লখনউ, 12 মে : মামলাকারীকে ধমক ৷ দেওয়া হল উচ্চশিক্ষার পরামর্শও ৷ বলা হল, বিষয়টি নিয়ে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার পরামর্শ দেওয়া হল মামলাকারী যুবককে ৷ পাশাপাশি দেশে জনস্বার্থ মামলা নিয়ে যে নিয়ম প্রচলিত রয়েছে তার যাতে অপব্যবহার না করা হয় তা নিয়েও সাবধান করা হল ৷ তাজমহলের 22টি বন্ধ কক্ষে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখতে কাজে লাগানো হোক ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণকে- এই মর্মে এলাহাবাদ হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন বিজেপির এক যুবনেতা ৷ সেই মামলাই বৃহস্পতিবার খারিজ করল এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ (Allahabad HC rejects PIL on Taj Mahal) ৷
অযোধ্যায় বিজেপির যুব মিডিয়া ইনচার্জ রজনীশ সিং গত সপ্তাহে এলাহাবাদ হাইকোর্টে একটি পিআইএল দায়ের করেন ৷ দাবি জানান, তাজমহল চত্বরের 22টি বন্ধ কক্ষের মধ্যে কী লুকিয়ে রয়েছে তা সামনে আসা উচিত ৷ তাঁর দাবি, ওই বন্ধ কক্ষগুলিতে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণকে দিয়ে বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখার দাবিও জানান রজনীশ ৷ মামলার সপক্ষে যুক্তি সাজিয়ে বলা হয়, কিছু ঐতিহাসিক এবং হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে তাজমহলের সমাধিটি আসলে একটি শিবের মন্দির ছিল ৷ তাজমহলকে কোনও মন্দির বানানোর উদ্দেশ্য নয় এটা, তবে সত্য সামনে আসা উচিত ৷ তাই এই নিয়ে একটি নয়, একাধিক জনস্বার্থ মামলা করেন এই যুবনেতা ৷
এদিন সেই মামলারই শুনানিতে এদিন লখনউ বেঞ্চের তিরস্কারের স্বীকার হন বিজেপি নেতা ৷ বেঞ্চের তরফে মামলাকারীকে স্পষ্ট বলা হয়, "এবার তো আপনি আমাদের চেম্বারের ভিতরে কী রয়েছে তা দেখতে চাইবেন ৷ দয়া করে জনস্বার্থ মামলার এই প্রচলিত নিয়মকে হাস্যাস্পদ বানাবেন না ৷"
আরও পড়ুন : BJP Claim on Taj Mahal : তাজমহল বানাতে হিন্দু প্রাসাদ দখল করেছিলেন শাহজাহান, দাবি বিজেপি সাংসদের
বিচারপতি ডিকে উপাধ্যায় এবং সুভাষ বিদ্যার্থী মামলাকারীকে জিজ্ঞাসা করেন, "আপনি আমাদের কী রায় দিতে বলছেন ? কে তাজমহল তৈরি করেছে জানতে চাইছেন ? ঐতিহাসিক তত্ত্বে যাবেন না... আপনি কি রিট মান্ডাম্যাসের নির্দেশ দিতে বলছেন ? সেটা তখনই নির্দেশ দেওয়া যায়, যখন অধিকার লঙ্ঘিত হয় ৷ এখানে আপনার কোন অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ?"
মামলাকারী বিচারকদের জানান, তাজমহলের ওই কক্ষগুলি বন্ধ রাখার কারণ হিসাবে নিরাপত্তাজনিত দিকগুলি দেখানো হয়েছে ৷ তাঁর মতে, তাজমহল সম্পর্কে সত্য তথ্য় দেশবাসীর জানার অধিকার রয়েছে ৷
পালটা তীক্ষ্ণ জবাব বিচারপতিদের, "আপনি কার কাছ থেকে তথ্য দাবি করছেন ? এবিষয়ে যে তথ্য দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে আপনি সন্তুষ্ট না হলে তা চ্যালেঞ্জ করতে পারেন ৷ তবে প্রথমে পড়াশোনা শুরু করুন ৷ এমএ, পিএইচডি করুন ৷ কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেকে নথিভুক্ত করুন । তবে এটিকে উপহাসের পাত্র করে তুলবেন না ৷"
প্রসঙ্গত, বেশ কিছু ডানপন্থী সংগঠন তাজমহলকে তেজো মহালয়া বলে দাবি করে থাকে ৷ এই তেজো মহালয়া হিন্দু মন্দির বলে দাবি তাদের ।
আরও পড়ুন : SC puts sedition law on hold: সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল কেন্দ্র, আপাতত স্থগিত রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইন