যান, তাহলে আপনি কি সাধারণ মানুষ ?" জগন যে ব্র্যান্ডের চটি পরেন তার নাম বেরলুটি । ফ্রান্সের কুমিরের চামড়া থেকে এগুলো তৈরি করা হয় বলে জানা গিয়েছে । তাঁর আরও প্রশ্ন, "আপনি যদি শৈশবে কলের জল পান করার স্তর থেকে খুব দামি মাস্টার্ড কোম্পানির বোতলে জল খাওয়ার স্তরে পৌঁছে যান তবে আপনি কি সুপার নন...?"
এই সব কেন করলেন ? আপনি কি ভয় পেয়েছিলেন যে আপনার স্ত্রী কাঁদবে ?
আনম বেঙ্কটরামন রেড্ডির কথায়, "সাক্ষী ম্যাগাজিনের প্রচলন বাড়াতে...জনগণের দেওয়া কর থেকে কি 3 লাখের বেশি কাগজের টাকা স্বেচ্ছাসেবকদের দেওয়া হয়েছে ? আপনি কি আপনার স্ত্রীর মুখে হাসি দেখার জন্য সার্কুলেশন বাড়িয়েছেন ?"
টিডিপির নেতার কথায়, "পৌরনিগম-সহ প্রতিটি সরকারি অফিসে অনেকেই সাক্ষী রাখতে চায় । পৌরনিগমে কর্মরত স্বাস্থ্য ও রাজস্ব আধিকারিকরা চায়ের দোকানে গিয়ে সাক্ষীর কাগজ কেনেন, আমার ভাই (জগন) এর সঙ্গে সম্পর্ক নেই ? এই সব করছ কেন ? বছরে 100 কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় রাজ্যের কোন পত্রিকায় ? মুখ্যমন্ত্রী হয়ে সাক্ষীকে বিজ্ঞাপনে 500 কোটি টাকা দিয়েছিলেন কেন ? এই সব আপনার স্ত্রীর মুখে হাসি ফোটানোর জন্য ?"
9টি জায়গায় জগনের প্রাসাদের ছবি দেখিয়ে টিডিপি নেতা বলেন, জগন কি বলতে পারবে এই বাড়িগুলি কার ? যদি এটা তাঁর বাড়ি না হয় তাহলে যে তাঁদের দিয়ে দেওয়া হয় বলে কটাক্ষ করে আনম রেড্ডি ৷ তাঁর প্রশ্ন, যে ব্যক্তি 510 কোটি টাকার সম্পত্তি ঘোষণা করেছে তার কি বাড়ি নেই ?
এদুগুড়ি সান্দুতে কি সোনার খনি আছে ? হিরে পেয়েছেন ?
2004 সালে রাজশেখর রেড্ডি যখন মুখ্যমন্ত্রী হন, তখন জগনের সম্পদ ছিল 1.74 কোটি টাকা (আইটি রিটার্ন অনুযায়ী)। 2009 সালের নির্বাচনী হলফনামা অনুসারে, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ পৌঁছয় 77.39 কোটি টাকায় । 2011 সালে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে জগন হলফনামায় তাঁর সম্পত্তি 445 কোটি টাকার হিসাবে দেখিয়েছেন । দুই বছরে এত সম্পত্তি বেড়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, জগন কি তাহলে সোনার খনি পেয়েছেন ? তাঁর প্রশ্ন, এদুগুড়ি সান্দুতে কূপ খনন করার সময় আপনি কি হিরে খুঁজে পেয়েছেন ? এগুলো আমাদের হিসাব নয় । আমরা নির্বাচন কমিশনে জগনের দেওয়া হলফনামা অনুসারে বলছি...৷"
পরে, জগনের সম্পত্তি 2014 সালে 413 কোটি টাকা এবং 2019 সালে 510 কোটি টাকায় পৌঁছেছে । আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের সবচেয়ে ধনী মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ওঠেন তিনি ।
আরও পড়ুন: ক'টি রাজধানী রাজ্যের ? বিশেষ অধিবেশন অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভায়